Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

পুলিশের প্রকাশিত ‘ডিটেকটিভ’ সরিয়ে নিচ্ছে নিজেরাই


৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৫৩

ঢাকা: প্রকাশের পর মাঝপথে বিতরণ বন্ধ করা হয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর নিজস্ব প্রকাশনা (মাসিক) ডিটেকটিভ–এর বিজয় দিবস সংখ্যাটি। গত ডিসেম্বরে সংখ্যাটি প্রকাশিত হলেও এ মাসের শুরু থেকে সেটি বিতরণ করা হচ্ছিল। সংখ্যাটিতে একজন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের (এএসপি) লেখা নিয়ে বাহিনীর একটি অংশের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেওয়ায় তা বিতরণ না করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৬ জানুয়ারি) রাতে সংখ্যাটির বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয় বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন পুলিশ সদর দফতরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা। 

পুলিশ সূত্র জানায়, ডিটেকটিভ–এর ডিসেম্বর সংখ্যায় ‘জনবান্ধব পুলিশ হবে মানুষের প্রথম আশ্রয়স্থল’ শিরোনামে সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ) স্বপ্না বেগমের একটি লেখা প্রকাশিত হয়। লেখার একটি অংশে বলা হয়েছে, ‘তার মানে এই না যে আমি বলব সব পুলিশ নির্দোষ। অনেকেই আছেন বিশেষ করে ইনসপেক্টর থেকে নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণ অতি ক্ষুধার্ত। যার কারণে তারা মানুষকে বিশেষভাবে অর্থনৈতিক হয়রানি করেন। এর কতটুকু দায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের ওপর বর্তায়, আমার জানা নেই।’

লেখাটি প্রকাশিত হওয়ার পর পুলিশ পরিদর্শক থেকে শুরু করে নিচের পদবির কর্মকর্তারা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা শুরু করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার ডিটেকটিভ–এর সম্পাদক ও পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) হাবিবুর রহমান বিজয় দিবস সংখ্যাটি বিতরণ না করার নির্দেশনা দিয়ে চিঠি পাঠান।

চিঠিতে তিনি সংখ্যাগুলো রাজধানীর নয়া পল্টনের পলওয়েল ভবনে ডিটেকটিভ কার্যালয়ের ঠিকানায় ফেরত দিতেও বলেছেন।

ডিআইজি হাবিবুর রহমান জানান, ডিটেকটিভের একটি লেখায় ভুল হয়েছে, তাই সেটি বিতরণ না করে ফেরত পাঠাতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে, পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি বিমানবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বি এম ফরমান আলী ও সাধারণ সম্পাদক যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজহারুল ইসলাম কাজল স্বাক্ষরিত আইজিপি বরাবর লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, ‘জনাব, অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, ডিটেকটিভ পত্রিকার গত ডিসেম্বর ২০২০ সংখ্যায় প্রকাশিত সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ), প্রবি-৭৫, মিস স্বপ্না বেগমের উদ্ধৃতি দিয়ে মুদ্রিত একটি লেখায় উল্লেখ করা হয়েছে, ‘অনেকেই আছে বিশেষ করে ইন্সপেক্টর থেকে নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণ অতি ক্ষুধার্ত। যার কারণে তারা মানুষকে বিশেষভাবে অর্থনৈতিক হয়রানি করেন। এর কতটুকু দায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বর্তায় আমার জানা নেই।’

অভিযোগে বলা হয়, বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর একটি বৃহৎ অংশকে কটাক্ষ করে এমন নগ্ন ভাষায় বিশেষিত করা একজন সহকারী পুলিশ সুপারের (শিক্ষানবিশ) জন্য কতটুকু বাস্তবসম্মত উক্তি তা তদন্তের দাবি রাখে। যেখানে করোনাকালীন পুলিশের ভূমিকা মানুষের মনে পুলিশকে একটি বিশেষ স্থান দিয়েছে, যেখানে করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ পুলিশের প্রথম শহীদ একজন পুলিশ কনস্টবল, যেখানে করোনা মহামারিতে বাংলাদেশ পুলিশের আক্রান্তদের মধ্যে তিন চতুর্থাংশ সদস্য ইন্সপেক্টর থেকে নিম্ন পদমর্যাদার, সেখানে এমন উক্তি উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর মধ্যে বিভাজন ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির প্রচেষ্টা বলে আমাদের কাছে মনে হয়। এমন উক্তি শুধুমাত্র ইন্সপেক্টর থেকে নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণের প্রতি কোন অপমানজনক নয়, বরং বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর জন্যও অবমাননাকর। এই ধরনের উক্তি পুলিশ বাহিনীতে হতাশার সৃষ্টি করে। ওই সহকারী পুলিশ সুপার (শিক্ষানবিশ), প্রবি-৭৫, মিস স্বপ্না বেগমের উদ্ধৃতির মুদ্রিত অনুলিপি ফেসবুকে প্রকাশের পর থেকে ইন্সপেক্টর থেকে নিম্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যগণের মধ্যে এক ধরনের বিরূপ মনোভাবের সৃষ্টি হয়েছে। এই সংক্রান্তে আপনার দৃশ্যমান হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ডিটেকটিভ পুলিশ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর