ভ্যাট গোয়েন্দার অভিযানে সাইকেল ব্যবসায়ীর বাণিজ্যিক হিসাব জব্দ
২ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৭
ঢাকা: রাজধানীর বংশালে একটি সাইকেল ব্যবসায়ীর প্রাঙ্গণ থেকে গোপন হিসাবপত্র জব্দ করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা। এতে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক বিশাল অংকের ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) সারাবাংলাকে বিষয়টি জানান ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
তিনি জানান, গোপনীয় সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দা অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির নাম সিরাজ সাইকেল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড। সিরাজ সাইকেলের কারখানা মুলাইদ, শ্রীপুর, গাজীপুরে অবস্থিত। তবে বংশালে প্রতিষ্ঠানটির হেডঅফিস ও এখানে বাণিজ্যিক হিসাবপত্র সংরক্ষণ করা হয়। ভ্যাট গোয়েন্দারা সাইকেল ব্যবসায়ীর নিয়মিত অডিট চলাকালে নির্ধারিত ছক অনুযায়ী হিসাবপত্র দাখিল করতে বললে তারা সেগুলো না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে।
মইনুল খান আরও জানান, অডিট শুরুর দীর্ঘ এক বছর পরে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সিরাজ সাইকেল কতিপয় কাগজ দাখিল করলে তাতে গোয়েন্দাদের সন্দেহ হয়। গোয়েন্দা দল প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও জয়েন্ট স্টক কোম্পানি থেকে যাচাই করে ভ্যাটের হিসাবে গরমিল পান। গোয়েন্দাদের কাছে দাখিলকৃত তথ্যাদি ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যে মনগড়া ও বানানো বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এছাড়া বংশালের অফিস থেকে সিএ ফার্ম এম এন ইসলাম অ্যান্ড কোম্পানি কর্তৃক নিরীক্ষিত রিপোর্ট ও অন্যান্য বাণিজ্যিক তথ্যাদি উদ্ধার করা হয়।
ভ্যাট গোয়েন্দার উদ্ধার করা তথ্যে প্রাথমিকভাবে দেখা যায়, কেবল ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় প্রদর্শন করেছে ১৯ কোটি ৭৩ লাখ টাকা। কিন্তু আটককৃত সিএ রিপোর্ট ও বাণিজ্যিক কাগজপত্র অনুযায়ী, এই হিসাব ৭৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। কেবল এক বছরে সিরাজ সাইকেল বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে ৫৪ কোটি ১৪ লাখ টাকা। ফলে ভ্যাট কর্তৃপক্ষের কাছে আগে দাখিলকৃত হিসাব অনুযায়ী, এক বছর সময়ে তারা প্রকৃত বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে প্রায় ২৭৪ শতাংশ জানান মইনুল খান।
তিনি আরও জানান, গোয়েন্দা দল গভীর অনুসন্ধান করে গত পাঁচ বছরের হিসাব বের করে দেখছে। আরও তদন্ত করে প্রকৃত ভ্যাট ফাঁকির পরিমাণ নির্ণয় করা হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভ্যাট আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই প্রতিষ্ঠানটি নিজেরা সিরাজ ব্রান্ডের সাইকেল পার্টস উৎপাদন করে। একইসঙ্গে তারা বিদেশ থেকে পূর্ণাঙ্গ সাইকেল আমদানি করে বাজারজাত করে থাকে। সাইকেল ব্যবসাতে উৎপাদনে ১৫ শতাংশ হারে এবং ব্যবসায়ী পর্যায়ে পাঁচ শতাংশ হারে ভ্যাট প্রযোজ্য।