‘পাকিস্তানে হামলার কথা আগেই জানতেন অর্ণব’
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:০৪
আজ থেকে প্রায় দুই বছর আগে পাকিস্তানের বালাকোটে হামলা চালায় ভারতের বিমান বাহিনী। তবে সম্প্রতি এই হামলার ঘটনা নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এই হামলার ঘটনা আগে থেকেই জানতেন দেশটির রিপাবলিক টিভি’র প্রধান সম্পাদক অর্ণব গোস্বামী!
আনন্দবাজার’র খবরে বলা হয়, টিআরপি জালিয়াতি মামলায় গ্রেফতার হওয়া দেশটির রেটিং সংস্থা ‘বিএআরসি’র সাবেক সিইও পার্থ দাশগুপ্তের সঙ্গে অর্ণব গোস্বামীর একটি হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন প্রকাশ পেয়েছে। আর সেখানই এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইতোমধ্যে বিষয়টি মুম্বাই পুলিশের অভিযোগপত্রেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ওই অভিযোগে বলা হয়, ২০১৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি রিপাবলিক টিভি’তে সম্প্রচার করার বিষয় নিয়ে পার্থ দাশগুপ্তের সঙ্গে অর্ণব গোস্বামী হোয়াটসঅ্যাপে কথা হয়। সেখানে ভারতের পুলওয়ামায় সন্ত্রাসীদের হামলার পরে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের প্রথম সাক্ষাৎকার রিপাবলিক টিভি’তে সম্প্রচার করার বিষয়ে পার্থর সঙ্গে কথা বলেন অর্ণব। এরপর অর্ণব বলেন- ‘বড় একটা কিছু হবে।’
এ সময় পার্থ দাশগুপ্ত জানতে চান, দাউদের বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ করবে সরকার? এর জবাবে অর্ণব জানান, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় অভিযান চালাবে ভারত। একইসঙ্গে কাশ্মীরেও বড় পদক্ষেপ করবে সরকার।
এই উত্তরের প্রেক্ষিতে পার্থ বলেন, এটা ‘বিগ ম্যান’র পক্ষে ভালই হবে। দেশের জনগণ খুশি হবেন। তিনি ভোটে বড় জয় পাবেন।
পার্থ ও অর্ণবের হোয়াটঅ্যাপের কথোপকথন প্রকাশ পাওয়ার পর থেকেই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। এ বিষয়ে ক্ষমতাসীন দল বিজেপি বা মোদি সরকারের কেউ আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি।
তবে কংগ্রেস নেতা ও আইনজীবী অভিযেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, ২৩ ফেব্রুয়ারি অর্ণবের করা মন্তব্য থেকে বোঝা যাচ্ছে তিনি পাকিস্তান সম্পর্কে গোয়েন্দা তথ্য জানতেন। অর্থাৎ সরকারের কোনো শীর্ষ কর্মকর্তা গোপন তথ্য ফাঁস করেছিলেন। টেলিভিশনের টিআরপি বাড়াতে সেনা সদস্যদের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হয়েছে।
এছাড়াও কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিংহ জানান, অর্ণব শুধু সরকারের মুখপাত্র নন, তিনি সেনাপ্রধানের মতো প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গোপন তথ্যও জানেন। ‘দেশবাসী খুশি হবেন’- এ কথা থেকে বোঝা যাচ্ছে কেন মোদি সরকার পাকিস্তানে ওই সামরিক অভিযান চালিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের বালাকোটে অভিযান চালিয়েছিল ভারতীয় বিমান বাহিনী। এ হমালায় পাকিস্তানে কয়েকশ সন্ত্রাসীর নিহত হওয়ার দাবি করে ভারত। তবে সেই দাবি অস্বীকার করে পাকিস্তন জানায়, তাদের ওই এলাকায় এই হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। ওই সময় কংগ্রেসসহ ভারতের অনেকেই মোদির সরকারের দিকে এই দাবির সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। আর পার্থ ও অর্ণবের হোয়াটঅ্যাপের কথোপকথন সেই প্রশ্নকে আরও জোরালো করলো।
সারাবাংলা/এনএস