ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন-এসপিসহ ১৩ কর্মকর্তাকে তলব
১৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৫১
ঢাকা: ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাত বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ১১ বছর বয়সী আরেক শিশুর বিরুদ্ধে করা মামলায় ভিন্ন ভিন্ন প্রতিবেদন দেওয়া এবং তদন্তে গাফিলতির জন্য ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার সিভিল সার্জন, সংশ্লিষ্ট ১০ চিকিৎসক এবং এসপিসহ তিন পুলিশ কর্মকর্তাকে তলব করেছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি তাদের সশরীরে হাজির হয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একইসঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও পুলিশের আইজিকে এ ঘটনা তদন্ত করে একমাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ধর্ষণ মামলার কার্যক্রমের ওপর তিনমাসের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।
রোববার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি একেএম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
১১ বছর বয়সী শিশুর জামিন আবেদনের ওপর শুনানিতে দাখিল করা নথিতে ধর্ষণ বিষয়ে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য বা অমিল থাকায় এ আদেশ দেন আদালত।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুল ইসলাম। আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. শাহপরান চৌধুরী।
গতবছর ১১ সেপ্টেম্বর নির্যাতিতার পিতা নাসিরনগর থানায় একটি মামলা করেন।
মামলায় বলা হয়, ৪ সেপ্টেম্বর তার সাত বছরের মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে। মামলায় আসামির বয়স উল্লেখ করা হয় ১৫ বছর।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে পরদিন নাসিরনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে ৮ সেপ্টেম্বর শিশুটিকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ অবস্থায় এ বিষয়ে ৬ সেপ্টেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ডাক্তারি প্রতিবেদন দেওয়া হয়।
এরইমধ্যে আসামি হাইকোর্টে আগাম জামিন আবেদন করে। গতবছর ৩ নভেম্বর এ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এদিন আসামির বয়স প্রমাণের জন্য তার জন্মসনদ দাখিল করা হয়। জন্মসনদ অনুযায়ী তার বয়স ছিল ১০ বছর। এ অবস্থায় হাইকোর্ট তাকে জামিন দেন এবং মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে একমাসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি মামলার সিডি এবং তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।
এরইমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আইনের ৯ (১) ধারায় অভিযোগপত্র দেয়। পরবর্তীতে তদন্ত কর্মকর্তা ও নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাইকোর্টে প্রতিবেদন দেন। এ সময় জেলা সদর হাসপাতাল থেকে ১২ সেপ্টেম্বরের দেওয়া একটি ডাক্তারি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এবারের প্রতিবেদনে অসংগতি দেখার পর আদালত তদন্ত কর্মকর্তাকে তা নিয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর তদন্ত কর্মকর্তা জেলা সদর হাসপাতালের আরেকটি প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ অবস্থায় আজ শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট আদেশ দিলেন। আদেশে এসপি, নাগিরনগর ওসি ও তদন্ত কর্মকর্তা এবং সিভিল সার্জন ও সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের তলব করা হয়।
সারাবাংলা/কেআইএফ/একে