ভ্যাকসিন পেতে নিবন্ধন করতে হবে ‘সুরক্ষায়’
২৫ জানুয়ারি ২০২১ ২৩:৩২
ঢাকা: ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’য় নিবন্ধন ছাড়া কাউকে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম।
তিনি বলেন, ‘সুরক্ষা’র বাইরে কোনো ভ্যাকসিন কাউকে দেওয়া হবে না। মূলত ভ্যাকসিন সংক্রান্ত সব তথ্য ভবিষ্যতে যেন বিশ্লেষণ করা যায়, সে কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন অবহিতকরণ’ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানান তিনি।
অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’তে অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। নিবন্ধনের বাইরে ভ্যাকসিন দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের এই ডেটাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে, অ্যানালাইসিস করতে হবে। অনলাইনের এই তথ্যগুলো পরবর্তী সময়ে অনেকগুলো কাজে আমাদের লাগাতে হবে।
কেন্দ্র পরিবর্তন করে ভ্যাকসিন দেওয়ার সুযোগ থাকছে না জানিয়ে স্বাস্থ্যের মহাপরিচালক বলেন, নিবন্ধন অনুযায়ী আমরা কেন্দ্রে ভ্যাকসিন পাঠাব। সেক্ষেত্রে কেন্দ্র পরিবর্তন করে ভ্যাকসিনের সুযোগ দিলে অনেক ভ্যাকসিন নষ্ট হবে।
নির্ধারিত তারিখ ও কেন্দ্র অনুযায়ী ভ্যাকসিন নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বলেন, ভবিষ্যতেও যখন দেশে কোনো ভ্যাকসিন কর্মসূচি পরিচালনা করা হবে, তখনো এই পদ্ধতিটিকে মডেল হিসেবে বিবেচনা করা হবে। এ কারণেই এর বাইরে ভ্যাকসিন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
কোনো ব্যক্তি নির্দিষ্ট তারিখে টিকাদান কেন্দ্রে উপস্থিত হতে না পারলে কী হবে— জানতে চাইলে খুরশীদ আলম বলেন, কারও ভ্যাকসিনের তারিখ বা কেন্দ্র পরিবর্তনের বিষয়টিকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। কারণ, কোন কেন্দ্রে কী পরিমাণ নিবন্ধন রয়েছে, তার ওপর নির্ভর করেই ভ্যাকসিনের ডোজ পাঠানো হবে। এখন কেউ যদি নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট কেন্দ্রে উপস্থিত হতে ব্যর্থ হন, তাহলে অনেক ভ্যাকসিন নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকবে। এটি হতে দেওয়া উচিত হবে না।
ডিজি হেলথ আরও বলেন, সাধারণত প্রথম ডোজের ৮ থেকে ১২ সপ্তাহ পরে দ্বিতীয় ডোজ নিতে বলা হয়েছে। সেক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি প্রথম ডোজ নেওয়ার পর লম্বা সময় পাচ্ছেন। তিনি যে কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন নিয়েছেন, সেখান থেকেই দ্বিতীয় ডোজটিও নেবেন। আমরা সবাইকে বলব, একদম বিশেষ কারণ না হলে কেউ যেন ডোজ নেওয়ার তারিখ মিস না করেন। তা না হলে আসলেই টিকার আপচয় হবে।
তবে কেউ প্রথম ডোজের দিন ভ্যাকসিন নিতে না পারলে সমস্যা নেই উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার খুরশিদ বলেন, নিবন্ধন শেষে প্রথম ডোজের দিন যদি কেউ ভ্যাকসিন নিতে না পারেন, তাহলে তেমন সমস্যা নেই। তবে প্রথম ডোজ নেওয়ার পরে দ্বিতীয় ডোজের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট তারিখে উপস্থিত না হতে পারলে সমস্যা হবে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে আগামী বুধবার (২৭ জানুয়ারি) করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হবে। ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টায় এ কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে মোট ২০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, আগামী ২৭ তারিখ বিকেল সাড়ে ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। ঠিক সেই সময়েই আমরা প্রস্তাব দিয়েছি যে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশনটিও প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। এরপর ‘সুরক্ষা’য় অনলাইন নিবন্ধন উন্মুক্ত হবে। তার আগ পর্যন্ত কিন্তু এই www.surokkha.gov.bd সাইটে নিবন্ধনের সুযোগ উন্মুক্ত হবে না, অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপেও না।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
করোনাভাইরাস করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম সুরক্ষা