Saturday 28 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সেনাবাহিনীকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করে গড়ে তোলার আহ্বান


২৪ ডিসেম্বর ২০২০ ১৩:৪১

ঢাকা: বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেন সর্বক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হিসাবে গড়ে উঠে, সারাবিশ্বের যেখানেই যাবে সেখানে যেন দেশের সম্মান অক্ষুণ রাখে সেই প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ‘দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি রাষ্ট্রপতির কুচকাওয়াজ-২০২০ অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম ভাটিয়ারী বিএমএ প্রান্তে সেনাপ্রধানসহ প্রশিক্ষক ও প্রশিক্ষণার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে মিলিটারি একাডেমির গড়ে তোলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের হাত থেকে যেন বাংলাদেশের জনগণ এবং সারাবিশ্বসহ সকল প্রবাসীরা মুক্তি পায় সেই কামনাও করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমাদের সেনাবাহিনী প্রতিটি ক্ষেত্রে সকলে তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে এবং দেশে-বিদেশে সুনাম অর্জন করছেন। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের সেনাবাহিনী যথেষ্ট অবদান রেখে যাচ্ছে এবং যার ফলে পৃথিবীর অনেক দেশে শান্তি রক্ষায় অনেক অবদান আমাদের দেশের সেনাবাহিনীর অফিসাররা রেখে যাচ্ছেন।’

এছাড়া প্রতিটি দেশই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর প্রশংসা করে, যখন এই প্রশংসা শুনি তখন সত্যি গর্বে আমার বুক ভরে যায় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সময়টা সারাবিশ্বের জন্য অত্যন্ত ক্রান্তিকাল। বিশেষ করে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) যার ফলে বিশ্বব্যাপী প্রভাব পড়ছে, অর্থনীতি স্থবির হয়ে যাচ্ছে। জীবনযাত্রা সীমিত হয়ে যাচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মানুষের জীবনে দুর্ভোগ আসছে।’

বিজ্ঞাপন

করোনা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মানুষকে সচেতনতা করা, মানুষের পাশে দাঁড়ানো তাদের সাহায্য করায় তারা বিরাট অবদান রেখে যাচ্ছেন সেকথাও স্মরণ করেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘মানুষের জন্যই সবকিছু করা। আমাদের সেনাবাহিনী তো জনগণের সেনাবাহিনী, জনগণের পাশেই দাঁড়াবে। এই জন্য যেকোন দুর্যোগ মোকাবিলায় বা যেকোনো সমস্যায় দেখেছি আমাদের সেনাবাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের সাহায্য সহযোগিতা করে যাচ্ছে।’

প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিকে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্প অত্যাধুনিক একাডেমিতে পরিণত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। জাতির পিতার যে স্বপ্ন ছিল মিলিটারি একাডেমি নিয়ে যে কথাটি তিনি বলেছিলেন। তিনি বলেছিলেন বিশ্বের মানুষ একদিন এই মিলিটারি একাডেমিতে দেখতে আসবে। আজকে সত্যি আমাদের মিলিটারি একাডেমিকে সারাবিশ্বের মানুষ দেখতে আসে এবং তারা এটার প্রশংসাও করেন।’

উন্নত প্রশিক্ষণ এবং সুযোগ্য নেতৃত্ব তৈরিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব যে মিলিটারি একাডেমির স্বপ্ন দেখেছিলেন তারই বাস্তবায়িত রূপ আজকের এই একাডেমির। এখানে ইতোমধ্যে প্রশিক্ষণের সকল প্রকার আধুনিক সুযোগ সুবিধা ও কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করে দিয়েছি বলেও অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রী।

‘তিন বছর মেয়াদী প্রশিক্ষণের পাশাপাশি চার বছর মেয়াদী অনার্স কোর্স চালু নিঃসন্দেহে সামরিক ও বৈশ্বিক জ্ঞানের মিশ্রণে সামরিক পেশাগত উৎকর্ষতার শিখরে পৌছাতে সহায়ক হবে। কারণ খুব অল্প বয়সে ঢোকার ফলে উচ্চ শিক্ষার সুযোগটা হয় না। সেই সুযোগটাও করে দিয়েছি। যেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের সেনা সদস্যরা যেন তাল মিলিয়ে চলতে পারে, সেই দিকে লক্ষ্য রেখেই পদক্ষেপ নিয়েছি।’

নবীন অফিসারদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আজকের দিনটি তোমাদের জন্য খুব আনন্দের এবং গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘ প্রশিক্ষণের পর কাঙ্খিত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে তোমরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একজন গর্বিত সদস্য হিসাবে যোগদান করতে যাচ্ছ। সুতরাং এই দায়িত্ব পালনকালে তোমাদের সব সময় একথাটা মনে রাখতে হবে যে, দেশকে ভালবাসতে হবে, দেশের জন্য কর্তব্য পালন করতে হবে। কারণ তোমরা যে শপথ গ্রহণ করেছ এই শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে তোমাদের এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য বিরাট দায়িত্ব কাঁধে পড়ল। সে কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে।’ এছাড়া সেনাবাহিনীর সদস্যদের প্রতি জাতির পিতার একটি বক্তব্যের কয়েকটি লাইন তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জীবনে সব থেকে বড় কথা সততা নিষ্ঠা একাগ্রতা এবং দেশ মাতৃকাকে ভালোবাসা। জাতির পিতার এই নির্দেশনা এই উপদেশটা চলার পথে সব সময় মনে রাখবা।‘

‘একটা কথা মনে রাখতে হবে। তোমরা এদেশের সন্তান। এদেশের গ্রামে গঞ্জে শহরে তোমাদের মা-বাবা সবাই ছড়িয়ে আছেন। দেশের উন্নতি হলে সকলেরই উন্নতি হবে। দেশ শান্তিতে থাকলে সবাই শান্তিতে থাকবে। সেই কথাটা সব সময় মনে রেখে এদেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য যথাযথভাবে অবদান রেখে যাবে এটাই আমরা চাই। তোমরা নেতৃত্বে আরও সফল হও দক্ষ হও সুশিক্ষিত হও এবং দেশ জাতি তোমাদের জন্য গর্ব বোধ করবে, সেটাই আমি চাই।‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যুদ্ধ করে বিজয় অর্জনকারী একটা দেশ, এ কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে। আমরা বিজয়ী জাতি। জাতির পিতার নেতৃত্বে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই সেকথাটা মনে রেখেই সবসময় যেন আমরা মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলতে পারি, সেভাবেই নিজেকে তৈরি করতে হবে এবং দেশের মান মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে।‘

সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণের জন্য যা যা প্রয়োজন আমরা সেটা করে যাচ্ছি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই আমাদের এই তরুণ যারা বাংলাদেশকে যে এগিয়ে নিয়ে যাব জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ গড়বো। সে লক্ষ্য নিয়ে আমরা যে সার্বিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি।’

‘২০৪১ সালে বাংলাদেশ হবে বিশ্বে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। আর সেই সময় সেই দেশ পরিচালনায় তোমরাই কিন্তু উঁচু মানের অফিসার হিসাবে দায়িত্ব পালন করবে। তোমরা যারা আজকে নবীন, তাদের ওপরেই দায়িত্ব আসবে দেশ পরিচালনার। কাজেই ২০৪১ সালের দেশ গড়ার সৈনিক হিসাবে তোমরাই দায়িত্ব পালন করবে তোমরাই কাজ করবে। সেকথাটা মাথায় রেখেই নিজেদের ওপর অর্পিত দায়িত্ব তোমরা পালন করবে।’

বদ্বীপ পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা সরকার বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই ভূখণ্ড সারাবিশ্বে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসাবে গড়ে উঠবে। যেটা জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল সেটাই আমরা পূরণ করবো। সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছি।’

‘দেশে-বিদেশে আমাদের সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাই সর্বক্ষেত্রে তারা দক্ষ থাকবে, উপযুক্ত হবে। আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন হবে। যেন সারাবিশ্বের যেখানেই যাবে সেখানে যেন দেশের সম্মান অক্ষুণ্ন রাখে সেদিকে সর্বদা সজাগ থাকতে হবে’-বলে পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী।

টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী সেনাবাহিনী

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

চট্টগ্রামে খালে ভাসছিল অর্ধগলিত লাশ
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৪:৩৩

বিএসইসি‘র চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৫১

বাড়তে পারে তাপমাত্রা
২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৩:৩৪

সম্পর্কিত খবর