Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘ব্যাংকগুলোর রেগুলেটরের নির্দেশনা না মানার কারণ খতিয়ে দেখতে হবে’


৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:২১

ঢাকা: সরকারের ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা যথাসময়ে ছাড় না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেন, সরকারের প্রণোদনার টাকা কেন ব্যাংকগুলো ছাড় দিচ্ছে না তা গভীরভাবে দেখা উচিত। এক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো কেন রেগুলেটরের নির্দেশনা মানছে না তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থবিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. ফজলে কবির। এছাড়াও বক্তৃতা করেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের বাংলাদেশ অঞ্চলের কান্ট্রিডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম।

বিজ্ঞাপন

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, ‘ব্যাংকগুলো আইন অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। তারপরেও কেন প্রণোদনা টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনার পরেও ব্যাংকগুলো ছাড় দিচ্ছে না। এইসব বিষয়গুলো গভীরভাবে আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘করোনায় আমাদের অনেক অর্জন রয়েছে। কিন্তু এই অর্জনকে আমরা সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারছি না। বিশেষ করে বিভিন্ন সেক্টরে আমরা যে অর্থ পাঠাচ্ছি তার একটা বড় অংশ যাচ্ছে না। কারণ আমাদের ব্যাংকিং চ্যানেলটাতে সমস্যা রয়েছে। সবার অভিযোগ ব্যাংকগুলো টাকা ছাড় দিচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রণোদনার টাকা ছাড়তে একাধিক নির্দেশনা দিয়েছে। আইনগতভাবে রেগুলেটরকে সবগুলো ব্যাংক সহায়তা করতে বাধ্য। কারণ আইন, আইনই- রেগুলেটরের আইন ব্যাংকগুলোকে মানতে হবে। কিন্তু কেন তারা তা মানছে না, আমাদের গভীরে যেতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

এসএমই খাতে কেন ঋণ প্রবাহ বাড়ছে না?- এমন প্রশ্ন রেখে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘এসএমই ফাউন্ডেশন, বিসিক এবং পিকেএসএফ’কে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। বলা হয়ে থাকে, এসএমই খাত থেকে বিতরণকৃত ঋণের শতভাগ আদায় হচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে ঋণ বিতরণের পরিমাণ কেন বাড়ানো হচ্ছে না।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের অর্থ সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে। যেখানে ব্যয় করলে ভালো রিটার্ন আসবে সেখানেই ব্যয় করতে হবে। আমাদের অপ্রয়োজনীয় খরচ কমাতে হবে। সব খরচ সঠিকভাবে করতে হবে। যেখানে যেটা লাগবে সেখানে সেটা খরচ করতে হবে। কিন্তু অর্থের যাতে কোনো অপচয় না হয়।’

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘গত কয়েক মাস ধরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। এটা ভালো দিক। কিন্তু রেমিট্যান্স কেন বাড়ছে, এটা অব্যাহত থাকবে কি-না তাও আমাদের গবেষণা করতে হবে।’

সিপিডি‘র সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘গ্রামীণ অর্থনীতিতে ২৩ মিলিয়ন লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এটা মোট কর্মসংস্থানের ৪০ শতাংশ এবং জিডিপি‘র ৩০ শতাংশ। গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল রাখতে আমাদের নতুন নতুন উদ্যোগ নিতে হবে। এখন অনেক তরুণ গ্রামীণ অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে।’

তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন সরকারের লক্ষাধিক কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। তবে প্রণোদনার অর্থ সঠিক সময়ে ছাড় না হওয়ায় এর সঠিক সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। তাই অর্থ দ্রুত ছাড় দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে আরও কঠোর হতে হবে।’

ড. শামসুল আলম বলেন, ‘করোনার সময় কর্মসংস্থান যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেদিকে আমরা লক্ষ্য রাখছি। তবে অর্থনীতির চাকা পুরোদমে চালু হলেই নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। বর্তমানে অর্থনীতি কিছুটা স্লো হলেও আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে তা স্বাভাবিক হবে।’

এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, ‘করোনাকালে সরকারের বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে। প্রণোদনা প্যাকেজের কারণে দেশের অর্থনীতি দ্রুত স্বাভাবিক হতে কাজ করছে।’

কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন ক্ষতিয়ে নির্দেশনা পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান রেগুলেটর

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর