ত্রুটিপূর্ণ ভবন, আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে: ফায়ারসার্ভিস ডিজি
৫ নভেম্বর ২০২০ ২২:৫২
ঢাকা: রাজধানীর ডেমরা মাতুয়াইল কোনাপাড়ায় পাশা এলইডি লাইটের গুদামে লাগা আগুন পাঁচ ঘণ্টাতেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা। কারণ হিসেবে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুরো ভবনটি করা হয়েছে অপরিকল্পিতভাবে। আশেপাশে কোনো জায়গা ছাড়া হয়নি, এ কারণে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে।’
বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৪টা ৫৫ মিনিটে আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের মোট ১৩টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ডেমরায় বাল্বের গোডাউনে লাগা আগুন ছড়িয়ে পড়েছে পুরো ১০ তলা ভবনে
জানতে চাইলে ফায়ার ডিজি বলেন, ‘ভবনটি ১০তলা। যার পুরোটিতে দাহ্য পদার্থ ভরপুর। আগুন নেভানোর জন্য কাজ করার কোনো পরিবেশ নেই। একটি মাত্র সরু রাস্তা। সেই রাস্তার দুই দিকে খাল। ঝুঁকিপুর্ণভাবে ল্যাডার লাগিয়ে ক্রেন উঠানো হয়েছে। ক্রেন ঘুরিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘ভবনের সঙ্গে লাগানো পূর্ব পাশের জায়গায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণের জন্য পাইলিং করা হয়েছে, পশ্চিম পাশেও পাইলিংয়ের জন্য খুড়ে রাখা হয়েছে। ফলে দুই দিক দিয়েই ক্রেন লাগিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। ভবনের উত্তর দিকে সড়ক এবং সড়কের উত্তর পাশে পুকুর। যেখান থেকে পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। ভবনের দক্ষিণ দিকে দেয়াল ঘেষে আরেকটি দশ তলা ভবন। এমনভাবে ভবন করা হয়েছে যেখানে আগুন নেভানোর জন্য কোনো পথ রাখা হয়নি। ফলে দুর থেকে পানি দিতে হচ্ছে।’
ডিজি আরও বলেন, ‘এখন আগুন নেভানোটাই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য। আগুন নেভানো শেষে একটি কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত প্রকৃত কারণ বেরিয়ে আসবে।’
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছয়তলায় আগুনের সূত্রপাত হলেও ধীরে ধীরে তা ১০তলা ভবনটির পুরোটাতেই ছড়িয়ে পড়ে।
মালিক মিন্টু পাশার ভাতিজা রেক্সন বলেন, ‘বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।’
এ বিষয়ে ভবনের মালিক মিন্টু পাশা দাবি করে বলেন, গুদামে প্রায় ২ শ কোটি টাকার মালামাল ছিল। যার সবই পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে।
পাশা এলইডি লাইটের ম্যানেজার রিপন সরকার সারাবাংলাকে বলেন, ‘চায়না থেকে এলইডি লাইট আমদানি করে এখানে রাখা হতো। সেখান থেকে নবাবপুর ও পল্টন থেকে বিক্রি করা হয়। ভবনটির পুরোটাতেই লাইটের গুদাম করা হয়েছে। মিন্টু পাশা নামে এক ব্যবসায়ী দুই বছর আগে ভবনটিতে গুদাম করেন। পুরো ভবনটির মালিকও তিনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগুন পুরো ভবনে ছড়িয়ে পড়েছে এবং তা দাউ দাউ করে জ্বলছে।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফায়ার সার্ভিসের প্রায় ১৫০ জন কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে প্রাণপণ চেষ্টা করছে।
ফায়ারম্যান আশিক জানান, এখনো কোনো হতাহতের খবর পাইনি। ভেতরে যেহেতু কেউ থাকেন না তাই হতাহতের আশঙ্কা নেই আপাতত।