চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাংলাদেশের নৌবাহিনীর বহরে একদিনেই যুক্ত হয়েছে পাঁচটি যুদ্ধজাহাজ। বঙ্গোপসাগরে ভারত ও মিয়ানমারের কাছ থেকে অর্জিত সমুদ্রসীমাসহ দেশের জলসীমার সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সমুদ্রসম্পদের সুরক্ষায় ফোর্সেস গোল-২০৩০-এর আলোকে নৌবহরে যুক্ত হয়েছে এ পাঁচটি আধুনিক যুদ্ধজাহাজ।
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাহাজগুলো কমিশনিং করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর মধ্য দিয়ে নৌবাহিনীতে এ পাঁচটি যুদ্ধজাহাজের আনুষ্ঠানিক অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হয়েছে। নতুন পাঁচ যুদ্ধজাহাজের কমিশনিং উপলক্ষে চট্টগ্রামে নৌবাহিনীর ঈসা খাঁ ঘাঁটিতে উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
জাহাজগুলোর কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কারও সাথে যুদ্ধে জড়াতে চায় না বাংলাদেশ ৷ তবে কেউ আক্রমণ করতে এলে সমুচিত জবাব দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে সশস্ত্রবাহিনীকে৷’
একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নৌবাহিনীকে ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কেউ সমুদ্রসম্পদ কাজে লাগানোর উদ্যোগ নেয়নি ৷ সুনীল অর্থনীতির সম্পদ আহরণ ও কাজে লাগানোই বর্তমান সরকারের লক্ষ্য।’
এর আগে চট্টগ্রামের ঈসা খাঁ ঘাঁটিতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল এম শাহীন ইকবাল জাহাজগুলোর অধিনায়কদের হাতে কমিশনিং ফরমান তুলে দেন।
নৌবাহিনীর বহরে যুক্ত হওয়া জাহাজগুলোর মধ্যে আছে দুটি আধুনিক ফ্রিগেট ওমর ফারুক ও আবু উবাইদাহ, একটি করভেট যুদ্ধজাহাজ প্রত্যাশা এবং দুটি জরিপ জাহাজ দর্শক ও তল্লাশী।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সদ্য সংযোজিত হওয়া নৌবাহিনীর দুটি ফ্রিগেট ‘ওমর ফারুক’ ও ‘আবু উবাইদাহ’র প্রতিটির দৈর্ঘ্য ১১২ মিটার ও প্রস্থ ১২ দশমিক ৪ মিটার। করভেট যুদ্ধজাহাজ প্রত্যাশার দৈর্ঘ্য ৯০ মিটার ও প্রস্থ ১১ দশমিক ১৪ মিটার। যুদ্ধজাহাজগুলো ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ২৫ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। শত্রুর বিমান, জাহাজ এবং স্থাপনায় আঘাত হানতে সক্ষম, আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন কামান ভূমি থেকে আকাশে এবং ভূমি থেকে ভূমিতে উৎক্ষেপনযোগ্য মিসাইল, অত্যাধুনিক থ্রিডি র্যাডার, ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম, র্যাডার জ্যামিং সিস্টেমসহ বিভিন্ন ধরণের যুদ্ধ সরঞ্জামাদিতে সুসজ্জিত। এছাড়া জাহাজগুলোতে হেলিকপ্টার অবতরণ ও উড্ডয়নের জন্য রয়েছে ডেক ল্যান্ডিং সুবিধা।
এছাড়া বাংলাদেশ নৌবাহিনীর নিজস্ব প্রযুক্তিতে জাহাজ নির্মাণ সক্ষমতায় আরও একটি মাইলফলক যুক্ত করেছে খুলনা শিপপইয়ার্ডে নির্মিত আধুনিক দুটি জরিপ জাহাজ দর্শক ও তল্লাশী। জরিপ জাহাজ দুটির প্রতিটির দৈর্ঘ্য ৩২ দশমিক ৭৮ মিটার ও প্রস্থ ৮ দশমিক ৪ মিটার যা ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১৪ নটিক্যাল মাইল বেগে চলতে সক্ষম। দেশের উপকূলীয় এলাকায় সব ধরনের হাইড্রোগ্রাফিক এবং ওশানোগ্রাফিক তথ্যউপাত্ত সংগ্রহের সক্ষমতা আছে জাহাজ দুটির।