আল্লাহর ৯৯ নামখচিত মুজিব মিনার চায় সম্মিলিত ইসলামী দল
৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:১১
ঢাকা: ভাস্কর্য নয়, আল্লাহর ৯৯ নাম খচিত মুজিব মিনার তৈরির প্রস্তাব দিয়েছে সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহ। তাদের দাবি, ভাস্কর্য ও মুর্তি একই শব্দ। এটি পূজার জন্য তৈরি করলে হবে শিরক ও ঈমান চলে যাবে। আর পূজার জন্য তৈরি না হলে ঈমান চলে যাবে না তবে গুনাহ হবে। তাই তারা ভাস্কর্যের পরিবর্তে একটি মুজিব মিনার চান।
শনিবার (৫ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মাদানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসায় সম্মিলিত ইসলামী দলসমূহের আলেমদের ভাস্কর্য নিয়ে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনকল্পে এক বৈঠক শেষে আলেম ওলামারা এ দাবি জানান।
বৈঠক শেষে বেফাক সভাপতি, কওমি মাদ্রাসা সভাপতি আল্লামা মাহমুদুল হাসানের পক্ষে পাঁচ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরেন বসুন্ধরা শেখ জাকারিয়া ইসলামী রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল ও বেফাকের সদস্য মুফতি মিজানুর রহমান সাইদ বলেন, ‘দেশে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিরসনে দেশ বরেণ্য শীর্ষ আলেমদের বৈঠকে কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
এরমধ্যে আল্লামা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধি দল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাত করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আলেমগণ পাঁচ দফা প্রস্তাবনা তুলে ধরবেন।
ওই প্রতিনিধিদল সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। পাঁচ দফা প্রস্তাব পাঠ করেন বেফাক সদস্য মুফতি নেয়ামত উল্লাহ ফরিদী। প্রস্তাবনাগুলো হলো- মানব মূর্তি তৈরি কোরআন ও সুন্নাহ পরিপন্থি। এটি তৈরি হলে মৃত ব্যক্তির আত্মা কষ্ট পায়। এটি সম্মাজনক নয়। তাই এটি না করে কোরআন সুন্নাহ ভিত্তিক বিকল্প কোনো প্রস্তাব গ্রহণ করা।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর ব্যাঙ্গাত্বক কার্টুন একে যারা তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা এবং ধর্মীয় উস্কানিমুলক পোস্ট দিয়ে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র যারা করছে তাদের ওপর সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বিগত সময়ে ঢাকাসহ সারাদেশে ধর্মপ্রাণ ওলামা একরামদের ওপর পুলিশি নির্যাতন ও মামলা করা বন্ধ করা হোক। তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া হোক। ধোলাইপাড় চত্বরের পাশে ক্ষতিগ্রস্ত মসজিদের অংশ বিশেষ মুসুল্লিদের নামাজের জন্য খুলে দেওয়া হোক।
সম্প্রতি শব্দ দূষণ ও জন দূর্যোগের অযুহাতে ওয়াজ মাহফিলে লাউট স্পিকার দিয়ে বক্তৃতা করা যাবে না মর্মে প্রশাসনের যে তৎপরতা দেখা যাচ্ছে তা বন্ধ করা হোক। অথচ শব্দ দূষণ করে গান বাজনা করা হচ্ছে সেখানে প্রশাসনের কোনো তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না।
যেসকল বিষয়ে শরীয়তে নিষিদ্ধ ও হারাম সেসব বিষয়ে কোরআন সুন্নামতে সঠিক বক্তব্য তুলে ধরা আলেম ওলামাদের অন্যতম দায়িত্ব। অথচ এক শ্রেণির মানুষ আলেমদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ও দায়িত্বহীন আচরণ করছে। কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনাশের উসকানিও দিচ্ছে। এ সবের খোঁজখবর রাখা এবং শান্তিপূর্ণ সমাধান খুঁজে বের করা সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব। উস্কানিমূলক বক্তব্য, অবমাননাকর মন্তব্য, উগ্র স্লোগান, মিছিল মিটিং সমাজে অস্থিরতার সৃষ্টি করবে। ওলামায়েকরামগণ কঠোর ধৈর্য ও সংযমের পরিচয় দেওয়া সত্বেও সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। সরকারকে এ সব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে দেশে উদ্ভূত যে কোনো পরিস্থিতির দায় সরকার এড়াতে পারবে না।