Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শব্দদূষণ রোধে আসছে নতুন প্রকল্প

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
২১ জানুয়ারি ২০২১ ১৬:৪৯

ঢাকা: বিভিন্ন ধরনের শব্দ দূষণ কমাতে সরকার সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই প্রকল্প জনগণকে সঙ্গে নিয়ে বাস্তবায়ন হবে এবং এর আওতায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) পরিবেশ অধিদফতরে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত বৈঠকে প্রকল্পের বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

এ সময় তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন সচেতনতামূলক কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিরুদ্ধে জনমত তৈরি করা হবে। সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টায় শব্দদূষণ সহনীয় পর্যায় নেমে আসবে। শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে।’

পরিবেশমন্ত্রী বলেন, “প্রতিবছর বিআরটিএ প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ নতুন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দিচ্ছে। ক্রমবর্ধমান যানবাহনে অহেতুক হর্ণ ,যত্রতত্র সাউন্ড বক্স, মাইকের মাধ্যমে উচ্চশব্দ সৃষ্টি করে মানুষের স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত করা হচ্ছে। আমাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে টেকসই করতে হলে অন্যান্য দূষণের পাশাপাশি শব্দদূষণের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এখনই সময়। ক্ষতিকর দিকগুলো বিবেচনায় নিয়ে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন/বিধি বাস্তবায়ন ও অতিরিক্ত শব্দ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য নিরাপদ আবাস গড়ে তোলার মাধ্যমে ‘শব্দদূষণমুক্ত পরিবেশ, শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে হবে।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান বলেন, ‘এ প্রকল্পের মাধ্যমে শব্দদূষণের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা সম্ভব হবে।’ এ সময় তিনি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট সকলকে নিয়মে মেনে প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘জনগণকে ব্যাপকভাবে বধির হওয়া থেকে রক্ষা করতে শব্দদূষণ বন্ধ করতেই হবে। এ লক্ষ্যে পঞ্চম, নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রমে শব্দদূষণের ক্ষতিকর প্রভাব অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।’

পরিবেশ অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ও প্রকল্পের পরিচালক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘পরিবেশ অধিদফতরে বাস্তবায়নাধীন শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় পরিবহন শ্রমিক/চালক, শিক্ষার্থী, সরকারি কর্মচারী, কারখানার নির্মাণ শ্রমিক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ইমাম, পেশাজীবী ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের মোট ৯ লাখ ৫২ হাজারর ব্যক্তিকে শব্দ সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।

এছাড়াও টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতারে ধারাবাহিক অনুষ্ঠান, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, মোবাইল ফোন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে টিভিসি, খুদে বার্তা ও বিজ্ঞপ্তি প্রচার করা হবে। সচেতনা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১২৮টি বিলবোর্ড ও ৬০টি সাইনবোর্ড স্থাপন, ৭ লাখ লিফলেট, ৭ লাখ স্টিকার, ১ হাজার ফোল্ডার এবং ১ হাজার প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল মুদ্রণ ও বিতরণ করা হবে। সারাদেশে মোট দুই হাজার ভ্রাম্যমাণ আদালত/যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে। শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০০৬ সংশোধন করে সময়োপযোগী বিধিমালা প্রণয়ন করা হবে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, ৬৪টি জেলায় শব্দের মাত্রা পরিমাপবিষয়ক জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা এবং তথ্যভাণ্ডার তৈরি করা হবে। বিভাগীয় শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে শব্দদূষণের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ওপর সমীক্ষা এবং বিধিমালা সংক্রান্ত ও দিবসভিত্তিক মোট নয়টি সভা আয়োজন করা হবে। একটি এলাকায় পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের আওতায় শব্দমাত্রার সার্বক্ষণিক অনলাইন পরিবীক্ষণ এবং রোড সাইড ডিসপ্লে স্থাপন করা হবে। কমিউনিটিভিত্তিক সংগঠনকে সম্পৃক্ত করে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষামূলক কার্যক্রমের জন্য নির্ধারিত এলাকায় নয়টি ক্যাম্পেইন আয়োজন, ৫১২টি এয়ারমাফ এবং ৪ হাজার এয়ারপ্লাগ সংগ্রহ ও বিতরণ এবং ৩ বছর আন্তর্জাতিক শব্দসচেতনতা দিবস উদযাপন করা হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/পিটিএম

নতুন প্রকল্প শব্দদূষণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর