Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কুতুব মিনার প্রাঙ্গণে পূজার অধিকার চেয়ে মামলা


১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ১৭:০০

ভারতের রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক স্থাপনা কুতুব মিনারের প্রাঙ্গণে পূজা আয়োজনের দাবি জানিয়ে দেওয়ানি আদালতে মামলা করেছেন দুই জন আইনজীবী। খবর বিবিসি।

মামলার বিবরণীতে আইনজীবী হরিশঙ্কর জৈন এবং রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী বলেছেন, এই কমপ্লেক্সে আগে থেকেই শ্রীবিষ্ণুহরিসহ হিন্দু ও জৈন দেবতাদের ২৭টি মন্দির ছিল। সুলতান কুতুবউদ্দিন আইবেক সেগুলো ভেঙেই তৈরি করেছিলেন কুওয়াত-উল ইসলাম মসজিদ। এখন যেনো সেখানে হিন্দু ও জৈন ধর্মাবলম্বীরা পূজা এবং উপাসনা করার অধিকার ফিরে পান – তাই তারা আদালতের শরাণাপন্ন হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

এ ব্যাপারে হরিশঙ্কর জৈন বিবিসিকে জানান, আটশ বছর ধরে ওই মসজিদ খালিই পড়ে আছে, কেউ সেখানে নামাজ পড়েনি।

অন্য আরেক আবেদনকারী রঞ্জনা অগ্নিহোত্রী বলেন, কুতুবউদ্দিন আইবেক স্থাপিত ফলকেও পরিষ্কার বলা ছিল, ২৭টি হিন্দু ও জৈন মন্দিরের ধ্বংসস্তূপের ওপরই এই মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। স্বাধীন ভারতেও তারা যদি সেখানে পূজা বা দর্শনের অনুমতি না-পায়, তাহলে আর কী বলার থাকে?

এদিকে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো বিভিন্ন কট্টোর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন এই দাবিতে সক্রিয় সমর্থন জানাচ্ছে।

এর বছরখানেক আগে, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট রামমন্দির নির্মাণের রায় দিয়েছিল, সেখানেও ভেঙে ফেলা বাবরি মসজিদের জায়গায় আগে প্রাচীন হিন্দু মন্দিরের অস্তিত্ত্বকে মেনে নিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। সেই ধারাবাহিকতায় কুতুব মিনার কমপ্লেক্সেও হিন্দুরা পূজা-অর্চনার অধিকার ফিরে পাবেন বলে মনে করছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ।

এ ব্যাপারে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মুখপাত্র বিনোদ বনসল বিবিসিকে বলেন, অতীতে বহু মন্দির ভেঙেই সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর মসজিদ কিংবা মুঘল যুগের নানা স্থাপত্য নির্মিত হয়েছিল। কুতুব মিনারেও একই ঘটনা ঘটেছিল। এখন তাজমহল চত্বরে যদি মুসলিমদের নামাজ পড়ার অধিকার থাকে, তাহলে তো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে হিন্দুদেরও কুতুব মিনারে একই অধিকার পাওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন

তবে, কুতুব মিনার কমপ্লেক্সে হিন্দু ও মুসলিম, উভয় ধারার স্থাপত্যের নিদর্শন আছে। ভারতে ইতিহাসবিদদের অনেকেই মনে করছেন, মুসলিম শাসনামলে নির্মিত বিভিন্ন পুরাকীর্তিকে যেভাবে ধর্মীয় দৃষ্টিকোণে ‘পুনরুদ্ধারে’র চেষ্টা চলছে – কুতুব মিনার সেই তালিকায় সবশেষ সংযোজন।

প্রসঙ্গত, দিল্লির দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা কুতুব মিনারের নির্মাণ শুরু করেছিলেন মুহম্মদ ঘুরির সেনাপতি কুতুবউদ্দিন আইবেক। ১১৯২ সালে মুহম্মদ ঘুরির কাছে পৃথ্বীরাজ চৌহানের পরাজয়ের পরই দিল্লিতে হিন্দু শাসনের অবসান হয়। আর তার কয়েক বছর পরেই শুরু হয় এই মিনারের নির্মাণকাজ।

বর্তমানে, দিল্লির কুতুব মিনার কমপ্লেক্স ইউনেসকো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। যা ভারতের প্রত্নতাত্ত্বিক সংস্থা (এএসআই) নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। এখন আদালত যদি সেখানে হিন্দু বা জৈনদের সত্যিই পূজার অধিকার দেয়, তাতে যে নতুন বিতর্কের সূত্রপাত হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

কুতুব মিনার দিল্লি বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভারত মামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর