Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে বছরব্যাপী বিএনপির কর্মসূচি


২২ নভেম্বর ২০২০ ১৫:২৫

ঢাকা: ‘মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরিয়ে নেওয়ার’ প্রত্যাশা নিয়েই স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর বছরব্যাপী অনুষ্ঠান করবে বিএনপি।

রোববার (২২ নভেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এ কথা জানান। গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।

খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পারছি যে, গণতন্ত্রের আজকে কি অবস্থা? বিচার ব্যবস্থা, গণমাধ্যমের কী অবস্থা- এটা ব্যাখ্যার প্রয়োজন হয় না। আজকে মুক্তিযুদ্ধের সকল চেতনা ভুলণ্ঠিত।’

‘৫০ বছর পূর্তিতে আমাদের মূল থিম থাকবে যে, আমরা বাংলাদেশকে সেই বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনায় ফিরিয়ে নিতে চাই এবং সেই চেতনাকে আমরা প্রতিষ্ঠা করতে চাই। এটা হবে বিএনপির সুর্বণজয়ন্তীর মূল লক্ষ্য এবং মূল উদ্দেশ্য।’

২০২১ সালের বছরব্যাপী ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও অনাড়াম্বরপূর্ণভাবে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

কর্মসূচির মধ্যে থাকবে, বিষয়ভিত্তিক রচনা প্রতিযোগিতা, অংকন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা যেমন-গণতন্ত্র, মানবাধিকার, নারীর ক্ষমতায়, বৈদেশিক নীতি, সমাজতন্ত্র থেকে মুক্তবাজার অর্থনীতি, অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিএনপির ভূমিকা, স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়াউর রহমানের কর্মসূচি ভিত্তিক কর্মশালা, বিএনপির শাসনামলের সাফল্য, পুস্তিকা প্রকাশ, লিফলেট বিতরণ, ডকুমেন্টারি নির্মাণ, নৃত্যনাট্য, পথনাটক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ভ্রাম্যমাণ প্রদর্শনী, বিভিন্ন জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেমিনার-সিম্পোজিয়াম, বাংলাদেশের স্বাধীনতকার ঘোষণা, স্বনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে বিএনপির ভূমিকা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শন, দেশ গঠনে জিয়ার ১৯ দফার ভূমিকা, সেনাবাহিনীকে আধুনিক বাহিনীতে রূপান্তর, শহীদ জিয়ার উন্নয়নের রাজনীতি প্রভৃতি বিষয় আলোচনা সভা এবং ছয়টি বিষয়ভিত্তিক প্রকাশনা। মহানগর-জেলা-উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, সমাবেশ ও র‌্যালিও রয়েছে কর্মসূচিতে।

বিজ্ঞাপন

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কথা উল্লেখ করে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি মুক্তিযুদ্ধের একজন সংগঠন, বিলেতে মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখতে চেষ্টা করেছি, ততকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহবায়ক ছিলাম। আমার পাশে মাঠের মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম সাহেব। এমনিভাবে আমি দাবি করছি- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) মুক্তিযোদ্ধাদের দল।মুক্তিযুদ্ধে যে চেতনা ছিল সেই চেতনা আমার চেতনা, সালামের চেতনা, মুক্তিযোদ্ধাদের চেতনা। এদেশের সাম্য, এদেশের গণতন্ত্র, এদেশের অর্থনৈতিক মুক্তি, এদেশের মানুষের অধিকার ইত্যাদি।’

‘আজকে ৫০ বছর পরে গণতন্ত্রের আজকে কী অবস্থা? শুধু ব্যক্তি স্বার্থে, ক্ষমতায় থাকার একমাত্র স্বার্থে গণতন্ত্রের টুটি চেপে হত্যা করা হয়েছে। এটা এবার না প্রথম। যারা আছে ক্ষমতায় তারা বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে আগেই কিন্তু গণতন্ত্র হত্যা করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যদি দেশের অর্থনৈতিক ইনডেস্কগুলো দেখা যায়, সারা পৃথিবীর হিসেবে দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ হচ্ছে সবচেয়ে বেশি বৈষম্যমূলক দেশ। এদেশে ধনী অনেক বেশি। এদেশে ধনী হওয়া দ্রুত গতিতে সম্ভব। এদেশে সম্পদের যে বিশাল বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে এই ১২ বছরের সরকারের সময়ে বিশেষভাবে। এটা জনগণ ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যাশা ছিল না, প্রত্যাশা ছিল সাম্যের। এদেশের সম্পদের যার যার সামর্থ অনুযায়ী, যার যার ক্ষমতা অনুযায়ী, যার যার উপযুক্ত অনুযায়ী সমান অধিকার পাবে। সেটা আমরা এখনো অর্জন করতে পারি নাই।’

‘আমরা আমাদের ব্যক্তি, রাজনৈতিক স্বাধীনতার কথা বলছি- সেটা বর্তমান ভুলণ্ঠিত। আজকে পত্রিকায় মিডিয়া তারা সত্য কথা বলতে পারে না। সত্য কথা বললে গুম হয়ে যায়, সত্য কথা বললে হত্যা করা হয়। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ছিল আমরা যার যার কথা বলব এবং শোনার জন্য ধর্য থাকতে হবে-এই স্বাধীনতা আজকে নাই। সাংবাদিক দম্পত্তি সাগর-রুনি নিজের বাড়িতে হত্যা হয়েছে। এই পর্যন্ত ৮০ বার শুধু প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় নেওয়া হয়েছে। আজকে বড় বড় সম্পাদক সত্য কথা বলার জন্য মামলা ঝুলছে।’

বিজ্ঞাপন

বিরোধী দলের অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের অবস্থা তো বুঝেন। আজকে ঘটনা ঘটলে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন, সাত দিনের মধ্যে চার্জশিট, ১৫ দিনের মধ্যে বিচার শুরু।’

‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, মুক্তিযুদ্ধে যে অর্জন বা চাওয়া সেগুলো আমরা অর্জন করেছিলোম, বার বার বাধাগ্রস্থ হয়েছে। এখন বাধাগ্রস্থ হয়ে আজকে সকল কিছু সকল চেতনা ভুলণ্ঠিত। বিচার ব্যবস্থা কী? স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা থাকবে। আজকে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিম্ন পর্যন্ত বিচার ব্যবস্থা একটি সরকারের নিয়ন্ত্রণে-এটা সকলে জানে।’

গত শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপস্থিতিতে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির প্রথম ভার্চুয়াল সভা অনুষ্ঠিত হয়।

খন্দকার মোশাররফের সভাপতিত্বে এই সভায় দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

সংবাদ সম্মেলনে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম উপস্থিত ছিলেন।

কর্মসূচি বিএনপি সূবর্ণ জয়ন্তী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর