পুলিশ কর্মকর্তার বিচার দাবিতে মৃতদেহ নিয়ে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
৩ জানুয়ারি ২০২১ ২২:৩৭
বরিশাল: বরিশালে পুলিশি নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগের ঘটনায় রেজাউল করিম রেজার মৃতদেহ নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন এলাকাবাসী। বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) শাখা পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহির বিচারের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়কও অবরোধ করেন।
রোববার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরীর সাগরদী এলাকায় প্রায় দেড়ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ করে ২৪নং ওয়ার্ড বাসিন্দারা। এতে দু’পাশে কয়েকশ যানবাহন আটকা পড়ে। পরবর্তীতে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেন বিক্ষোভকারীরা।
স্থানীয়রা জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রেজাউল করিম রেজার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে আসেন স্বজনরা। এসময় বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রেজার মৃত্যুর ঘটনায় দোষী পুলিশ সদস্যের বিচার দাবি করে তার মরদেহ নিয়ে সাগরদী মাদরাসাসংলগ্ন মহাসড়কে যান। তারা সড়কটি অবরোধ করে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে বরিশাল নগরে চলাচলরত ছোট ছোট যানবাহন ছাড়াও দুরপাল্লার যাত্রী ও পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা ৬টার পর বরিশাল মেট্রোপলিটনের কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এরপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বিক্ষোভকারীরা নগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই ও সাগরদী এলাকার শের-ই বাংলা সড়ক এলাকার বাসিন্দা মহিউদ্দিন মাহির বাসার সামনে গিয়েও বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিক্ষোভকারীরা মহিউদ্দিন মাহির বাসভবন লক্ষ করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন। এতে তার বাড়ির জানালার ১০টি মতো গ্লাস ভেঙে যায়।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, অন্যায়ভাবে রেজাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করে তাকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয় মহিউদ্দিন মাহি। এর আগেও তিনি সাগরদী এলাকায় বিভিন্নভাবে বিভিন্ন সময়ে ত্রাসের সৃষ্টি করেছেন। এসব ক্ষোভ থেকেই এখন সবাই মিলে এসআই মহিউদ্দিনের বিচারের দাবি জানানো হচ্ছে।
সার্বিক বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রেজার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু তারা মরদেহ নিয়ে সড়কে অবস্থান নেন। এতে করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে আর ওই সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। যে অভিযোগ উঠেছে তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর সত্যতা পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্র রেজাউল করিম রেজাকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর পর নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ ওঠে বরিশাল মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এসআই মহিউদ্দিন মাহির বিরুদ্ধে। ঘটনার শুরু থেকেই নিহতের পরিবার ও স্বজনরা এসআই মহিউদ্দিন মাহিসহ নির্যাতনকারী সব পুলিশ সদস্যর বিচার দাবি করে আসছিলেন।