ভুয়া নিয়োগপত্রে প্রতারণা, গ্রেফতার ২৩ প্রতারক
১৫ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৫১
ঢাকা: রাজধানীর মিরপুরে চাকরিতে নিয়োগের নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে ২৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
বৃহস্পতিবার (১৪ জানুয়ারি) দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে র্যাব-৪-এর মিডিয়া কর্মকর্তা সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জিয়াউর রহমান চৌধুরী সারাবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
এএসপি জিয়াউর রহমান জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টা রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর শাহ আলী, পল্লবী, কাফরুল ও তেজগাঁও এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের ২৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪। এ সময় ৫০ জন ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও জানান, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়— কিছু ভুয়া নামধারী ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানি চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪-এর বিশেষ আভিযানিক দল অভিযান চালায়। অভিযানে ভুয়া চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের চাকরিপ্রার্থী মোট ৫০ ভুক্তভোগীকেও উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে রাজধানীর শাহ আলী থানার ‘লাইফ গার্ড সিকিউরিটি অ্যান্ড সাপ্লাই লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানি থেকে ১০০টি জীবন বৃত্তান্ত ফরম, ১৫টি চাকরির আবেদন ফরম বই, চারটি রেজিস্ট্রার, চারটি সিল, সাতটি মোবাইল, ২০০টি ভিজিটিং কার্ড এবং নগদ ৫ হাজার ৫০০ টাকাসহ তাসলিমা সুলতানা (৩০) সায়মা ইসলাম (২৪), মৌসুমী আক্তার (২৮), মো. সাইফুল ইসলাম (৩০) ও মো. রাকিব হোসেনকে (২০) গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে, রাজধানীর পল্লবী থানার ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’ নামের একটি কোম্পানি থেকে ৫০টি টাকা প্রাপ্তি রশিদ, ৩০০টি ভর্তি ফরম, ৬৫টি অঙ্গীকারনামা, ৭০টি চাকরির নিয়োগ ফরম, ২০০টি কমিশন ভাউচার, সাতটি রেজিস্ট্রার, একটি প্যাড ও চারটি মানি রিসিটসহ সুমনা খাতুন (১৯), মো. সোহেল ফরাজি (২৯) ও শামীমা আক্তার (২৮) নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়।
একই অভিযানে কাফরুল থানার শাহ আলী প্লাজায় ‘ডিজিট-৪ সিকিউরিটি অ্যান্ড লজিস্টিকস সার্ভিসেস লিমিটেড’ নামের কোম্পানি থেকে ১০টি প্রচারপত্র, পাঁচটি আইডি কার্ড, ১০টি মনোগ্রাম ও ৪০টি ভর্তি ফরমসহ মো. কামরুজ্জামান (৩৩), মো. মশিউর রহমান (২৭), সোহাগী আক্তার (১৯), মো. রুবেল (২৮), মমতাজ নায়রী (৪৪) ও শাহীনূর আক্তার (২৭) নামে ছয় প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়।
এরপর একই অভিযানে তেজগাঁও থানার ‘বিজবন্ড আইটি লিমিটেড’ কোম্পানি থেকে ১৫টি টাকা প্রাপ্তির রশিদ, একটি ভর্তি ফরম বই, পাঁচটি চুক্তিপত্র, একটি সিল, ৫০টি ভিজিটিং কার্ড, ৪৫টি আইডি কার্ড, ১৫টি জীবন বৃত্তান্ত ও ১৫টি কমিশন ভাউচারসহ মো. আব্দুল হামিদ (৩৮) মো. আব্দুল জব্বার (৩৬), গাজিউর রহমান (২২), মো. আব্দুস সালাম (৩৬), মাহামুদা খাতুন (৩০), মাসুম কবির (২৯), মো. ফরিদ ইমরান (২৬), এনামুল হক (২৭) ও মাহমুদা খাতুনকে (৩০) গ্রেফতার করা হয়।
এএসপি জিয়াউর রহমান চৌধুরী বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা প্রতারণার তথ্য স্বীকার করেছে। পাশাপাশি জানিয়েছে, তারা রাজধানীসহ দেশের ভিন্ন এলাকায় অফিস ভাড়া করে বিভিন্ন নামে বেনামে ভূঁইফোড় প্রতিষ্ঠান খুলে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধ্যশিক্ষিত বেকার ও আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল তরুণীদের আকর্ষণীয় ও উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে প্রশিক্ষণের নামে অর্থ আদায় ও ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল।
গ্রেফতার ২৩ জনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন এবং অদূর ভবিষ্যতেও এরকম নব্য প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে র্যাব-৪-এর জোড়ালো সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান এ র্যাব কর্মকর্তা।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর
চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা প্রতারক চক্র ভুয়া নিয়োগপত্র র্যাব-৪