রাজিবপুরে অবৈধ বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে নদীর তীরবর্তী এলাকা
১৫ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:৪৭
কুড়িগ্রাম: ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে হুমকির মুখে কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো। অথচ এ বিষয়ে জেলা প্রশাসন কোনো ভূমিকাই পালন করছেন না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
জানা গেছে, উপজেলার ব্রহ্মপুত্র, জিঞ্জিরাম এবং সোনাভরি নদীতে অন্তত ৩০টি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে উপজেলার অনেক নদীতে অসময়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদী তীরবর্তী মোহনগঞ্জ, চর নেওয়াজী, কোদালকাটি, বাউলপাড়া, বালিয়ামারী, রাজিবপুর মুন্সিপাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম রয়েছে হুমকির মুখে।
ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনকারী মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের শামীম হোসেন বলেন, রাজিবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকারের অনুমতিতেই বালু উত্তোলন করছেন তিনি। এমনকি এই কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও করে দিয়েছেন আব্দুল হাই সরকার।
বালু উত্তোলনের কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা জানান, উজ্জল হোসেন নামে এক ড্রেজার মেশিন মালিক ডাকাত দলের সদস্য। কেউ ড্রেজার সম্পর্কে কথা বলতে গেলে তাকে ডাকাতের ভয় দেখায়।
ড্রেজার মালিক মতিউর রহমান বলেন, প্রশাসনকে প্রতিমাসে ২ হাজার করে টাকা দিতে হয়। টাকা দিলে সব চলে।
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল হাই সরকারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেন, আনুষ্ঠানিকভাবে আমি উদ্বোধন করি নাই। তবে আমার একটি ড্রেজার মেশিন আছে যা সরকারি রাস্তার কাজে এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্লক তৈরির কাজের জন্য বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে রাজিবপুর উপজেলা কমিশনার (ভূমি) গোলাম ফেরদৌস বলেন, আমি ড্রেজার মেশিন চালানোর কোনো অনুমতি দিইনি। কয়েকদিন আগে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা খালেকুজ্জামানকে পাঠিয়ে অবৈধ ড্রেজার বন্ধ করিয়েছি। কাজের চাপে ওই এলাকায় যাওয়া হয় নাই। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম নদী শাসনের কাজ পরিদর্শনে এসে কয়েকটি ড্রেজার মেশিনের কিছু মালামাল জব্ধ করে নিয়ে সব ড্রেজার বন্ধের নির্দেশ দিয়ে চলে যান। কিন্তু আবারও চালু করা হয় ওই সব ড্রেজার মেশিন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, কোনো ড্রেজার মেশিনের অনুমতি দেয়া নাই। আমার নাম ব্যবহার করে কেউ মেশিন চালালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নবীরুল ইসলাম বলেন, কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সারাবাংলা/এএম