নির্যাতনে হাসপাতালে কাতরাচ্ছে স্কুলছাত্র তাজমুল
২৫ নভেম্বর ২০২০ ২১:০৯
বরিশাল: নবম শ্রেণির ছাত্র মো. তাজমুল ইসলাম শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের বিছানায় নিস্তেজ হয়ে পড়ে আছে। পিঠে মারের দাগ, কালশিটে পড়েছে। হাতে-পা ও শরীরে অসংখ্য লাঠির আঘাতের চিহ্ন। তার বুকেও আঘাতের চকচকে দাগ। অসহ্য যন্ত্রণায় হাসপাতালের শয্যায় কাতরাচ্ছে সে।
স্কুলছাত্র তাজমুল ইসলামকে মঙ্গলবার দুপুরে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ডে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নির্যাতিত স্কুলছাত্র তাজমুল ইসলাম ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার কুশঙ্গল ইউনিয়নের বাউমহল গ্রামের আব্দুল করিম খানের ছেলে। সে স্থানীয় সিদ্ধকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) সকালে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলছাত্র তাজমুল ইসলামের ওপর বর্বরতা চালানো হয়েছে। শরীরের বিভিন্ন অংশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শারীরিক দুর্বলতার কারণে তিনি উঠে বসতে পারছেন না।
নির্যাতনের শিকার তাজমুল ইসলামের পিতা চা দোকানদার আব্দুল করিম খান জানান, পরকীয়া প্রেমের মিথ্যা অভিযোগ তুলে সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে কুশঙ্গল ইউনিয়নের দফাদার মো. শামীম খান, চৌকিদার কালাম, স্থানীয় জামাল সিকদার, আফজাল ও আজাদ তার ছেলেকে বাড়ি থেকে স্থানীয় সেওতা বাজারে যাওয়ার পথে ধরে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করে। এরপর হাত-পা রশি দিয়ে বেঁধে ভ্যানগাড়িতে তুলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে তাকে মেঝেতে উপুড় করে ফের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে জখম করে। একপর্যায়ে দফাদার শামীম পা দিয়ে গলা চেপে ধরে বুকের ওপর লাথি মারেন। পরে চেয়ারম্যান ঘটনাস্থলে এলে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমাদের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে তাজমুলকে ছেড়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন তিনি।
দফাদার মো. শামীম খানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। কিছু সময় পর তিনি মোবাইলফোন বন্ধ করে রাখেন। তবে তার প্রতিবেশীরা জানায়, ঘটনার পর তিনি গা-ঢাকা দিয়েছেন।
কুশঙ্গল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলমগীর সিকদার বলেন, ‘আমি নির্যাতিত ছেলেটির খোঁজখবর নিয়ে তার চিকিৎসা ও ওষুধের ব্যবস্থা করেছি।’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম তালুকদার বলেন, ‘ঘটনাটি সম্পর্কে শুনেছি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’