২১ সালে টেকসই উন্নয়নে ৩ বিষয়ে গুরুত্ব দেবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
৪ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৪২
ঢাকা: বিদেশি বিনিয়োগ ও বাণিজ্য উন্নয়ন এবং নতুন শ্রমবাজার, এই তিন বিষয়ে একুশ সালে অধিক গুরুত্ব দিতে চায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বিশ্বের কাতারে বাংলাদেশকে যুক্ত করতে অন্য বিষয়ের পাশাপাশি এই তিন বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। এজন্য এরই মধ্যে পররাষ্ট্র সচিব বিদেশে অবস্থিত দেশের সকল দূতকে চিঠি দিয়ে এই তিন বিষয়ের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছেন।
পাশাপাশি লক্ষ্য অর্জনে দূতদের কাছ থেকে তাদের পরিকল্পনাও জানতে চাওয়া হয়েছে। একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে এই তথ্য জানা গেছে।
সূত্রগুলো জানিয়েছে, অর্থনৈতিক কূটনীতি বেগবান করতে ঢাকা থেকে সবগুলো মিশনকেই নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে যে বাণিজ্য উন্নয়ন এবং নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টিতে বিশ্বের যেখানে যেখানে সুযোগ আছে, সেগুলো কাজে লাগাতে হবে। এরই মধ্যে একাধিক মিশন তাদের পরিকল্পনা ঢাকায় পাঠিয়েছে।
নেদারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ সারাবাংলাকে বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি টেকসই এবং শক্তিশালী করতে ডাচ বিনিয়োগ বাড়াতে কাজ করছি। বিশেষ করে কৃষি, হালকা প্রকৌশল এবং সমুদ্র সম্পদ এই খাতে ডাচ বিনিয়োগ বাড়াতে এরই মধ্যে উভয় দেশের বিনিয়োগকারী এবং উৎপাদকদের নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে। আশা করি, সামনের দিনগুলোতে এর সুফলতা পাওয়া যাবে।’
বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘এই বছরে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ। ইকোনমি ডিপ্লোমেসিকে বেগবান করতে হবে, এটা আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে স্থির করেছেন। নতুন বছরের কৌশল নির্ধারনে পররাষ্ট্র সচিব সকল রাষ্ট্রদূতকে এরই মধ্যে দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। একুশ সালে কোনো মিশনের কী লক্ষ্য বা পরিকল্পনা কী, তা ঢাকা থেকে জানতে চাওয়া হয়েছে।’
রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কর্মসংস্থান এবং প্রবৃদ্ধি ঠিক রাখতে হলে প্রতিটি মিশনকে যে কৌশল নিতে হবে, সেখানে বিনিয়োগ ও বাণিজ্য উন্নয়ন এবং শ্রমশক্তির নতুন বাজার এই তিন বিষয়ে ফোকাস করতে হবে। বিদেশি বিনিয়োগ টানতে বিডা (বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) বেজাসহ (বাংলাদেশ অর্থনৈতিক জোন কর্তৃপক্ষ) সরকারের একাধিক সংস্থা কাজ করছে। কিন্তু এখানে সবারই সহযোগিতার প্রয়োজন। আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে থেকে কাজ করছে। কেন না এখানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, রাষ্ট্রদূত এবং মিশনগুলোকেই সবচেয়ে বেশি কাজ করতে হচ্ছে।’
রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাহরাইনের সঙ্গে এখন আমাদের ২০-৩০ মিলিয়নের বার্ষিক বাণিজ্য হচ্ছে, যা একুশ সালে ১০০ মিলিয়নে উন্নীত করতে চাই।’
বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডস-এর রাষ্ট্রদূত হ্যারি ভারওয়াজ জানান, চলমান করোনার মধ্যেও বাংলাদেশ যেভাবে অর্থনৈতিক উন্নতি অব্যাহত রেখেছে, তা প্রশংসার দাবি রাখে। বাংলাদেশ বিদেশিদের জন্য ব্যবসা করার পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে। দেশটির যে পরিমাণ কর্মশক্তি এবং নানাবিধ সম্ভবণা রয়েছে, তা ঠিকমত ব্যবহার করতে পারলে অচিরেই অর্থনীতিতে দেশটি এশিয়ার টাইগারে পরিণত হবে। এ জন্য প্রয়োজন বেটার বাংলাদেশ ব্র্যান্ডিং।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘এই বছরও আমরা ইকোনমি ডিপ্লোমেসিকে গুরুত্ব দিতে চাই।’
সারাবাংলা/জেআইএল/এমআই