Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২০ হাজার শ্রমিক-প্রকৌশলীর শ্রমের ফসল স্বপ্নের পদ্মাসেতু


১১ ডিসেম্বর ২০২০ ১২:০৯

পদ্মাসেতু। ফাইল ছবি

ঢাকা: পদ্মাসেতুর ৪১তম স্প্যান বসানোর মাধ্যমে একসূত্রে গাঁথা হয়ে গেছে পদ্মার দুইপাড়। পৃথিবীর অন্যতম খরস্রোতা নদীর বুকে দণ্ডায়মান বিশাল এই স্থাপনা নির্মাণের পেছনেও রয়েছে বিশাল এক কর্মযজ্ঞের গল্প। জার্মানি থেকে হ্যামার, লুক্মেমবার্গ থেকে রেলের স্ট্রিংগার, চীন থেকে ট্রাস, অস্ট্রেলিয়া থেকে পরামর্শক; এমনভাবে বহুদেশ থেকে প্রকৌশলী ও প্রকৌশল যন্ত্রপাতি এসেছে পদ্মায়। ২০ হাজার শ্রমিক-প্রকৌশলীর টুকরো টুকরো মেধা ও শ্রমে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের স্বপ্নের পদ্মাসেতু। বাংলাদেশ এবং চীনের ৭০০ মেধাবী প্রকৌশলী সরাসরি জড়িত ছিলেন এই নির্মাণ কাজে। দিনে পদ্মার দুই পাড়ে কাজ করেছেন ১২ থেকে ১৩ হাজার শ্রমিক।

বিজ্ঞাপন

পদ্মাসেতুর একজন বিশেষজ্ঞ জানান, ছোট-বড় সেতু বা অন্যান্য অবকাঠামোর ক্ষেত্রে সরকার সবসময়ই বিদেশি পরামর্শক ও ঠিকাদার ব্যবহার করেছে। তবে পদ্মাসেতুতে বিদেশিদের সাথে বাংলাদেশি প্রকৌশলী ও ঠিকাদাররাও কাজ করেছেন। সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ আন্তর্জাতিক টেন্ডারের মাধ্যমে বাংলাদেশি ঠিকাদাররা করেছেন। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানেও বেশিরভাগ বাংলাদেশি প্রকৌশলী কাজ করেছেন।

তিনি আরও জানান, পদ্মাসেতু নির্মাণকারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং। তাদের প্রধান কার্যালয় চীনের উহানে। সেখানকার এক হাজারের বেশি লোক পদ্মাসেতুর কাজে নিয়োজিত। সেখানের একটি কারখানায় স্প্যানের ছোট ছোট টুকরোগুলো প্রস্তুত হয়ে জাহাজে বাংলাদেশে এসেছে। এছাড়াও নদী শাসন কাজ করেছে চীনের আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনোহাইড্রো করপোরেশন।

পদ্মাসেতুর ওপরে রেললাইনের জন্য যে স্ট্রিংগার ব্যবহার করা হয়েছে তা এসেছে ইউরোপের দেশ লূক্সেমবার্গ থেকে।

জানা গেছে, সেতুর পাইল ড্রাইভের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিশালী হ্যামার। এতো শক্তিশালী হ্যামার শুধু জার্মানিরই আছে। এসব ড্রাইভিং হ্যামার বা কন্ট্রোল ইউনিট তারা বিক্রি করে না। এমনকি, এগুলো কেউ কিনে এনে পরিচালনা করার সাহসও পায় না। পাইলগুলো ড্রাইভ করার জন্য ১৪ জার্মান নাগরিক প্রায় সাড়ে চার বছর ধরে প্রকল্প এলাকায় ছিলেন। হ্যামারগুলো তৈরি হয় জার্মানির বিখ্যাত শহর মিউনিখে। জার্মান ব্র্যান্ড এ হ্যামারগুলোর নাম মেংক। ২৯৮ টি পাইল ড্রাইভ করার জন্য তিনটি হ্যামার আনা হয় জার্মানি থেকে। যাদের ক্ষমতা ছিল যথাক্রমে ১৯০০, ২৪০০ ও ৩৫০০ কিলোজুল। তিনটি হ্যামারের মধ্যে দুটি হ্যামারই মূল সেতুর কাজ শেষ হওয়ার পর জার্মানি ফিরে গেছে। ২৪০০ কিলোজুল হ্যামারটি বিদ্যুৎলাইন পাইল ড্রাইভিং এর কাজে রয়ে গেছে।

বিজ্ঞাপন

নভেম্বর পর্যন্ত মূল সেতুর অগ্রগতি ৯১ ভাগ, নদী শাসন ৭৬ ভাগ ও সার্বিক অগ্রগতি ৮২ দশমিক ৫ শতাংশ। সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৪ সালে। প্রথম স্প্যান বসানো হয় ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে।

আরও পড়ুন :
পদ্মাসেতুর আদ্যোপান্ত
শত বাধা অতিক্রম করে পদ্মাসেতু আজ দৃশ্যমান: কাদের
নদীর গভীরতা-খরস্রোত— সব চ্যালেঞ্জ উৎরেই পদ্মাসেতু

চীন পদ্মাসেতু প্রকৌশলী শ্রমিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর