আবাদযোগ্য ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর জমি পতিত, নিতে হবে চাষের উদ্যোগ
৮ নভেম্বর ২০২০ ১৭:১৫
ঢাকা: ‘ফুড ভ্যালু চেইন নিশ্চিতে দেশে আবাদযোগ্য প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর পতিত জমিতে ফসল চাষের উদ্যোগ নিতে হবে। কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, আধুনিক বিপণন ব্যবস্থাসহ কন্ট্রাক ফার্মিংয়ের দিকেও মনোযোগী হতে হবে। মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য দূর করতে হবে। এগিয়ে আসতে হবে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তাদের।’
রোববার (৮ নভেম্বর) ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে ফুড ভ্যালু চেইন’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কৃষকেরা অনেক ক্ষেত্রে তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্যমূল্য পায় না। এটি নিশ্চিত করতে হলে কৃষিকে আধুনিকীকরণ করতে হবে। এগ্রো-প্রসেসিং করে কীভাবে কৃষিকে লাভজনক করা যায় সে লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনানুযায়ী অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যেকোন মূল্যে আমরা কৃষিকে বাণিজ্যিক কৃষিতে, লাভজনক কৃষিতে রূপান্তর করতে চাই।’
কৃষিকে লাভজনক করতে হলে অপ্রচলিত ফসলের চাষও বাড়াতে হবে উল্লেখ করে ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘কাজুবাদাম, কফিসহ অপ্রচলিত ফসলের চাষ জনপ্রিয় করতে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রক্রিয়াজাত প্রতিষ্ঠানের জন্য কাঁচা কাজুবাদাম আমদানির ওপর শুল্কহার প্রায় ৯০ শতাংশ থেকে নামিয়ে ৫ থেকে ৭ শতাংশে নিয়ে আসতে এনবিআর সম্মত হয়েছে। ভবিষ্যতে এটিকে একদম শুল্কমুক্ত করে দেওয়া হবে।’
শুধু প্রক্রিয়াজাত নয়, দেশে কাজুবাদাম চাষ জনপ্রিয় করতে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান কৃষিমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ বছর কৃষকের মাঝে কাজুবাদামের ৫০ হাজার চারা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া, কম্বোডিয়া থেকে প্রায় ৫ টন হাইব্রিড কাজুবাদামের বীজ আমদানিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বেসরকারি উদ্যোক্তাকে সহযোগিতা করা হয়েছে। এ বীজের মাধ্যমে প্রায় ৬ লাখ চারা উৎপাদন করা সম্ভব হবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে ডিসিসিআই সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশের ফুড ভ্যালু চেইনে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন ব্যবস্থা, মূলধন স্বল্পতা, পণ্য সংরক্ষণের অভাব, দূর্বল অবকাঠামো, পণ্য বাজারজাতকরণ এবং প্রক্রিয়াজাতকরনের দক্ষতার সীমাবদ্ধতা রয়েছে। বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা নিরসনে দেশে আবাদযোগ্য প্রায় ২ লাখ ২৩ হাজার হেক্টর পতিত জমিতে ফসলের চাষের উদ্যোগ গ্রহণ করা যেতে পারে।’
এছাড়া বেসরকারি খাতের কৃষি পণ্য উৎপাদনকারী, পক্রিয়াজাতকারীদের দক্ষতা বৃদ্ধি, কৃষিপণ্য উৎপাদন ও বিপণনে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি এবং পণ্যের বহুমুখীকরণে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও নতুনবাজারের জন্য বেসরকারি খাতের ও বিদেশি বিনিয়োগ উৎসাহিত করার উপর জোর দেন তিনি।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের খাদ্য প্রযুক্তি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. বোরহান উদ্দিন। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সদস্য মনজুর মোর্শেদ আহমেদ, কার্নেল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান সালেহ আহমেদ, প্রাণ-আরএফএলের পরিচালক উজমা চৌধুরী, বাংলাদেশ এগ্রো-প্রসেসিং এসোসিয়েশনের (বাপা) মহাসচিব ইকতাদুল হক ও ইউনিমার্ট গ্রুপের পরিচালক মালিক তালহা ইসমাইলসহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
কন্ট্রাক ফার্মিং কৃষি বিপণন কৃষি যান্ত্রিকীকরণ টপ নিউজ পতিত জমি