Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ভ্যাকসিন প্রয়োগে নিবন্ধন প্রক্রিয়া ছয় ধাপে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ জানুয়ারি ২০২১ ০০:১৯

ঢাকা: দেশে নভেল করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) প্রতিরোধে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন হবে ছয় ধাপে। প্রথম ধাপে জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমে ভ্যাকসিন প্রয়োগের নিবন্ধন শুরু করতে হবে ‘সুরক্ষা’ নামের একটি প্লাটফর্মে। নিবন্ধন ছাড়া দেশে কেউ ভ্যাকসিন নিতে পারবে না। যাদের স্মার্ট ফোন নেই বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না, তারা যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে এ সংক্রান্ত সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন অবহিতকরণ’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ‘সুরক্ষা’য় অনলাইনে নিবন্ধনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, আগামী ২৭ তারিখ বিকেল সাড়ে ৩টায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। ঠিক সেই সময়েই আমরা প্রস্তাব দিয়েছি যে আনুষ্ঠানিকভাবে রেজিস্ট্রেশনটাও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন। তাহলে যেটা হবে তখন এটা উন্মুক্ত হবে। তার আগ পর্যন্ত কিন্তু এই www.surokkha.gov.bd সেটাও রেজিস্ট্রেশনের জন্য উন্মুক্ত নয়, অ্যানড্রয়েড অ্যাপও না। একটি এনআইডি বা মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই নিবন্ধন করতে পারবেন। মূলত তিন ধাপে পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরেই একজন ব্যক্তি ভ্যাকসিনর জন্য নিবন্ধন পাবেন।

নিবন্ধনের প্রথম ধাপ

দেশে ভ্যাকসিন গ্রহণের জন্য নিবন্ধন করতে হবে ‘সুরক্ষা’ নামের একটি প্লাটফর্মে। www.surokkha.gov.bd লিখে ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। সেখানে প্রথমেই আছে ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধনের ট্যাব। এই প্লাটফর্মে পরিচয় যাচাইয়ের জন্য থাকছে ১৮টি শ্রেণি। যার একটি সিলেক্ট করার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্মতারিখ দিয়ে নিবন্ধন শুরু করতে হবে।

এই ১৮টি শ্রেণির মধ্যে রয়েছে নাগরিক নিবন্ধন, সরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী; অনুমোদিত সকল বেসরকারি স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা-কর্মচারী; প্রত্যক্ষভাবে সম্পৃক্ত সকল সরকারি ও বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা কর্মকর্তা-কর্মচারী; বীর মুক্তিযোদ্ধা; সম্মুখসারির আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য; সামরিক ও আধা সামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী এবং রাষ্ট্র পরিচালনায় অপরিহার্য কার্যালয়ের কর্মীরা।

এছাড়া রয়েছেন সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার সম্মুখসারির কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস, পয়ঃনিস্কাশন ও ফায়ার সার্ভিসের মত জরুরি সেবার সম্মুখসারির কর্মী, রেলস্টেশন, বিমান বন্দর ও নৌ বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা ও উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী।

১৮ বছরের নিচে যারা তাদের জন্য এখন পর্যন্ত কোনো ভ্যাকসিনের ট্রায়াল হয়নি। তাই সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মেও তারা নিবন্ধনের বাইরে থাকবেন।

নিবন্ধনের দ্বিতীয় ধাপ

জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর যাচাই হওয়ার পর নিবন্ধনের দ্বিতীয় ধাপে নিবন্ধনকারীর নাম দেখানো হবে বাংলা ও ইংরেজিতে। সেখানে একটি ঘরে একটি মোবাইল নম্বর দিতে হবে যে নম্বরে ভ্যাকসিন প্রদান সংক্রান্ত তথ্য এসএমএস করা হবে।

নিবন্ধনের তৃতীয় ধাপ

মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর একটি ঘর পূরণ করতে হবে, যেখানে জানাতে হবে নিবন্ধনকারীর কোনো দীর্ঘমেয়াদী রোগ আছে কিনা। যদি থাকে তবে কোন রোগে আক্রান্ত তা জানাতে হবে। একই সঙ্গে এ সময় আরেকটি অপশন দেওয়া হবে যেখানে জানাতে হবে পেশা এবং তিনি কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কাজে সরাসরি জড়িত কিনা।

নিবন্ধনের চতুর্থ ধাপ

নিবন্ধনের এই ধাপে ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহীকে তার বর্তমান ঠিকানা ও কোন কেন্দ্র থেকে ভ্যাকসিন নিতে ইচ্ছুক তা সিলেক্ট করতে হবে। সব শেষে ফরম সেভ করলে নিবন্ধনকারীর দেওয়া মোবাইল নম্বরে পাঠানো হবে ওটিপি। সেই ওটিপি কোড দিয়ে ‘স্ট্যাটাস যাচাই’ বাটনে ক্লিক করলে নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে।

পঞ্চম ধাপ

নিবন্ধন শেষে এই ধাপে ভ্যাকসিন নিতে আগ্রহী ব্যক্তিকে প্রথম ডোজ নেওয়ার তারিখ ও কেন্দ্রের নাম এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই তারিখে ভ্যাকসিন কার্ড ও জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নির্ধারিত কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন নিতে পারবেন নিবন্ধনকারীরা।

শেষ ধাপ

দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়া শেষে ভ্যাকসিন গ্রহণকারীকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর, জন্ম তারিখ দিয়ে লগ ইন করতে হবে সুরক্ষা প্ল্যাটফর্মের ওয়েব অ্যাপ্লিকেশনে। এ সময় একটি এসএমএস দেওয়া হবে রেজিস্টার করা মোবাইল নম্বরে। এসএমএস এর মাধ্যমে পাওয়া ওটিপি কোড দিয়ে ভ্যাকসিন কার্ড ডাউনলোড করতে হবে। এই কার্ডটিই ভ্যাকসিন সনদ বলে বিবেচিত হবে।

নিবন্ধন ছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না জানিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ‘সুরক্ষা’-তে অনলাইনে নিবন্ধন ছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়া হবে না। নিবন্ধনের বাইরে ভ্যাকসিন দেওয়াকে আমরা নিরুৎসাহিত করছি। আমাদের এই ডেটাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে, অ্যানালাইসিস করতে হবে। অনলাইনের এই তথ্যগুলো পরবর্তী সময়ে অনেকগুলো কাজে আমাদের লাগাতে হবে।

কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনেশন অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মূলত ভ্যাকসিন নেয়ার ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য অধিদফতরের ঠিক করে দেয়া ১৮ ক্যাটাগরির মানুষ অগ্রাধিকার পাবেন। যাদের স্মার্ট ফোন নেই বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না, তারা যেকোনো ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে নিবন্ধন করতে পারবেন। ডিজিটাল সেন্টারগুলোকে এ সংক্রান্ত সব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। এতে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস। এছাড়াও স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান, আইসিটি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সারাবাংলা/এসবি

করোনাভাইরাস করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কোভিড-১৯ ডিজিটাল ভ্যাকসিন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ভ্যাকসিন সুরক্ষা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর