‘পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে’
৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪২
ঢাকা: অন্যের ওপর নির্ভরশীল না থেকে পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, ‘কৃষি মন্ত্রণালয়, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে সমন্বতি উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।’
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে ‘উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন’ বিষয়ে মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পাটবীজের জন্য বিদেশের ওপর নির্ভরশীল থাকতে পারি না। আমরা পাটবীজের উৎপাদন বাড়াব। পাটের উৎপাদন বাড়াব। পাট চাষকে এদেশের চাষিদের নিকট লাভজনক ফসলে উন্নীত করব। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য পাটের অসাধারণ ও গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আবার ফিরিয়ে আনব।’
কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর দূরদর্শী ও সময়োপযোগী উদ্যোগে কৃষি মন্ত্রণালয়ের পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছে। সেই জিনোম ব্যবহার করে আমাদের বিজ্ঞানীরা উচ্চফলনশীল পাটবীজ রবি-১ জাত উদ্ভাবন করেছে; যার ফলন ভারতের পাটজাতের চেয়ে ১০-১৫ ভাগ বেশি। কৃষক পর্যায়ে এটির চাষ বাড়াতে পারলে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়া সম্ভব।’
বাংলাদেশে বছরে কৃষক পর্যায়ে/প্রত্যায়িত বীজের চাহিদা হলো ৫ হাজার ২১৫ মেট্রিক টন। আর চাহিদার বিপরীতে বিএডিসি সরবরাহ করে মাত্র ৭৭৫ মেট্রিক টন (তোষা পাট- ৫১৫ টন, দেশি- ২৬০ টন)। তোষা পাটবীজের প্রায় পুরোটাই ভারত থেকে আনতে হয়। এই বিদেশ নির্ভরতা কমিয়ে পাটবীজে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় ৫ বছর মেয়াদী কর্মপরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রণয়ন করেছে। আগামী ২০২১-২২ অর্থবছর থেকে ২০২৫-২৬ এই ৫ বছরের মধ্যে দেশে ৪৫০০ মেট্রিক টন পাটবীজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই তোষা পাটবীজ উৎপাদনের জন্য ৮,৭৮০ হেক্টর জমিতে চাষের প্রয়োজন হবে।
সভায় বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীরপ্রতীক) বলেন, ‘ভর্তুকি দিয়ে হলেও পাটবীজের উৎপাদন বাড়াতে হবে। অন্যের ওপর নির্ভরশীল থাকলে সবসময় অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়। তার সঙ্গে পাটবীজ রফতানির ওপর সংশ্লিষ্ট দেশের নিষেধাজ্ঞা আরোপের ভয়ও থাকে।’
সভায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া এবং বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মো. মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আবুল কালাম, এনডিসি, সংস্থাপ্রধান ও অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।