ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর উপকূলে বেড়েছে শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ
২১ ডিসেম্বর ২০২০ ১৪:৪৬
ঢাকা: সুপার সাইক্লোন আম্ফান পরবর্তী সময়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহ বেড়েছে বলে দাবি করেছেন বিশিষ্টজনরা। তারা প্রাকতিক দুর্যোগের ঝুঁকি থেকে উপকূলের মানুষকে রক্ষায় উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনসহ সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (২১ ডিসেম্বর) অনলাইন সংলাপে অংশ নিয়ে তারা এই আহ্বান জানান। ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ৭মাস : কেমন আছে উপকূলবাসী’ শীর্ষক সংলাপটি সঞ্চালনা করেন সিনিয়র সাংবাদিক আশীষ কুমার দে।
আলোচনায় অংশ নেন খুলনা-৬ (পাইকগাছা-কয়রা) আসনের সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু, দাতাসংস্থা ‘কে এন এইচ জার্মানি’র ন্যাশনাল কো-অডিনেটর মাটিলদা টিনা বৈদ্য, সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র, উন্নয়ন সংস্থা ফেইথ ইন অ্যাকশনের নৃপেন বৈদ্য এবং ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ কয়রা উপজেলার ভূক্তভোগী জনগণের প্রতিনিধি মোসা. মহাসিনা বেগম।
সংলাপে অংশ নিয়ে সংসদ সদস্য আক্তারুজ্জামান বাবু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী সময়ে সরকারের ত্রাণ কার্যক্রম ও উন্নয়ন পরিকল্পনার তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘ইতোমধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে ভেঙে যাওয়া বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। একইসঙ্গে টেকসই ও স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে দ্রুতই প্রকল্পের কাজ শুরু হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ওই এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে নতুন শিল্প-কারখানা স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সুন্দরবনসহ আশপাশের এলাকায় পর্যটন ব্যবস্থার উন্নয়নে প্রকল্প প্রণয়নের কাজ চলছে। যার মাধ্যমে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে।’ শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক ব্যাধি দূর করতে সরকার কাজ করছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
দাতাসংস্থার প্রতিনিধি মাটিলদা টিনা বৈদ্য বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফান উপকূলের জীবন-জীবিকার ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। এতে বহু মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। উপার্জন কমে যাওয়ায় দুর্গত এলাকার মানুষের মধ্যে পুষ্টিহীনতা বাড়ছে। কাজের সন্ধানে মানুষ এলাকা ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। একই কারণে বাল্যবিবাহ ও শিশুশ্রম বাড়ছে। প্রাকৃতিক জলাধার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকট বেড়েছে।’ এসব সংকট মোকাবিলায় সরকারের সঙ্গে সম্মিলিতভাবে বেসরকারি সংস্থাগুলোও কাজ করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
বিস্তীর্ণ উপকূলের প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষাসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়ে অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়ছে। ফলে ঝুঁকি বাড়ছে এই অঞ্চলের প্রাণ ও প্রকৃতির। নারী ও শিশুরা সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন। তারা সকলের আতঙ্ক নিয়ে বসবাস করছে।’ উপকূলের জনগণের নিরাপদ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান তারা।
আম্ফান আম্ফান পরবর্তী উপকূল দুর্যোগের ঝুঁকি বাল্যবিবাহ শিশুশ্রম