১ হাজার মণের বেশি কাঁচা পাট ১ মাসের বেশি মজুত নয়: পাটমন্ত্রী
২০ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৫৩
বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত রাখতে ডিলার ও আড়তদারদের জন্য কাঁচা পাট মজুতের ক্ষেত্রে কিছু বাধ্যবাধকতা বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ বাজারে প্রয়োজনীয় কাঁচা পাট সরবরাহ নিশ্চিত করতে এবং পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানির ধারা বেগবান করার লক্ষ্যে কাঁচা পাটের ডিলার ও আড়তদাররা একহাজার মণের বেশি কাঁচা পাট একমাসের বেশি সময় ধরে মজুত করতে পারবে না। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদফতরকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুরে সচিবালয়ে বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিজেএমএ) ও বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের সঙ্গে আলোচনার সময় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, অতিরিক্ত সচিব সাবিনা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান পাটোয়ারী, বাংলাদেশ জুট স্পিনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. জাহিদ মিয়াসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি দেশে কাঁচা পাটের সংকট তৈরির কারণে পাটকলগুলোর উৎপাদন ঝুঁকিতে পড়েছে। এ অবস্থায় পাট ও পাটজাত পণ্যের রফতানি আয়ের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে। এজন্য লাইসেন্সবিহীন অসাধু ব্যবসায়ীদের কাঁচাপাট বেচাকেনা ও মজুত থেকে বিরত রাখা, ভেজা পাট বেচাকেনা রোধ করা, বাজারে কাঁচা পাটের সরবরাহ নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পাট অধিদফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, চলতি পাট মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাটচাষ নিশ্চিতকরণে বীজ সরবরাহ সঠিক রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। মানসম্মত পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনে পাঁচ বছরের জন্য কৃষি মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপ তৈরি করেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত পাটবীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হবে। প্রয়োজনীয় পাটবীজ সংগ্রহে আমদানি নির্ভরতা আর থাকবে না। এ পাট মৌসুম থেকে রোডম্যাপ বাস্তবায়ন শুরু হবে। ধাপে ধাপে তা আগামী পাঁচ বছরে শতভাগ বাস্তবায়ন করা হবে।
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আরও বলেন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় উচ্চফলনশীল পাটবীজ উৎপাদনে স্বয়ম্ভরতা অর্জন এবং মানসম্মত পাট উৎপাদনে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধকরণ ও সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় ‘উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ’ শীর্ষক প্রকল্প চলমান রয়েছে। প্রকল্পটি দেশের ৪৬টি জেলার ২৩০টি উপজেলায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় প্রতিবছর প্রত্যক্ষভাবে ১,৫৩,০০০ পাটচাষী ও পরোক্ষভাবে ৬,১২,০০০ কৃষক ও পরিবারের সদস্য উপকৃত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ ৬৬৮.১১ কোটি ডলার আয় করেছে। এই অংক গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৩০ দশমিক ৫৬ শতাংশ বেশি। আর তা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১৯ দশমিক ২৯ শতাংশ বেশি।
সারাবাংলা/এএম
গোলাম দস্তগীর গাজী বীরপ্রতীক পাটজাত পণ্য রফতানি বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী