‘ইলেকট্রিক কার উৎপাদন করতে চাইলে বিনামূল্যে জমি দেবে সরকার’
২ ডিসেম্বর ২০২০ ২৩:১২
ঢাকা: পুরনো প্রযুক্তি নয়, দেশে আধুনিক প্রযুক্তির ইলেকট্রিক কার নির্মাণ করতে চাইলে সরকার বিনিয়োগকারীদের সব ধরনের সহায়তা করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। এ ক্ষেত্রে সরকার বিনামূল্যে জমি দিতেও প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সালমান এফ রহমান বলেন, বর্তমান সরকার গাড়ি নির্মাণ শিল্পে নতুন প্রযুক্তির পথে চলছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেহেতু সনাতন পদ্ধতির ফসিল ফুয়েল বা পেট্রোল চালিত গাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছে, তাই সরকার ইলেকট্রিক কার নিমার্ণের লক্ষ্যে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগকারীদেরকে সহায়তা করতে প্রস্তুত। এরকম বিনিয়োগকারীদেরকে সরকার বিনামূল্যে জমি দিতেও প্রস্তুত রয়েছে। সরকার অবশ্যই দেশে পুরনো প্রযুক্তির কোনো গাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করতে দেবে না।
বুধবার (২ ডিসেম্বর) পলিসি রিসার্চ ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ (পিআরআই) আয়োজিত ‘কার মার্কেট ইন বাংলাদেশ: চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড প্রসপেক্টস’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে বিলাসবহুল গাড়ি আমদানিতে শুল্ক কমানো হলে রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মন্তব্য করেন সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, উচ্চ সিসির গাড়িতে আমদানি শুল্ক কমানো হলে রাজস্ব আয় বাড়বে। বর্তমানে গাড়ি আমদানির ক্ষেত্রে ১২৮ শতাংশ থেকে ৮২৭ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক কাঠামো রয়েছে, যা অত্যন্ত বেশি। শুল্ক কাঠামো কমানো হলে দেশের আরও বেশিসংখ্যক লোক বিলাসবহুল গাড়ি কিনবে।
অনুষ্ঠানে পিআরআই চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশে সৌর ও জ্বালানিভিত্তিক মোটরগাড়ি নির্মাণ শিল্প স্থাপন করতে হবে। এ দেশে গাড়ি নির্মাণ শিল্পকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে প্রতিষ্ঠার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমরা নতুন প্রযুক্তির গাড়ি নির্মাণের দিকে এগিয়ে যেতে পারি।
ড. মনসুর বলেন, পাকিস্তানের নিজেদের তুলা ও সুতা থাকা সত্ত্বেও পুরনো যন্ত্রপাতির কারণে তারা গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পে ভালো করতে পারেনি। কিন্তু বাংলাদেশ নিজেদের সুতা না থাকা সত্ত্বেও নতুন প্রযুক্তি এবং যন্ত্রপাতির কারণে গার্মেন্টস শিল্পে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জন করেছে। একইভাবে দেশে যদি বৈদুতিক গাড়ি নির্মাণ শিল্প গড়ে ওঠে, তাহলে নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে উপকৃত হতে পারে।
ড. আহসান মনসুর বলেন, নতুন গাড়ির চাহিদা বাড়লেও প্রস্তাবিত অটোমোবাইল শিল্প উন্নয়ন নীতিমালায় রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি বন্ধ করা উচিত হবে না। এ বিষয়ে ভারতের অভিজ্ঞতা ভালো নয়। তাছাড়া বাংলাদেশে বিক্রি হওয়া মোট গাড়ির ৭০ শতাংশ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি, যেগুলোর ৮০ শতাংশই জাপান থেকে আমদানি করা এবং স্বল্পব্যবহৃত। দেশে যেন কোনো স্ক্রু ড্রাইভিং শিল্প স্থাপন না করা হয়, নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সে বিষয়টি লক্ষ্য রাখতে হবে।
বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেনের সঞ্চানলায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আনোয়ারুল আলম, এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস নীতি ও আইসিটি) সৈয়দ গোলাম কিবরিয়া, বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বারভিডা) প্রেসিডেন্ট আবদুল হক এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. মাশরুর এম রিয়াজ।
আহসান এইচ মনসুর ইলেকট্রিক কার পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট পিআরআই সরকারি সহায়তা সালমান এফ রহমান