স্কুটিতে চড়ে সুজনের ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ’ প্রতিরোধের প্রচারণা
১১ নভেম্বর ২০২০ ২০:৩০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় পর্যায় নিয়ে জনসচেতনতা তৈরিতে স্কুটি চালিয়ে চট্টগ্রাম নগরীতে প্রচারণা চালিয়েছেন সিটি করপোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। এসময় তিনি বিভিন্ন এলাকার লোকজনের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন এবং তাৎক্ষণিক সমাধান দেন।
বুধবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে নগরীর সল্টগোলা ক্রসিং থেকে স্কুটি চালিয়ে নগর পরিভ্রমণ কর্মসূচি শুরু করেন চসিক প্রশাসক। তিনি সল্টগোলা ক্রসিং থেকে পুরাতন ডাকঘর হয়ে দুই নম্বর সাইট, বাকের আলী ফকিরের টেক থেকে চৌচালা মোড় পর্যন্ত প্রদক্ষিণ করেন।
চসিকের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রশাসকের কর্মসূচি জুড়ে মূল লক্ষ্য ছিল করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে মানুষকে সচেতন করা। করোনা ও ডেঙ্গু মোকাবেলায় প্রচারপত্র বিলির পাশাপাশি তিনি নগরীর দক্ষিণ মধ্যম হালিশহর স্কুল ডাকঘরের পাশে খালে ফগার মেশিনের মাধ্যমে মশার ওষুধ ছিটান ও উপস্থিত লোকজনের মাঝে মাস্ক বিতরণ করেন। স্কুটি চালিয়ে, আবার পায়ে হেঁটেও প্রশাসক অলিগলিতে ঢোকেন। লোহার পুল, নিশ্চিন্তা পাড়া, মিস্ত্রিপুকুর পাড়, মহাজন পাড়া, পুরাতন দুই নম্বর সাইট, সাচী চৌধুরী পাড়া, বরহান পাড়া, আলী মিয়া সরকার বাড়ি এলাকার বাসিন্দারা প্রশাসককে সড়কে দাঁড়িয়ে শুভেচ্ছা জানান। এসময় বর্ষায় জলমগ্ন হয়ে থাকা দু’টি এলাকার সড়ক উঁচু করার আশ্বাস দেন প্রশাসক।
উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন বলেন, ‘শীত মৌসুমে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ হিসেবে সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে। শুকনো মৌসুমে ডেঙ্গুর প্রকোপও বাড়ে। আপনাদের সচেতন হতে হবে। জীবন আপনার, তাকে রক্ষা করার দায়িত্বও প্রথমে আপনার। নিজ বাড়ির আঙ্গিনা, পুকুর, ডোবা আশাপাশের নালা-খাল পরিস্কার রাখতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মানতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। যতদিন পর্যন্ত আমরা করোনার ভ্যাকসিন পাব না, ততদিন আমাদের স্বাস্থ্যসুরক্ষার বিধিগুলো মেনে চলতে হবে।’
এসময় চসিকের কর্মকর্তারা ছাড়াও সাবেক কাউন্সিলর মোহাম্মদ হোসেন ও গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সমাজসেবক হাসান মুরাদ, জানে আলম, হাজী মো. সুলতান, এম এ মান্নান, কামরুল হোসেন, হাবিব শরীফ ছিলেন।
গত ৬ আগস্ট চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেন নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন। ২৪ আগস্ট থেকে তিনি স্কুটিতে চড়ে নগর পরিভ্রমণের মতো ব্যতিক্রমী কর্মসূচি শুরু করেন, যার নাম দিয়েছেন ‘নগরসেবায় ক্যারাভান’।
এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলা নিয়ে স্বাস্থ্যবিভাগ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন চসিক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। বুধবার সকালে নগরীর বাটালি রোডে চসিকের সম্মেলন কক্ষে এই সভা হয়েছে।
সভায় প্রশাসক বলেন, ‘করোনা নিয়ে জনগণের অবহেলায় মৃত্যুঝুঁকি বাড়াতে পারে। সরকারি-বেসরকারি অফিস-আদালত, বাজার, শপিংমল সবখানে জনসাধারণকে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলকভাবে মানাতে হবে। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা, বার বার সাবান পানিতে হাত ধোয়া ও মাস্ক পরিধান ছাড়া আমাদের সামনে বিকল্প পথ নেই। এক্ষেত্রে কেউ মাস্ক না পরলে, স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমাদের জরিমানার মতো কঠোর পথে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকবে না।’
সভায় সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় প্রস্তুতি তুলে ধরেন এবং সাধারণ মানুষকে সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দেন।
সভায় চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল এস এম হুমায়ুন কবির, চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট মো. আবদুর রব, প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের বিভাগীয় উপ-পরিচালক মো. শহিদুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডা. আহমেদ তানজিমুল ইসলাম, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের সহকারী কমিশনার মো. উমর ফারুক, চট্টগ্রাম পরিবার পরিকল্পনা অফিসের উপ-পরিচালক ডা. উ খ্যে উইন উপস্থিত ছিলেন।