কোভিড ভ্যাকসিনে শ্রমিকদের অগ্রাধিকার দাবি
২০ জানুয়ারি ২০২১ ১৯:২২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: করোনাভাইরাস মহামারিতে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি দুর্দশাগ্রস্ত উল্লেখ করে ভ্যাকসিন বিতরণে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি করেছে ‘বিলস লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টার’ নামে একটি সংস্থা।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে দেশের ১৩টি শ্রমিক সংগঠনের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা এ সংস্থার পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি তপন দত্ত লিখিত বক্তব্যে জানান, আইএলও-এর হিসেবে করোনা মহামারির শুরুর পর দেশে প্রায় ৭ লাখ শ্রমিক বেকার হয়েছেন। শুধু চট্টগ্রামেই ৪৭টি পোশাক কারখানায় ২২ হাজার শ্রমিক চাকরিচ্যুত হয়েছেন। যারা শ্রম আইন অনুযায়ী কোনো ক্ষতিপূরণ পাননি। আর যারা চাকরি করছেন তাদের বেতন দেওয়া হয়েছে ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ।
তিনি বলেন, ‘মহামারির প্রথম দিকে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক রফতানির আদেশ কমলেও পরিস্থিতির উন্নতিতে তা বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পুনরায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রফতানির আদেশ কমার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কোভিড সংক্রমণের অজুহাতে গার্মেন্টস মালিকরা দুই ও চার শতাংশ সুদে দুই দফায় ১০ হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা পেয়েছে। তবুও আইনসঙ্গত পাওনা না দিয়ে তারা শ্রমিক ছাঁটাই করেছে। আবার এখন তারা বায়না ধরেছে শ্রমিকদের বার্ষিক মজুরি বৃদ্ধি পাঁচ শতাংশ স্থগিত রাখার জন্য।’
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, লকডাউন শুরুর পর স্বাস্থ্যখাতের শ্রমিকরা আংশিক, হোটেল, পরিবহন শ্রমিক, দোকান কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, গৃহ শ্রমিক, কমিউনিটি সেন্টার ও ডেকোরেশন শ্রমিকসহ অনেক সেক্টরের শ্রমিকরা পুরোপুরি আয়শূন্য হয়ে পড়েন। কর্মহীন লাখ লাখ মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামে চলে গেছেন। কর্মহীন হওয়ার ফলে দারিদ্র্য বেড়েছে ১৯ শতাংশ ও দরিদ্র জনসংখ্যা বেড়েছে ২৪ শতাংশ।
মহামারির মধ্যে পাটকল, চিনিকল বন্ধ হয়ে এসব খাতের অন্তত ৫০ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন বলেও জানান শ্রমিক নেতা তপন দত্ত।
শ্রমিকদের দুর্দশার কথা বিবেচনায় নিয়ে কোভিড ভ্যাকসিন বিতরণে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার দাবি জানান এই শ্রমিক নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতিতে দেশের প্রচলিত শ্রম আইনের প্রয়োগ, শ্রমিক অধিকার সংরক্ষণ এবং শ্রম আদালতে এক ধরনের অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে।
বিলস লেবার রিসোর্স অ্যান্ড সাপোর্ট সেন্টারের চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি নাজিম উদ্দিন জানান, লকডাউনের শুরুতে চট্টগ্রামের শ্রম আদালতের কার্যক্রম বন্ধ করা হলেও এখনো তা চালু হয়নি। দুটি আদালতের একটিতেও এখনো বিচার কাজ চলছে না। এর ফলে শ্রমিকরা আইনি প্রতিকার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির সদস্য সচিব ও জাতীয় শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি শফর আলী, কর্মকর্তা রিজওয়ানুর রহমান খান ও ফজলুল কবির মিন্টু উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/আরডি/এমআই