Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রিকশার ব্যাটারি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে খুন, উন্মোচন হলো রহস্য


২০ নভেম্বর ২০২০ ২০:৫১

প্রতীকী ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: সাভারের আশুলিয়ায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক শেখ মিন্টু (৩৫)ক্লুলেস হত্যাকাণ্ডে জড়িত দলনেতা আলী হায়দার ওরফে নাহিদ হাসান ওরফে নাহিদকে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে নাহিদকে সাভার এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

নাহিদ ছিনতাইকারী চক্রের দলনেতা হিসেবে কাজ করেন। তিনি সাভার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মিজান আল মামুনের ছেলে।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) উত্তরায় পিবিআইয়ের ঢাকা জেলা কার্যালয়ে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ খোরশেদ আলম এ সব তথ্য জানান।

পিবিআই এসপি বলেন, ‘গত ১৩ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে আশুলিয়ার খোরশেদ আলম কমিশনারের বাসা থেকে রিকশাচালক শেখ মিন্টুকে (৩৫) নাহিদসহ দুইজন ১৭০ টাকার বিনিময়ে গেরুয়া যাওয়ার জন্য ভাড়া করে। নাহিদদের উদ্দেশ্য ছিল অন্ধকার জায়গায় পৌঁছালে তারা রিকশার ব্যাটারি ছিনতাই করবে। গেরুয়া যাওয়ার পথে রাস্তা খারাপ থাকায় রিকশাচালক মোকাম টেক দিয়ে যায়। মোকাম টেকের ভেতরে অন্ধকার গলি পথ দেখে সেই রাস্তা দিয়ে রিকশাচালক আর যেতে রাজি হয়নি। তিনি রিকশা থামিয়ে দেন। কিন্তু তারা যেহেতু ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে রিকশাটি ভাড়া নেন তাই তাদের কাছ থেকে ভাড়া দেওয়ার মতো কোনো টাকা ছিল না। তারা ভাড়া না দেওয়ায় রিকশাচালক চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করে। তখন দলনেতা নাহিদ তার সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার দিয়ে রিকশাচলক শেখ মিন্টুর পেটে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে। তার চিৎকার শুনে আশেপাশ থেকে লোকজন দৌড়ে আসতে থাকে। তখন ছিনতাইকারীরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়ালের নিচে ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঝাউবনে ঢুকে যায়। যাওয়ার সময় ঘটনাস্থলে তার সেন্ডেল ফেলে রাখা যায় এবং হত্যাকাণ্ডের চাকুটি পাশে ফেলে দেয়।’

বিজ্ঞাপন

পরে ওই রিকশাচালককে উদ্ধার করে সাভার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখান থেকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পুলিশ সুপার বলেন, ‘এ ঘটনায় পরদিন আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করা হয়। যার মামলা নম্বর-৩৯। পরবর্তীতে পিবিআই মামলার তদন্তভার গ্রহণ করে। মামলার তদন্তকারী তথ্যপ্রযুক্তিগত সহায়তায় সাভার থেকে হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নাহিদকে গ্রেফতার করে।’

এসপি খোরশেদ আলম বলেন, ‘ব্যাটারি ছিনতাইকারী চক্রটি বেশ কিছুদিন যাবৎ সাভার ও আশুলিয়ার বিভিন্ন জায়গায় ব্যাটারি ছিনতাই করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করে আসছিল।’

‘চক্রটি শুধু ব্যাটারি ছিনতাই নয় রিকশা ভাড়া করে রিকশাচালকের টাকা পয়সাও ছিনতাই করে নিয়ে যেতো। এছাড়াও তারা বাস থেকে নামা যাত্রীদের টার্গেট করে লুটে নিত সর্বস্ব’ বলেন এসপি খোরশেদ আলম।

হত্যাকাণ্ডের কারণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রিকশাচালক শেখ মিন্টু রিক্সা ভাড়া দেওয়ার পর ছিনতাইকারীরা ভাড়া না দিতে পারায় সে চেঁচামেচি শুরু করে। আশেপাশে চায়ের দোকানে লোকজন থাকায় ছিনতাইকারীরা ধরা পড়ে যাওয়ার ভয়ে তাদের সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে মিন্টুর পেটে ও গলায় ছুরিকাঘাত করে। পরবর্তীতে রিকশাচালকের চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ধরে আসতে দেখে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাউন্ডারি ওয়ালের নিচের ফাঁকা জায়গা দিয়ে ঝাউবনে ঢুকে পালিয়ে যায়।’

তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারের পর নাহিদের দেওয়া তথ্যমতে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকুটি ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় পলাতক অন্যান্য সহযোগী আসামিদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

অটোরিকশা ছিনতাই ব্যাটারি ছিনতাই

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর