ডিসেম্বরের মধ্যে প্রণোদনার ৯০ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হবে: গভর্নর
৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৪১ | আপডেট: ৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:০৭
ঢাকা: চলতি ডিসেম্বরের মধ্যে মোট প্রণোদনা প্যাকেজের ৯০ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. ফজলে কবির।
তিনি বলেন, ডিসেম্বরে মধ্যে সব খাতে পুরোপুরি ঋণ বিতরণ করা সম্ভব না হলেও আমরা আশা করছি, প্রণোদনা প্যাকেজের মোট ৯০ শতাংশ অর্থ বিতরণ করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি যেসব খাতে প্রণোদনার অর্থ ছাড়ে ধীরগতি রয়েছে, আমরা সেসব খাতে অর্থছাড় দিতে বিশেষ পদক্ষেপ নিচ্ছি।
আরও পড়ুন- ‘ব্যাংকগুলোর রেগুলেটরের নির্দেশনা না মানার কারণ খতিয়ে দেখতে হবে’
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘কর্মসৃজন ও গ্রামীণ অর্থনীতি পুনরুজ্জীবন’ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার। প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বক্তব্য রাখেন এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. মো. মাসুদুর রহমান, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান, এশীয় উন্নযন ব্যাংকের বাংলাদেশ অঞ্চলের কান্ট্রি ডিরেক্টর মনমোহন প্রকাশ, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সদস্য ড. শামসুল আলম।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ফজলে কবির বলেন, ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সরকারের ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ১ লাখ ২১ হাজার ৩৫৩ কোটি টাকা বিতরণের ৯০ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হবে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করে যাচ্ছে। মাঝারি খাতের উদ্যোক্তাদের জন্য বরাদ্দ ২০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ৯০ শতাংশ এরই মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের (এসএমই)শিল্পোদ্যক্তাদের জন্য বরাদ্দ ২০ হাজার কোটি টাকার ৪৯ শতাংশ ছাড় দেওয়ার জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৪১ শতাংশ অর্থ বিতরণও করা হয়েছে। এই অর্থ দ্রুত ছাড় করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দুই হাজার কোটি টাকার একটি স্কিম চালু করা হয়েছে। এই খাতে বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকার থেকেও কিছু অর্থ পাওয়া যাবে। এই অর্থ পেলে আমরা চেষ্টা করব ফান্ডটি ৫ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করতে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর বলেন, অনেকে বলেন মাঝারি খাতে বেশি ঋণ যাচ্ছে। কিন্তু এটি সঠিক নয়। এসএমই খাতে এখন পর্যন্ত ৮ হাজার ২১৮ কোটি টাকা ৬১ হাজার ৯১৩ জনের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষি খাতে নন-ক্রপ খাতে ৫ হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণের মধ্যে এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৫৬৬ কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে। শতকরা হিসাবে এর পরিমাণ ৫১ দশমিক ৩ শতাংশ। আর এই খাতে ঋণ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ২ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। কৃষি খাতে ঋণ সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৫ হাজার ৪৮৭ জন। এই ঋণগুলো সঠিক লোকের মাঝেই বিতরণ করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ব্যাংকগুলোকে আমরা যে নির্দেশনা দিয়েছি, তারা সেগুলো যথাযথভাবে পালন করছে।
ফজলে কবির বলেন, মাইক্রো পেশাজীবী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য ঘোষিত তিন হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের ঋণ বিতরণের গতি সবচেয়ে ধীর। এই খাতের জন্য ১ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিতরণ হয়েছে ৯৬৭ কোটি টাকা, যা অনুমোদিত অর্থের ৩২ শতাংশ। এই খাতে ঋণ বিতরণ কম হয়েছে। তারপরও সুবিধাভোগীর সংখ্যা কিন্তু কম না। এই খাত থেকে ৩১ হাজার ১৬১ জন কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঋণ পেয়েছেন। ফলে ঋণ বিতরণ কম হলেও সুবিধাভোগীর সংখ্যা অনেক বেশি।
তিনি বলেন, করোনাকালে আমরা ঋণগ্রহীতাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা দিয়েছি। বিশেষ করে করোনার কারণে ঋণ প্রবেশিংয়ের সুবিধা দিয়েছি। ঋণের কিস্তি পরিশোধের সময় বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ঋণ শ্রেণিকরণের সময় বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে যেটা তিন মাস ছিল, সেটা এখন ছয় মাস। যেটা ছয় মাস ছিল, সেটা এখন ১২ মাস এবং যেটা ১২ মাস ছিল, তাদেরও বিভিন্ন ধরনের সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
ঋণ বিতরণ গভর্নর গভর্নর ফজলে কবির প্রণোদনা প্যাকেজ ফজলে কবির বাংলাদেশ ব্যাংক মতবিনিময় সভা