টঙ্গী ডাকঘরে লেনদেনে অনিয়মের অভিযোগ
৩ জানুয়ারি ২০২১ ১২:৪৬
টঙ্গী: টঙ্গী উপ ডাকঘরে স্কিমের লভ্যাংশ পরিশোধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, কোনো গ্রাহক হিসাব না বুঝলে, সেই সুযোগে স্কিমের লভ্যাংশ কম দেওয়া হয়। এছাড়াও টাকা তুলতেও ভোগান্তির শিকার হতে হয় তাদের।
জানা গেছে, টঙ্গী উপ ডাকঘরে গ্রাহকদের লভ্যাংশ পরিশোধের দায়িত্ব পালন করেন সাইদুল ইসলাম নামে একজন অফিস সহকারী। তিনি অর্থের বিনিময়ে বিশেষ সুবিধা ও সিরিয়াল ভঙ্গ করে গ্রাহকদের লভ্যাংশ পরিশোধ করে থাকেন। এতে বেশিরভাগ গ্রাহককে ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
অভিযোগের সত্যতা খুঁজতে সম্প্রতি সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পিয়ন সাইদুল ইসলাম গ্রাহকদের লভ্যাংশ পরিশোধ করছেন। এক গ্রাহক টাকা উত্তোলন করতে যাওয়ার পরপরই তার লভ্যাংশের হিসাব নিয়ে শুরু হয় টালবাহানা।
সাইদুল ইসলামের হিসাব মতে, ওই গ্রাহকের লভ্যাংশের টাকা পাঁচ হাজারের মতো। কিন্তু গ্রাহকের দাবি, তিনি পাবেন ১৫ হাজার ৭৩২ টাকা। পরে ওই গ্রাহক হিসাব বুঝে নিতে চাইলে সাইদুল অপেক্ষা করতে বলেন। কিছুক্ষণ পর ওই গ্রাহক পুনরায় হিসাব জানতে চাইলে তার ওপর চড়াও হন সাইদুল ইসলাম। উগ্র আচরণ করেন গ্রাহকের সঙ্গে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী গ্রাহক ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার মো. ফাইজুদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পোস্ট মাস্টার লভ্যাংশের হিসাব করে ওই গ্রাহককে পুরো টাকা পরিশোধ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সাইদুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টঙ্গী উপ ডাকঘরের পোস্ট মাস্টার ফাইজুদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি সাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানাব। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
এ বিষয়ে গাজীপুর উপ-বিভাগীয় পোস্ট অফিস পরিদর্শক সোহেল মুসা সরাবাংলাকে বলেন, ‘গ্রাহকদের এসব সমস্যার কথা শুনেছি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। যদি লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা করা হবে।’
বর্তমানে ডাক বিভাগে পাঁচটি স্কিম চালু আছে। এগুলো হলো— পরিবার সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর সঞ্চয়পত্র, পেনশনার সঞ্চয়পত্র, বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র ও ডাকঘর মেয়াদি হিসাব।
এরমধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্রে পাঁচ বছরের জন্য ২ লাখ টাকা জমা রাখলে গ্রাহককে প্রতি মাসে ৯১২ টাকা লভ্যাংশ দেওয়া হয়। তিন মাস অন্তর সঞ্চয়পত্রে তিন বছরের জন্য গ্রাহক পাবেন তিন মাস পরপর ২ হাজার ৬২২ টাকা, পেনশনার সঞ্চয়পত্রে পাঁচ বছরের জন্য তিন মাস পরপর ২ হাজার ৭৯৩ টাকা, বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে পাঁচ বছরের জন্য মেয়াদান্তে ৫৩ হাজার ৫৮০ টাকা এবং ডাকঘর মেয়াদী হিসাবে তিন বছরের মেয়াদান্তে ৩০ হাজার ৪৫৬ টাকা লভ্যাংশ দেওয়া হয়।