জামিনে জালিয়াতি, হাইকোর্টের আদেশে ৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
৩০ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:০৬
জয়পুরহাট: মামলার প্রকৃত তথ্য গোপন করে জাবেদা নকলে তিন’শটি ইয়াবা বড়িকে ত্রিশ বড়ি দেখিয়ে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন এক ইয়াবা কারবারি। এ ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশে জাল-জালিয়াতির অভিযোগে জয়পুরহাট আদালতের এক কর্মচারীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে।
একই মামলার অপর আসামি হাইকোর্টে জামিন নিতে গেলে জালিয়াতির ঘটনাটি প্রকাশ পায়। হাইকোর্টের নির্দেশে জালিয়াতির এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিরা হলেন জয়পুরহাট চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অন্যত্র বদলি হওয়া পেশকার বগুড়ার শাজাহানপুর থানার ডমনপুকুর গ্রামের মোজাহেদুল ইসলাম (৪০),আইনজীবীর সহকারী জয়পুরহাট সদরের পশ্চিম পারুলিয়া গ্রামের আমিনুল ইসলাম (৩৫) ও জালিয়াতি করে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেওয়া আসামি পাঁচবিবির বালিঘাটা বাজারের মোহাজের কলোনির আয়নাল হোসেন ওরফে রানা (৩০)।
মামলা ও আদালত সুত্রে জানা যায়, জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার বালিঘাটা বাজারের মোহাজের কলোনিতে গত ২০১৮ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিন’শটি ইয়াবা সহ আয়নাল হোসেন ওরফে রানা (৩০) কে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় তার বড় ভাই হযরত আলী (৪২) পালিয়ে যান। এ ঘটনায় পাঁচবিবি থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) দেলোয়ার হোসেন ওই রাতে বাদী হয়ে পাঁচবিবি থানায় মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ওই দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যার পাঁচবিবি থানার মামলা নম্বর ৬৫।
এ মামলায় হাজতে থাকা আসামি আয়নাল হোসেন একাধিকবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিনের আবেদন করলেও আদালত জামিন নামঞ্জুর করেন। জামিন না মঞ্জুর হওয়ায় তারা হাইকোর্টে জামিনের জন্য সংশ্লিষ্ট আদালত থেকে আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় কাগজসহ জাবেদা নকলের আবেদন করেন।
মামলার এজাহার ও জব্দ তালিকায় তিন’শটি ইয়াবা বড়ি উল্লেখ থাকলেও জাবেদা নকলে ত্রিশটি ইয়াবা বড়ি জব্দ করার উল্লেখ করে হাইকোর্টে কাগজপত্র দাখিল করে জামিনের প্রার্থনা করেন। যার প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের মিসকেস নম্বর ৫৭৫২৯/২০১৮ মূলে ২০১৮ সালের ২০ ডিসেম্বর তারিখে হাইকোর্ট আসামী আয়নাল হোসেনের অন্তরবর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে হাইকোর্টের আদেশে আসামি নিম্ন আদালতে জানিমনামা দাখিল করে আইনজীবীর মাধ্যমে কারাগার থেকে মুক্তি পান।
এ মামলার অপর আসামি হযরত আলী পরবর্তীতে নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুরের আদেশ ও জব্দ তালিকাসহ মামলার প্রকৃত কাগজপত্রের জাবেদা নকল সংশ্লিষ্ট আদালত হতে সংগ্রহ করে হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেন। হাইকোর্ট ৩০০টি ইয়াবা বড়ির অভিযোগ থাকায় আসামি হযরত আলীর জামিন নামঞ্জুর করেন। পরবর্তীতে জালিয়াতির বিষয়টি অবগত হয়ে হাইকোর্ট ঘটনার সঙ্গে জড়িত আসামিসহ ওই তিনজনের বিরুদ্ধে ১৫ দিনের মধ্যে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দেন।
হাইকোর্টের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে জয়পুরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির মো. শামশুল হুদা বাদী হয়ে মঙ্গলবার জয়পুরহাট সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।