‘জনগণ নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছে না তাই সংখ্যা বাড়ছে না’
২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৮:১৮
ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্তের পরীক্ষার সংখ্যা না বাড়ার পেছনে সাধারণ মানুষের নমুনা পরীক্ষায় অনাগ্রহকেই দায়ী করছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।
অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, যদি কেউ নমুনা পরীক্ষা করাতে চায়, তবে অবশ্যই নমুনা পরীক্ষা করা হবে। আমরা একদিনে ২০ হাজার নমুনাও পরীক্ষা করেছিলাম। আমাদের সক্ষমতা আরও বেশি। কিন্তু জনগণ নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছে না, তাই সংখ্যা বাড়ছে না। এক্ষেত্রে সাংবাদিকদের মাধ্যমে আমাদের জনসাধারণের প্রতি সচেতনতার বিষয়ে অনুরোধ থাকবে— তারা যেন সচেতন হয় এবং তারা যেন পরীক্ষা করতে আসে।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) ‘কোভিড-১৯ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য অবহিতকরণ সভা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম (এমআইএস) শাখার পরিচালক ডা. হাবিবুর রহমান জানান, দেশে বর্তমানে ১১৭টি পরীক্ষাগারে কোভিড-১৯ শনাক্তের জন্য নমুনা সংগ্রহ ও পরীক্ষা করা হচ্ছে। এই সুবিধা দিয়ে দৈনিক ৫০ হাজার নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব।
৫০ হাজার সক্ষমতা থাকলেও দেশে এখন পর্যন্ত কেন ২০ হাজারের বেশি নমুনা পরীক্ষা করানো যাচ্ছে না— এমন এক প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, বর্তমানে জনগণ নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছে না তেমনভাবে। ফলে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়ছে না। আমাদের যেগুলো বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহের অনুরোধ আসে, সেসব অনুরোধও কিন্তু সঙ্গে সঙ্গেই রক্ষা করা হয়। আর যারা সুস্থ, তাদের তো নমুনা পরীক্ষার জন্য সেন্টারে আসতে হবে।
তিন বলেন, যদি জনগণ সেন্টারে না আসে তাহলে তো আমরা পরীক্ষা করতে পারব না। যখন আমরা নিয়মিতভাবে প্রেস ব্রিফিং করতাম, তখনো আমরা এ কথাটা বলতাম— কোনো উপসর্গ না লুকিয়ে সবাই যেন পরীক্ষা করাতে আসেন। এ ক্ষেত্রে পরীক্ষা করাতে এলেই পরীক্ষা করা হবে। আমরা ২০ হাজার পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করেছিলাম।
তিনি আরও বলেন, বেসরকারি পর্যায়েও আমাদের অনেক ল্যাব উন্মুক্ত। কিন্তু সেখান অনেক সময় নমুনা পরীক্ষার হার শূন্য দেখা যায়। সরকারি পর্যায়ে অনেক সময় ভিড় হয়, তবু সেখানেও যে কেউ নমুনা পরীক্ষা করাতে পারে। জনগণ না এলে এক্ষেত্রে আসলে আমরা অপারগ।
কেবল আরটি পিসিআর মেশিনের মাধ্যমেই নয়, অনেক জায়গায় জিন এক্সপার্ট মেশিন দিয়েও নমুনা পরীক্ষা কার্যক্রম চলছে বলে জানান অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। সভায় বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী, হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরিন, এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মো হাবিবুর রহমান, মা, নবজাতক, শিশু ও কিশোরী স্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হকসহ অন্যান্যরা। সভার শুরুতে কোভিড-১৯ তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-সেবার ওপর তথ্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেন্ট্রাল ফর মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজি বিভাগের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মারুফুর রহমান অপু।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
ফাইল ছবি