গণতন্ত্র আজ কাগুজে শব্দ: রব
৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ১০:১৯
ঢাকা: জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে আজ ৫০ বছরেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গণতন্ত্র আজ একটা কাগুজে শব্দে পরিণত হয়েছে। এর কোন বাস্তব রূপ নেই। মানুষের মৌলিক অধিকারগুলো ধ্বংস হতে হতে আজ নিশ্চিহ্ন প্রায়। ফলে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে দুর্বৃত্তপনা জেঁকে বসেছে। দুর্নীতি ও চরম অবক্ষয় সমাজের দেহে ছড়িয়ে পড়েছে।
মঙ্গলবার (২৯ ডিসেম্বর) জেএসডির স্থায়ী কমিটির সভায় তিনি এসব কথা বলেন। স্থায়ী কমিটির সভা আ স ম রবের সভাপতিত্বে তার বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বক্তব্য দেন জেএসডি স্থায়ী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট ছানোয়ার হোসেন তালুকদার, সা কা ম আনিসুর রহমান খাঁন, মো. সিরাজ মিয়া, তানিয়া রব, শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, অ্যাডভোকেট মাহমুদুর রহমান প্রমুখ।
আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘নিরবচ্ছিন্ন আন্দোলন, সংগ্রাম ও নয় মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ এবং অগণিত শহীদের রক্তের বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় হয়। যে লক্ষ্য ও আর্দশ নিয়ে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে সে লক্ষ্য এখনো পূরণ হয়নি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে এর সুফল এবং রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
সভার রাজনৈতিক প্রস্তাবে বলা হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী সমাগত। একটি রাষ্ট্রের জীবনে ৫০ বছর নেহাত কম নয়। ধীরগতিতে হলেও আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, অর্থনীতির আকার অনেক বড় হয়েছে, মা-শিশু মৃত্যুহার কমেছে ,গড় আয়ু বেড়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে উপনিবেশিক শাসন কাঠামো অব্যাহত থাকায় সবক্ষেত্রে কাঙিক্ষত উন্নয়ন সম্ভব হয়নি। পৃথিবীর অনেক দেশ এর চেয়ে কম সময়ের মধ্যেই উন্নয়ন এবং নৈতিকতায় অনেক উচ্চমাত্রায় পৌঁছে গিয়েছে। গুম খুন আজ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্ষণের ভয়াবহতা দিন দিন বাড়ছে, ক্ষমতার আড়ালে এর বীভৎস চেহারা প্রতিনিয়ত ফুটে উঠছে। বিচারব্যবস্থার অবস্থাও তথৈবচ। রাষ্ট্রীয় যন্ত্র দ্বারা বিচার বহির্ভূত হত্যা স্বাধীনতার পর থেকে শুরু হলেও এখন এটা মহামারির আকার ধারণ করেছে। নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান আজ ধ্বংসের মুখে। হাজার হাজার কোটি টাকা ক্ষমতাসীনদের ছত্রছায়ায় বিদেশে পাচার হয়ে গেছে। যা দিয়ে আরও কয়েকটা পদ্মাসেতু করা সম্ভব হতো।
সভায় বলা হয়, কয়েকটি স্থাপনা দিয়ে স্বাধীনতার সুফলকে পুঁজি করা যায় না। এর পেছনের সীমাহীন দুর্নীতির চিত্র বারবার ভেসে ওঠে। যা যৎসামান্য অর্জনকেও ম্লান করে দেয়। এই অগণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার ছাড়া স্বাধীনতা অর্থহীন। রাষ্ট্রীয় রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে তৃতীয় জাগরণের পর্যায়ে অংশীদারিত্বমূলক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।