ঢাকা: সাতক্ষীরার কলারোয়ায় একই পরিবারের চার জনকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মূল আসামি রাহানুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ (সিআইডি) তদন্ত বিভাগ। ব্যক্তিগত ক্ষোভ থেকেই এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে সিআইডি সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলের সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক।
গ্রেফতারকৃত আসামি রাহানুর ভারতীয় টিভি সিরিয়াল ‘ক্রাইম পেট্রোল’ দেখে তার নিজের ভাই, ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যা করতে প্ররোচিত হয়। স্বীকারোক্তিতে এমনটাই জানিয়েছে খুনি রাহানুর। কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পরে ঘুমন্ত অবস্থায় চাপাতি দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়। নিহতরা হলেন- রাহানুরের ভাই শাহিনুর রহমান, শাহিনুরের স্ত্রী সাবিনা, মেয়ে তাছনিম ও ছেলে সিয়াম।
ঘটনার এক মাস ৫ দিনের মাথায় সোমবার (২২ নভেম্বর) সিআইডি আদালতে এ মামলার চার্জশিট জমা দিয়েছে। গত ১৫ অক্টোবর রাতে একই পরিবারের চার জনকে হত্যার ঘটনায় তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি। ঘাতক রাহানুর নিয়মিত ফেনসিডিল সেবনের কথাও সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
কলারোয়ায় ঘরে ঢুকে এক পরিবারের ৪ জনকে গলা কেটে হত্যা
সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘গ্রেফতার রাহানুল দীর্ঘদিন ফেনসিডিলের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ (ডিসোপেন-২) সেবন করতো। একসময় ফেনসিডিলসহ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে এবং কারাগারেও ছিলো সে। এরপর স্ত্রী ফাহিমার সঙ্গে তার ডির্ভোস হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে রায়হানুল বেকার অবস্থায় ভাই ও ভাবির সংসারে থাকতে শুরু করে। ভাবি সাবিনা খাতুন মাঝেমধ্যে টাকার জন্য তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করত। স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ ও বেকার জীবনে ভাবির দুর্ব্যবহারের কারণে একসময় ভাই-ভাবিসহ পুরো পরিবারকে হত্যার পরিকল্পনা করে রাহানুর।
‘হত্যার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে স্থানীয় আবু জাফরের দোকান থেকে দুটি স্পিড (কোমল পানীয়) কিনে তার মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয় রাহানুর। ঘুমের ওষুধ মেশানো এ পানীয় সে তার ভাই, ভাবি, ভাতিজি ও ভাতিজাকে খেতে দেয়। তারা ঘুমিয়ে পড়লে রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে চাপাতি দিয়ে প্রথমে সে ভাই এবং পরবর্তীতে ভাবিসহ বাকিদের হত্যা করে। আসামির স্বীকারোক্তি অনুযায়ী উদ্ধার করা হয় হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতিসহ রক্তমাখা কাপড়’, বলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।