ঢাকা: বিজয় দিবসে রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় পতাকা বিকৃত ও অবমাননা করে প্রদর্শনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৩ শিক্ষক-কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন রংপুর মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আসিফ হোসেন। বিচারক ফজলে এলাহি খানের আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবু সাঈদ সুমন সারাবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রভোস্ট (চলতি দায়িত্ব) তাবিউর রহমান প্রধান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পিএস ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার (একাডেমিক) আমিনুর রহমান, ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রভাষক সোহাগ আলী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ রহমতউল্লাহ, বাংলা বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. পরিমল চন্দ্র বর্মণ, ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শামীম হোসাইন, রসায়ন বিভাগের প্রভাষক শারাফাত কাইয়ুম, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক রাম প্রসাদ বর্মণ, মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর মাহামুদুল হাসান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক এম এম হাফিজুর রহমান, উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও বিজয় দিবস উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব শামসুল হক এবং পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার ও প্রো-ভিসির পিএস এম এম ইকবালকে আসামি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
- বেরোবিতে জাতীয় পতাকা বিকৃত করে বিজয় ‘উদযাপনে’ শিক্ষকরা
- পতাকা বিকৃতি: বেরোবি ভিসিসহ ৯ শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ
- বেরোবিতে পতাকা অবমাননায় তদন্ত কমিটি, অভিযুক্তদের গ্রেফতার দাবি
- জাতীয় পতাকা অবমাননা: বেরোবি ভিসিসহ শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ
- বেরোবিতে জাতীয় পতাকা বিকৃতি: দুঃখ প্রকাশ করলেন অভিযুক্ত শিক্ষকরা
গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক প্রাঙ্গণে বর্তমান প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদের একাংশের জাতীয় পতাকা অবমাননা ও বিকৃতি করা ছবি এবং মাটিতে পদদলিত পতাকার ছবি ভাইরাল হলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে।
পরদিন সংবিধান লঙ্ঘন ও রাষ্ট্রদোহিতার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মাহামুদুল হক ও গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান এবং সাবেক ছাত্রলীগ নেতা আরিফুল ইসলাম উপাচার্যকে প্রধান আসামি করে নয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে তাজহাট থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনা তদন্ত করে ভিসিসহ নয় শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। দেশব্যাপী এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি উঠলে ঘটনার দিন থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চুপ ছিল। পরে জেলা প্রশাসন থেকে ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি পতাকা অবমাননার সত্যতা পায়।