আমাকে সংবর্ধনা নয়, নেত্রীর সিদ্ধান্তকে সংবর্ধিত করুন
২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:০৬
ঢাকা: সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা গত বছরের ২০ ও ২১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত দলের ২১তম জাতীয় কাউন্সিল কর্তৃক ক্ষমতাবলে সম্প্রতি তাকে দলের সদস্য হিসেবে মনোনীত করেন। সারাবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রাজনৈতিক নানা ঘটনার স্মৃতিচারণ করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক এই সভাপতি।
তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। সারাবাংলা’র সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট নৃপেন রায়ের সঙ্গে তার আলাপচারিতা তুলে ধরা হলো:
সারাবাংলা: দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিগত কর্মকর্তা পথচলার পর এই প্রথম আপনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য নির্বাচিত হলেন এ ব্যাপারে আপনার অনুভূতি কী?
সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার এ সিদ্ধান্ত অত্যন্ত বিচক্ষণ এবং দূরদর্শী মেধাসম্পন্ন সিদ্ধান্ত। আমি কী হলাম, তার থেকে বড় হলো সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন, সুযোগ দিয়েছেন এ পর্যায়ে কাজ করার।
গত ২৯টি বছর নেত্রীর পক্ষে যে কাজগুলো করেছি ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে, সাবেক ছাত্রনেতা হিসেবে সেটি ছিল একটি অধ্যায়, একটি পিরিয়ড। আর এখন যে জায়গায় কাজ করতে দিলেন সেটি একটু আপগ্রেড সেটা হল কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদ, যেখান থেকে আওয়ামী লীগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং যার মাধ্যমে জনগণের মতামত রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা পায়।
আমার অনুভূতিটা আমার কাছে মনে হয়, নেত্রীর পরবর্তী যে নির্দেশনা সেটি যেন আমি বাস্তবায়ন করতে পারি বিশ্বস্ততার সঙ্গে যথাযথভাবে, পালন করতে পারি সে জন্য মানসিকভাবে তৈরি হচ্ছি।
সারাবাংলা: ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃত্বের পথচলা থেকে শুরু করে আজকে দলীয় ফোরামের সর্বোচ্চ ফোরামের একটি পদ অলঙ্কৃত করেছেন, আসীন হয়েছেন? এ পর্যায়ে আসার পেছনে অতীতে কোনো ঘটনা বা কোনো প্রেরণা অনুঘটক হিসেবে কাজ করেছিল বলে মনে করেন?
সৈয়দ আবুদল আউয়াল শামীম: আমি অষ্টম শ্রেণীতে যখন পড়তাম, সেন্ট গ্রেটিস গ্রামার স্কুলে। এটি স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে ইংলিশ মিডিয়াম ছিল। মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভের পরে এটি বাংলা মিডিয়ামে রূপান্তরিত হয়। কিন্তু ইংলিশ মিডিয়ামের সমস্ত বই আমাদের পড়তে হতো। তখন ক্লাস এইটে থাকতে মালিবাগে তৎকালীন ৫৫ নং ওয়ার্ড (বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তরের এখন ৩৬ ওয়ার্ডে) সেই ওয়ার্ডের একজন ছাত্রলীগের কর্মী হই এবং স্কুলপর্যায় থেকে ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত হই। পরবর্তীতে যখন ঢাকা কলেজে অধ্যয়ন করার সুযোগ পাই, সেই সময় এক পর্যায়ে আমার বড় ভাই সৈয়দ শায়নুজ্জামান উনি শহীদ শেখ কামাল ভাইয়ের একজন অনুসারী ছিলেন, ভক্ত ছিলেন ওনি নাটক এবং কালচারাল টিমের একটি কর্মী ছিলেন। শেখ কামাল ভাইয়ের কথা উনি আমাকে গল্প করতেন, মূলত উনিই সৈয়দ (শায়নুজ্জামান) আমাকে উদ্দীপ্ত করেছিলেন।
ঢাকা কলেজে এসে ইন্টারমেডিয়েট যখন পড়ি ১ম বর্ষে তখন আমি ছাত্রলীগের সদস্য হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হই। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ ঢাকা কলেজ শাখার ইতিহাসের রীতি তথা ট্রেডিশন ভঙ্গ করে জনপ্রিয়তার শীর্ষে ওঠে এবং সেই সভা হাউজে অপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হিসেবে সভাপতি নির্বাচিত হই। আমার সঙ্গে তখন চার জন সেক্রেটারি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে ওই প্যানেলে। সেই চারজনের মধ্যে তিনজনেই পরবর্তীতে বাদ যায়। তিন মাস পরে প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একজনকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়।
সারাবাংলা: রাজনৈতিক জীবনে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সান্নিধ্য রাজনৈতিক জীবনে প্রথম কখন ঘটে?
সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম: আমি ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের যখন সহ-সভাপতি তখন সভাপতি ছিলেন সাইদুল ইসলাম খান পল। উনি সভার সভাপতিত্ব করছিলেন, একপর্যায়ে উনি কিছু কথাবার্তা বলার জন্য হাউজের (কর্মিসভা) বাইরে যান। আমাকে বলল, শামীম তুমি সভায় সভাপতিত্ব কর। আমি সভাপতিত্ব করছিলাম, এমন সময় সম্ভবত মনোবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষিকা আমাকে খবর পাঠালেন পিয়নের মাধ্যমে, আমাকে ঢাকা কলেজের দোতলায় ডাকছেন। আমি তখন আমার সভাপতিত্ব আফজালুর রহমান বাবু ওকে বললাম বন্ধু তুমি সভাপতিত্ব কর, আমার একটু কাজ আছে। ওকে দিয়ে আমি তখন সেই শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করলাম, সেই শিক্ষিকা আমাকে বলল যে, ক্যান্টিনের পাশে ওই গেটে (তখন ক্যান্টিন ছিল উত্তর পাশে) ওখানে একটা গাড়ি আছে আমার আমি একটু পরেই যাব, তুমি গাড়িতে করে আমার সঙ্গে যাব, তোমার আপা (শেখ হাসিনা) তোমাকে ডাকছে। এরপর আমি মহাখালীতে তদানীন্তন বিরোধীদলীয় নেতা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার স্বামী ওয়াজেদ সাহেবের দুলাভাইয়ের যে বাসভবন (সরকারি বাসভবন) সেখানে যাই। যাওয়ার পরে আমি নিচতলায় বসে থাকি।
একপর্যায়ে দেখলাম ওবায়দুল কাদের সাহেব ঢুকলেন, আমি সালাম দিলাম। নেত্রীর সঙ্গে কথা বলে উনি বেরিয়ে আসলেন, আমার প্রশংসা করলেন। এরপরে নেত্রী আসলেন, আমি যথারীতি সালাম দিলাম এবং নেত্রী আমাকে দেখে দোয়া করলেন, কথা বললেন, পরামর্শ দিলেন এবং আশাবাদ ব্যক্ত করলেন আমি ঢাকা কলেজের সভাপতি হব, ভিপি হব। ভিপি হয়ে বঙ্গবন্ধু জাতির পিতার ছবি ঢাকা কলেজের ক্যান্টিনে উঠাব। তৎকালীন সময়ে আমি ঢাকা কলেজে জনপ্রিয় ছাত্রনেতা। কারণ অনেক শিক্ষিকা ওনার (শেখ হাসিনা) বান্ধবী ছিলেন। অনেক শিক্ষক ওনার বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্ধু ছিলেন। ১১০জন টিচার ছিল তখন তার মধ্যে ৯০ জন ছিল মহিলা ঢাকা কলেজে। সেই মাতৃতুল্য মহিলা শিক্ষিকারা অনেকে ছিলেন নেত্রীর বান্ধবী। তাদের মধ্যেই উনি জানতে পারতেন ছাত্রলীগের কোন ছেলেটা ভালো। আর ওখান থেকেই নেত্রী আমাকে কালেক্ট করেছিলেন, এটি আমার ধারণা।
সেদিন দীর্ঘক্ষণ আমাকে বসালেন। গল্প করলেন। এটা একটি অনুপ্রেরণা। আমাকে একপ্রকার বুঝিয়ে দিলেন যে, আগামী দিনে আমি কীভাবে পথ চললে নেত্রীর স্বপ্ন আওয়ামী লীগের স্বপ্ন ছাত্রলীগের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করতে পারব ঢাকা কলেজে। তখন বিএনপির অনেক দাপট, সন্ত্রাস চলছে। খালেদা জিয়ার নিরু-বাবলু সন্ত্রাসীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিদিনেই গুলির আওয়াজ, মাঝে মাঝে লাশ। এই রাজনীতির মধ্যে একটি সুস্থ রাজনৈতিক ধারা কীভাবে করা যায় এই বিষয়ে নেত্রী আলোকপাত করতেন, ছাত্রবান্ধব ছাত্ররাজনীতির কথা উনি আমাকে বলেছিলেন। যারা ছাত্র, যারা ক্যাম্পাসে যাবে তারা লেখাপড়া করবে। তারাই ছাত্ররাজনীতি করবে, এই কথাই আমাকে এরপরও তিনি বহুবার বলেছেন। ইনফ্যাক্ট আমিও এগারটার ক্লাসটা করতে পারতাম না কারণ মিছিল থাকত। তার আগে প্রথম ক্লাশটা করতাম। টিফিনের পরে ক্লাস করতাম, পৌনে ৪টার একটা ক্লাস ছিল। আমাদের সাড়ে চারটায় শেষ হতো, সেটিও আমি করতাম এবং একটি সময়ে আমি লাইব্রেরিতে যেতাম পড়াশোনা করতাম, আরেকটি সময় আমি কমন রুমে যেতাম, যারা পত্রিকা পড়ত, ক্যারাম বোর্ড খেলত, মেধাবী ছাত্রদের সঙ্গে সময় কাটাতাম। তখন ঢাকা কলেজে ৫টি হোস্টেল ছিল এক এক হোস্টেলে হঠাৎ ঢুকে যেতাম সবার সঙ্গে কথা বলতাম, কখনো কখনো কোনো হোস্টেলে রাত কাটাতাম। শুধু ছাত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য খোঁজখবর নিতে। আমি ছাত্রলীগ করার জন্য তাদের উদ্বুদ্ধ করতাম না। কিন্তু আমার আচরণের মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার মেসেজ, বঙ্গবন্ধুর মেসেজটি পৌঁছে দিতাম। তোমরা যদি আমার সঙ্গে সম্পর্ক কর, তাহলে নিশ্চয়ই ছাত্রলীগ করবা আর ছাত্রলীগ করলে তোমাদের আমি পদ-পদবি টাকা পয়সা সহায় সম্পত্তি দিতে পারব না। কিন্তু এ দেশের সত্যিকারের রাজনীতির ইতিহাস মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস একমাত্র দল। একমাত্র ধারক নির্ধারক হল আওয়ামী লীগ, এই আওয়ামী লীগ সম্পর্কে তোমরা জানতে পারবা।
সেই কঠিন সময়ে ছাত্ররাজনীতি করেছি কখনো প্রকাশ্যে কখনো লুকিয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি শেখ হাসিনার সঙ্গে। মূলত শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে এই দেশে আসার পরে যে একটা রেঁনেসা বা অর্ন্তনিহিত বিপ্লব যুব সমাজ, ছাত্র সমাজের মধ্যে ঘটে গিয়েছিল সেটি বুঝতে পেরেছিলাম। প্রতিদিনেই কিছু কিছু কর্মী কালেকশন করতাম। বিভিন্ন পরিবারের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ, কৃষকের ছেলে থেকে কোটিপতির ছেলে ঢাকা কলেজে পড়ে। আমি তাদের মধ্যে ঢুকে গিয়েছিলাম।
‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে একটা মানুষ রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক হতে হয়। কারণ একজন মানুষ যদি সামাজিক দায়দায়িত্ব, তার পারিবারিক দায় দায়িত্ব থাকে, সেখানে যদি সফল না হয় সে রাজনীতিতেও সফল হবে না। সুতরাং একজন ব্যক্তিকে যদি রাজনীতিতে সফল হইতে হয়, অবশ্যই তাকে সিভিক সেন্স থাকতে হবে। তার সামাজিক জ্ঞান থাকতে হবে। সমাজবিজ্ঞান সম্পর্কে জানতে হবে। মানুষের মনের কথার সঙ্গে নেতার কথার মিল থাকতে হবে। না হলে সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে না। এ কারণে রাজনীতির মেইন জিনিস মনে করি, সংকল্পতা, দুরদৃষ্টিসম্পন্ন আরেকটি হলো মূলধারা ট্রাডিশন অর্থ্যাৎ আমার যে ইতিহাস, পৈত্রিক পরিচয়, আমার যে স্বাধীনতার ইতিহাস; এটি থেকে আমরা যত সরে গেছিলাম, ততই আমাদের ক্ষতি হয়েছিল। যদি আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না আসত এই দেশে রাজাকাররা তো মন্ত্রী ছিল, বাংলাদেশের পতাকা বাংলাদেশে উড়ত কিনা আমার সন্দেহ আছে। জাতীয় সংগীত বাজত কি না আমার সন্দেহ আছে? কারণ আমরা দেখেছি, ১৫ আগস্টের তবারকটা পর্যন্ত প্রস্তুত করতে দেয়নি। লাথি মেরে ফেলে দিয়েছে। ১৫ আগস্টের আগের রাতে মাইক টাঙাতে দেয়নি। কালো পতাকা লাগাতে দেয়নি বিএনপি সরকার।
আমি ধারাবাহিকভাবে আমার নেত্রীর সঙ্গে ২৯ বছর , নেত্রীর সঙ্গে তার আগে আরও ১০/১২ বছর যদি ধরেন তাহলে বিরতিহীনভাবে ৪০ বছরের একটা অবজারভেশন আমার জীবনে রয়েছে। আমি আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর পাশে থেকে আওয়ামী লীগের একজন নিউক্লিয়াসের আশেপাশে থাকতে পেরেছি, এটিই আমার এটা একটা অর্জনই বলতে পারেন। আমি গর্ব করি না, অহংকারও করি না, কিন্তু আমি সংকীর্ণতায় ভুগি না যে কম দেখছি বা কম জানি। আমার কাছে মনে হয়, আমি এই জায়গায়টায় অনেক পরিপূর্ণ। তৃপ্ত না হলেও মোটামুটি টাচে ছিলাম। অনেক রাজনৈতিক ঘটনার সাক্ষী। অনেক রাজনৈতিক ঘটনার সময় নেত্রীর কাছে ছিলাম, দলের দুর্দিনে ছিলাম।
সারাবাংলা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার একজন ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কীভাবে সম্পৃক্ত হলেন?
সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম: আমার বিদেশে পড়াশোনা করার ইচ্ছা ছিল। তখন একদিন নেত্রী আমাকে বললো যে, আমার তোমার মতো একটি ছেলে দরকার। তুমি আমাকে সহযোগিতা কর। আমার কাজ করতে আপত্তি? নেত্রী বলার পর থেকে সেদিন ১৭ডিসেম্বর ১৯৯২ সাল থেকে তার কাজে যোগদান করি এবং ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে নিয়োগ পাই। এভাবে ২৯ বছর কাটিয়েছি। এর মাঝখানে আমি স্বেচ্ছাসেবক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, এর মাঝখানে আওয়ামী লীগের প্রচার সাব কমিটির তিনবারের সদস্য, এর মাঝখানে ইন্টারন্যাশনাল সাব কমিটির দুইবারের সদস্যও ছিলাম।
সারাবাংলা: আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এ মূল্যায়ন, এটিকে কী বার্তা বলে মনে করেন আপনি?
সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম: আমাকে পদায়ন করে সদস্য মনোনীত করায় মাননীয় নেত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। যারা আমাকে ফুল দিয়ে সিক্ত করছেন, ভালবাসা দিয়ে সংবর্ধিত করলেন, সংবর্ধনা দিলেন, বার্তা দিলেন, তাদের সবার চোখে মুখে একটি কথাই আমি দেখেছি একটি কথা পড়তে পেরেছি; আমি শামীম নয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আমার বেলায় যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছেন ওই সিদ্ধান্তটি লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীর প্রত্যাশা প্রাপ্তির জায়গায় আশাবাদ সৃষ্টি করেছে। তাদের পুনরুজ্জীবিত করেছে, আবারও যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত করেছে। আজকে যেখানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যে আঘাত করার অপশক্তিরা অপচেষ্টা চালাচ্ছে, সেই সময় এই ধরনের একটি বার্তা যুবসমাজের কাছে প্রয়োজন ছিল। তাদের চেতনা পুনরুদ্ধারে দরকার ছিল। অনেকে নিরাশার ভুগতেছিলেন, তাদের জন্য আশায় বুধ বাঁধার একটা জায়গা তৈরি হয়েছে বলে মনে করি।
আমাকে যারা ফুল দিয়ে সংবর্ধিত করতে এসেছেন, তাদের একটি কথাই বলেছি, সংবর্ধনা আমাকে নয় নেত্রীকে দিন। নেত্রীর এই সিদ্ধান্তকে সংবর্ধিত করুন, সম্মান জানান আপনারা। আজকে আপনারা এসেছেন নেত্রীর ওই সিদ্ধান্তের কারণে। সেলিব্রেট আমাকে নয়, নেত্রীকে করবেন। নেত্রীকে কৃতজ্ঞতা জানান, নেত্রীর সিদ্ধান্তের সঙ্গে আজকে আপনাদের মনের কথা মিলে গেছে। যার কারণে আপনারা বেরিয়ে এসেছেন। কেউ ২০ বছর পর, কেউ ৩০ বছর পরে বিভিন্ন জায়গা থেকে। আমাকে যারা সেলিব্রেট করছেন, তাদের সবারই একটি কথা, আপনার মতো ত্যাগী হওয়াতে আমরা অত্যন্ত খুশি আশাবাদী। অনেকে আবার এই কথাও বলার চেষ্টা করেছেন, আপনার আগেই হওয়ার কথা ছিল। সেটি অন্য প্রশ্ন, আমি তাদের বলেছি, আগে যেটা করেনি, নেত্রী পারেনি বা করেনি, সেখানেও আমি শামীম আপার কাছেই ছিলাম। আপাI আমার কাছে ছিল। আমি আপার কাছেই ছিলাম। আমি দূরে ছিলাম না। এখন যেখানে আছি সেখানেই আমি ছিলাম। ওখানে একটা পদে ছিলাম, এখানে আরকেটা পদে আছি। ওটা একটা ডিপার্টমেন্ট, এটা আপ-ডিপার্টমেন্ট। ওখানেও কাজ, এখানেও কাজ। ওখানে কাজ, এখানে আরামআয়েশ তা কিন্তু না। এখানে ভাবসাব, পোশাক-আশাক বা পোশাকী রাজনীতি না, এখানেও করণীয় কাজ আছে। নেত্রী এক জায়গায় কাজ করিয়েছেন, এখন আরেক জায়গায় কাজের জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, দোয়া করবেন যেন নেত্রীর অর্পিত দায়িত্ব পালন করতে পারি।
সারাবাংলা: আপনাকে ধন্যবাদ
সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম: সারাবাংলা’কেও ধন্যবাদ।