‘বিদেশ ফেরতদের কোয়ারেনটাইন চ্যালেঞ্জ হতে পারে’
২৬ নভেম্বর ২০২০ ০৮:৩১
ঢাকা: বিভিন্ন দেশ থেকে আকাশপথে আগত যাত্রীদের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় তাদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থাপনা চ্যালেঞ্জ হতে পারে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।
তিনি বলেন, বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে বর্তমানে দেশে যেভাবে আগের চাইতে বেশি যাত্রী আসছে, তাতে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইন একটি চ্যালেঞ্জ হবে বলে আমরা মনে করছি। নভেল করোনাভাইরাসমুক্ত (কোভিড-১৯) সনদ ছাড়া যাত্রীদের যেন বিমান কর্তৃপক্ষ পরিবহন না করে, সে বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে (বেবিচক) বারবার বলা হয়েছে। তবে তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
বুধবার (২৫ নভেম্বর) ‘কোভিড-১৯ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য অবহিতকরণ সভা’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী বলেন, ঢাকার কোয়ারেনটাইনের বিষয়টি কিন্তু আমাদের সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে হচ্ছে। আমরা বিমানবন্দরে যেটি করে— যারা কোভিড-১৯ নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসে, তাদের এই কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থাপনায় পাঠানো হয়। এর মধ্যে ব্র্যাকের একটি সেন্টার বন্ধ হয়ে গেছে। দিয়াবাড়ি ও হাজি ক্যাম্পে কোয়ারেনটাইন এখনো চলমান।
তিনি বলেন, এখন যেভাবে আগের চাইতে যাত্রীরা বেশি আসছেন, সেখানে কোয়ারেনটাইনের বিষয়টি একটি চ্যালেঞ্জ হবে বলে আমরা মনে করছি। এর জন্য আমাদের অধিদফতরের বিশেষজ্ঞ কমিটির সঙ্গে একটি মিটিংও করেছি। আমরা চেষ্টা করছি যে দিয়াবাড়ি ও হাজী ক্যাম্পে যদি নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারি, সেক্ষেত্রে নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসা যাত্রীদের কোয়ারেনটাইনে না রেখে তিন দিনের মধ্যে নেগেটিভ পেলে তাদের বাসায় হোম কোয়ারেনটাইনের ব্যবস্থা করা যায়। এক্ষেত্রে তাদের হোম কোয়ারেনটাইনে পাঠানো যাবে কি না, তা নিয়ে একটি মিটিংয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কোয়ারেনটাইন বিষয়ক এই আলোচনা জাতীয় পরামর্শক কমিটির কাছেও গেছে। কমিটির অনুমতি সাপেক্ষে যদি এটি আমরা করতে পারি, তাহলে ১৪ দিনের জন্য এই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেনটাইনের ব্যবস্থাপনাটা করতে হবে না। এ বিষয়ে সেনাবাহিনীও প্রধানমন্ত্রীর দফতরে জানিয়েছে বলে আমাদের জানানো হয়েছে। আমরা আশা করছি হয়তো খুব শিগগিরেই মন্ত্রণালয় থেকে পজিটিভ নির্দেশনা পাব।
তবে এ সময় করোনামুক্ত সনদ ছাড়া আসা যাত্রীরা যেন কোনো বিমানে পরিবহন না করেন, সে বিষয়ে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলা সত্ত্বেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন অধ্যাপক ডা. শাহনীলা ফেরদৌসী।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। সভায় বিভিন্ন বিষয়ে তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরেন অধিদফতরের হাসপাতাল শাখার পরিচালক ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া; রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক প্রফেসর ডা. তাহমিনা শিরিন; এমআইএস শাখার পরিচালক ডা. মো হাবিবুর রহমান; মা, নবজাতক, শিশু ও কিশোরী স্বাস্থ্য কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. মো. শামসুল হকসহ অন্যরা। সভার শুরুতে কোভিড-১৯ তথ্য ব্যবস্থাপনা ও ই-সেবার ওপর তথ্য উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেন্ট্রাল ফর মেডিক্যাল বায়োটেকনোলজি বিভাগের ডেপুটি প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. মারুফুর রহমান অপু।
সভায় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) পরিচালক আবু হেনা মোরশেদ জামান এবং অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা ও অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।