‘রক্তে ভিজে আমরা শোকাতুর হইনি, শোকমুখর হয়েছি স্বাধীনতা পেয়ে’
১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ১১:৫৮
ঢাকা: একাত্তরে মৌলভীবাজারের বড়লেখায় দুরবিন টিলায় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সঙ্গে বাঙালির যুদ্ধ ছিল এক অসম লড়াই। পাকিস্তানের দেড়শ সৈনিকের বিপরীতে মাত্র আটজন বাঙালি মরিয়া হয়ে লড়েছিলেন সেদিন। সেই যুদ্ধে বাঙালিরা বিজয় ছিনিয়ে এনে সিলেট অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করে। ১৭৯১ সালের নভেম্বরে বড়লেখায় সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেওয়া মুক্তিবাহিনীর জেড ফোর্সের অধীন দ্বিতীয় গোলন্দাজ বাহিনীর উপ-অধিনায়ক ছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির। যিনি এখনও বলিষ্ঠ কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা ছিলাম দুরন্ত সময়ের জীবন্ত চলচ্চিত্র। রক্তে ভিজে আমরা শোকাতুর হইনি, শোকমুখর হয়েছি স্বাধীনতা পেয়ে।’ সারাবাংলার সঙ্গে আলাপচারিতায় সেই সাজ্জাদ আলী জহির তুলে ধরেছেন স্বাধীনতা যুদ্ধে বাঙালির কিছু বিজয় গাথা—
১৯৭১ সাল। ডিসেম্বর মাস। বিজয় তখনও অনেক দূরে। ওই সময়ে অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছিল রণাঙ্গনে। প্রথমে আমরা যুদ্ধক্ষেত্রে চলে আসি। আমরা জানি ২১ নভেম্বর ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী সিদ্ধান্ত নেয় যে, পাকিস্তানি সেনারা আক্রমণ চালালে দুটি বাহিনী একত্রে যুদ্ধ করবে। কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে ওয়েল ডিফাইন গাইডলাইন না হলে ক্ষয়ক্ষতি বেশি হতে পারে। তিনটি ফোর্স যদি যুদ্ধ করে তবে একটা সাইডও হয়ে যেতে পারে। তখন একটি যৌথ কমান্ড গঠিত হয় এবং একটি নিয়ম করা হয় যে, যুদ্ধ করার সময় রণাঙ্গনে যে অধিনায়ক সিনিয়র হবেন তিনিই সেই যুদ্ধক্ষেত্রের দায়িত্ব নেবেন।
আমরা সবাই জানি, ৩ ডিসেম্বর পাকিস্তানের ৬০টি বিমান পেশোয়ার এয়ারবেজ থেকে টেকঅফ করে। উদ্দেশ্য ছিল ভারতের ১০টি বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ করে ধ্বংস করে ফেলা। বিমান ধ্বংস করলে এয়ারকভার ছাড়া ভারত পরবর্তী সময়ে যুদ্ধ করতে পারবে না- এটাই ছিল ইয়াহিয়া খান ও তার সঙ্গের সেনানায়কদের পরিকল্পনা। কিন্তু তারা জানতো না যে, ভারত তাদের এই পরিকল্পনা হয়তো আগেই আন্দাজ করে ফেলেছিল। তারা ওই পরিকল্পনা আঁচ করতে পেরে আগেই তাদের ১০টি বিমান ঘাঁটি থেকে বেশিরভাগ বিমান সরিয়ে নিয়েছিল। আমরা যতটুকু জেনেছি, তখন ভারতের মাত্র দুটি বিমান আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছিল। সে ঘটনার সময় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরাগান্ধী কলকাতায় ছিলেন। এই ঘটনার পর তিনি দ্রুত দিল্লি চলে যান এবং তাদের সংসদ অধিবেশনে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় ভারত হয়ে গেল ভিকটিম আর পাকিস্তান হয়ে যায় আক্রমণকারী।
এরপর ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একত্রে যুদ্ধ শুরু করে। ২১ নভেম্বর আমাদের প্রধান সেনাপতি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন যে, ওইদিন থেকে ভারতে যতগুলো মুক্তিবাহিনীর ক্যাম্প ছিল তা গুটিয়ে বাংলাদেশে অবস্থান করে পাকিস্তানি সৈন্যদের সঙ্গে যুদ্ধ করবে। আমরা তখন বাংলাদেশের ভেতরেই ছিলাম। ২১ নভেম্বর আমরা খবর পেলাম ভারতীয় বাহিনী এ যুদ্ধে যোগদান করছে। তখন আমাদের মনবল অনেকাংশে বেড়ে গেল এবং আমাদের সঙ্গে বাংলার লাখো কোটি মানুষ যারা এ যুদ্ধে আমাদের সঙ্গে ছিল তারাও অনুপ্রেরণায় উদ্দীপ্ত হলো। যুদ্ধক্ষেত্রে কী কী ঘটনা ঘটেছে আমাদের একটু জানা প্রয়োজন। এসব ব্যাপারে ইতিহাস অনেকাংশে নির্বাক। এগুলো আমাদের ইতিহাসে একেকটা জ্বলন্ত নিদর্শন।
৫ ডিসেম্বর। আমরা দেখতে পাই, চৌগাছাতে একটি ট্যাংক যুদ্ধের সূচনা হয়েছে। সেখানে ভারতের ট্যাংক রেজিমেন্ট যুদ্ধ করেছে। তাদের সঙ্গে অবস্থান নিয়েছে ৮ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা এবং আরেকটা সেনাদল এগিয়ে যাচ্ছে যশোর এক্সেসের দিকে। সেদিন যশোর বিমানবন্দরের ওপরে আর্টিলারি ও মর্টার সেলের প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ হয়। কারণ সেখানে পাকিস্তানিদের শক্ত অবস্থান ছিল। তারাও যুদ্ধে লড়ে যাচ্ছে। সেদিন আবার ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও ৮ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা দর্শনা দখল করে। দর্শনা ছিল পাকিস্তানি সেনাদের শক্ত অবস্থান। দর্শনা দখল করার পর পাকিস্তানিদের মনোবলে চরম আঘাত লাগে।
তারপর দেখলাম ভারতের ট্যাংক রেজিমেন্ট এবং ৫ নম্বর গার্ড রেজিমেন্ট ঝিনাইদহের ওপরে আক্রমণ করল। এসময় আমরা উত্তরে চলে আসি চরখাই দখল করার জন্য। উত্তরের হিলিতে ওই সময় প্রচণ্ড যুদ্ধ হয়। সে যুদ্ধে ভারতের চার নম্বর গার্ড রেজিমেন্টের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তখন ভারতের ডিভিশন ও মুক্তিবাহিনীর সাত এবং ছয় নম্বর সেক্টরের সৈন্যরা অ্যাডভান্স করে তিস্তা নদী অতিক্রম করে বগুড়ার দিকে অগ্রসর হতে থাকে। তখনও যুদ্ধটা ক্রিস্টালাইজড হয়নি। কারণ যুদ্ধক্ষেত্রে কিছু সময় দিতে হয় অগ্রসর হওয়ার জন্য।
এদিকে পূর্ব রণাঙ্গনে ভারতীয় বাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একত্রে সমশেরনগর দখল করার পর একটা দল চলে যায় মৌলভীবাজারের দিকে। মৌলভীবাজার ছিল পাকিস্তানি সেনাদের শক্ত অবস্থান। ব্রিগেডিয়ার ইফতেখার রানা পাকিস্তানের ২৩১৩ ব্রিগেড কমান্ড করছিল। সে কঠোর ছিলেন এবং যুদ্ধটাকে তাদের দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু পেরে উঠছিল না। আরেকটা দল শেরপুর ও সাদিপুর ফেরিঘাটের দিকে রওনা দিয়েছিল। এদের সঙ্গে কিছু নেভি কমান্ড ছিল। তারা ফেরিগুলোকে কব্জা করে ধ্বংসের চেষ্টা করছিল। যাতে পাকিস্তানিরা ফেরিগুলো ব্যবহার না করতে পারে। আরেকটা ব্রিগেড অ্যাডভান্স করছিল কুলাউড়ার দিকে। সেখানে আমাদের ৪ নম্বর সেক্টর ও ভারতের ৬১ নম্বর ব্রিগেড আক্রমণ করে।
সিলেটের রণাঙ্গনে প্রচণ্ড যুদ্ধ চলছিল। ইতোমধ্যে ২ নম্বর সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা কুমিল্লার আশেপাশে বেশিরভাগ জায়গা দখল করে নেয। কিন্তু কুমিল্লা শহরে তখনও যুদ্ধ চলে। কুমিল্লা বিমানবন্দর এলাকায় পাকিস্তানিরা শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছিল। কিন্তু তাদের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছিল। ভারতের আরেকটি দল কুমিল্লার বাইপাস দিয়ে মিয়া বাজারের দিকে অ্যাডভান্স করে। আর গঙ্গাসাগর বিজয়ের পরে ভারতের ১৪ নম্বর গার্ড রেজিমেন্ট এবং ২ নম্বর সেক্টরের সৈন্যরা মেঘনার দিকে অগ্রসর হয়।
এদিকে ময়মনসিংহের কামারপুর দখল হয়ে যায়। কামারপুরেও পাকিস্তানিদের শক্ত অবস্থান ছিল। এছাড়া মুক্তিযোদ্ধারা বকশিগঞ্জ দখল করে ফেলে। ভারতের ওয়ান ওয়ান কমিউনিকেশন জোন জামালপুরের কাছে অবস্থান নেয়। সেখানে একটা স্যারেন্ডারের প্রস্তাব এলে সেজন্য প্রস্তুত হয়েছিল। আর ময়মনসিংহ শহর দখল করার জন্য ভারতের এফজে সেক্টরের ব্রিগেডিয়ার শামস সিং বাবাজি এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ১১ নম্বর সেক্টর অ্যাডভান্স করে। আমরা জানি ১১ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর আবু তাহের বীর উত্তমের একটি পা একটা উড়ে যায়। মুক্তিযোদ্ধারা তখন ময়মনসিংহে এফজি সেক্টরের সামনে অ্যাডভান্স করে। এই ছিল সার্বিক পরিস্থিতি।
আমরা দেখেছি, পাকিস্তানিরা যুদ্ধ করছে আবার পরাজয় বরণ করছে। কয়েক জায়গায় তারা প্রচণ্ডভাবে যুদ্ধ করছে। আবার কয়েক জায়গায় তারা পরাজয় বরণ করছে। এটা ছিল যুদ্ধের একটা অংশ। পদাতিক যুদ্ধ এবং আর্মির যুদ্ধ দেখেছি। এছাড়া বিমানবাহিনীর একটি প্রচণ্ড যুদ্ধ ছিল। ইতোমধ্যে গোদনাইল দখল করে পাকিস্তানিদের পেট্রোল উড়িয়ে দেওয়া হয়েছো। পতেঙ্গার কাছেও একটা ক্যাম্প উড়িয়ে দেওয়া হয়। সেখানে পেট্রোল ও লুব্রিক্যান্ট ধ্বংস করা হয় যাতে তারা যুদ্ধ এগিয়ে নিয়ে যেতে না পারে।
ইতিহাসের পাতায় লেখা দরকার যে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের ভেতরে প্রথম কিলোফ্লাইট বা মুক্তিযোদ্ধাদের এয়ারক্রাফট আক্রমণ শুরু হয়। তারপর ভারত সে আক্রমণে অংশ নেয়। সেই সময় আমরা দেখেছি মৌলভীবাজার ও সিলেটের রাস্তার ওপরে মুক্তিবাহিনীর দুটি বিমান পাকিস্তানিরা পরাস্ত করেছিল। বরিশালে ছোট একটা এয়ারস্ট্রিপ ছিল। পাকবাহিনী সেগুলো ব্যবহার করে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর আক্রমণ চালিয়েছে। ৫ ডিসেম্বর ১৯৭১। ঢাকায় যদিও তখন মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় বাহিনী ঢাকায় ঢুকতে পারেনি। কিন্তু সেখানে ২ নম্বর সেক্টর ও কিছু মুক্তিযোদ্ধা অবস্থান করছিল। তারা এদিন ঢাকা ও চট্টগ্রাম দুটি বিমানবন্দরেই আক্রমণ করে। সেই আক্রমণে বরিশালের এয়ারট্রিপটি ধ্বংস হয়।
আরেকটি ঘটনার কথা বলি। ভারতের ৪/৫ গোরখা রাইফেলস প্রস্তুতি নেয় একটি হেলিকপ্টার অপারেশন করবে সিলেটের মিয়াপাড়া এলাকায় কুলাউড়ার দিকে। যদিও স্থলযুদ্ধে কুলাউড়া দখল করা যায়নি। পরে হেলিকপ্টার অপারেশনে সেখানেও সফল হয়। টাঙ্গাইলের পুংলি ব্রিজ এলাকাতে একটা বড় এয়ারবোর্ন প্যারাট্রুপারদের ল্যান্ডিংয়ের প্রস্তুতি চলছিল। আসলে তথ্যগ্রহণ চলছিল। এসব অপারেশনের আগে পরিকল্পনা না করলে যুদ্ধ সঠিকভাবে সংগঠিত হয় না। নৌবাহিনীর সদস্যরাও তখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে। পাকিস্তানিদের সাপ্লাই চেইন নষ্ট করার জন্য আমাদের নৌ কমান্ড ও মেরিন কমান্ড মুক্তিযোদ্ধারা বিভিন্ন জায়গায় পাকিস্তানিদের জাহাজ ডুবিয়েছে। ভারতের এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার ৫ ডিসেম্বর কক্সবাজার বিমান ঘাঁটি আক্রমণ করে। চট্টগ্রাম পোর্টের কাছে পাকিস্তানিদের কয়েকটি ঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত করে তারা। মোংলার চালনাতেও পাকিস্তানিদের অনেক ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হয়।
সার্বিক পরিস্থিতিতে নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, স্থলবাহিনী, মুক্তিবাহিনী এবং ভারতীয় বাহিনীর সমন্বিত ও সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে যুদ্ধে বিজয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলাম। ৫ ডিসেম্বর। আন্তজার্তিক মহলে তখন অনেকগুলো বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছিল। পাকিস্তানকে সমর্থনকারী আমেরিকা, চীন এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপের কিছু দেশ জাতিসংঘের কাছে যুদ্ধ বিরতির সুপারিশ করেছিল তখন। কিন্তু পরিস্থিতি অনুকূলে ছিল না। তখন আমাদের মুজিবনগর সরকার ৮ নম্বর থিয়েটার রোড থেকে কূটনৈতিক তৎপরতা চালাচ্ছিল বিভিন্ন দেশে। যারা তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছিলেন তারাও কাজ করেছেন বিশ্ব বিবেক জাগ্রত করতে। আমরা দেখেছি বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন অঞ্চলে বাংলাদেশের স্বীকৃতি পেতে সুপারিশ করা হচ্ছিল। তখন শোনা যাচ্ছিল যে, কিছু দেশ হয়তো আমাদের স্বীকৃতি দেবে। আমরা আশা করছিলাম, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলে আমাদের মনোবল বেড়ে যাবে। এ কাজে ভারত আমাদের অনেক সহযোগিতা করে। এক পর্যায়ে প্রথমে ভুটান পরে ভারত আমাদের স্বীকৃতি দেয়। আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের একটি সঠিক পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হয়। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধ আরও তরান্বিত হতে থাকে।
এভাবেই একে একে বিজয় ছিনিয়ে নিতে সক্ষম হই আমরা। এর জন্য অনেক মৃত্যু হয়েছে। তাতে আমরা দুঃখ পাইনি। কারণ এই মৃত্যু ছিল সৃষ্টি, স্বাধীনতা ও মুক্তির জন্য। আরেকদিকে বাংলার মাটি গণহত্যায় কঠিন হয়ে গিয়েছিল। পুরো নয় মাস আমাদের এখানে গণহত্যায় চালায় পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের এ দেশীয় দোসররা । ডিসেম্বরেও বহু মানুষকে হত্যা করা হয়। দেশের অধিকারবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াতে আমরা চেষ্টা করেছিলাম। আমাদের সঙ্গে ছিল বাংলার সাধারণ মানুষ। এটা ছিল গণযুদ্ধ ও জনযুদ্ধের বহিঃপ্রকাশ। চরম বিলাসিতা, উশৃঙ্খলতা, অসংযম, অমিত যৌনাচার, লাম্পট্য পাকিস্তানিদের যুদ্ধের স্পৃহা নষ্ট করে দিয়েছিল। মেধা ও মননকে শানিত করে আমরা মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন দেশটাকে সেবা করে যাচ্ছিলাম। এবং একেকটা যুদ্ধের মাধ্যমে একেকটা ইতিহাস রচনা করেছিলাম। কিশোর থেকে বৃদ্ধ ছিল যুদ্ধ ক্ষেত্রের সৈনিক। গণমানুষের সহযোগিতায় আমরা জয়লাভ করতে পেরেছি।
১৯৭১ সাল ছিল রক্তক্ষরণের বছর। সেইদিনগুলোকে আমাদের স্মরণ করতে হবে। উত্তরাধিকারের মধ্যে এই ইতিহাস ছড়িয়ে দিতে হবে। একাত্তর ছিল সংগ্রামের জীবন। সংগ্রামহীনতা থাকলে আমাদের জাতি ধ্বংস হয়ে যেত। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক সাহিত্য রচনা হচ্ছে। ইতিহাস রচনা হচ্ছে। কিন্তু অনেক বিষয় এখন তুলে আনা সম্ভব হয়নি। আমাদের সঠিকভাবে ইতিহাস তুলে ধরতে হবে।
১৬ই ডিসেম্বর উপ-অধিনায়ক কাজী সাজ্জাদ আলী জহির গোলন্দাজ বাহিনী মুক্তিযোদ্ধা যুদ্ধ রক্ত স্বাধীনতা