‘আপা বললেন, আমার হয়ে মহারাজকে মেয়র নির্বাচিত করার অনুরোধ করো’
২৬ জানুয়ারি ২০২১ ১০:২৫
ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বার্তার কথা তুলে ধরে দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য ও অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘আপা (শেখ হাসিনা) আমাদের বললেন, তোমরা মহারাজকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য অনুরোধ করে আসো আমার হয়ে।’ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সিদ্দিক মঞ্চে নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনি পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাহাঙ্গীর কবির নানক আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়ে বরগুনা আসার কথা তুলে বলেন, ‘আপাকে সকালে ফোন করলাম। বললাম, আমি বাহাউদ্দিন নাছিম আর আফজাল, আমরা যাচ্ছি বরগুনায়। তখন ওনি বললেন যাও। বরগুনা তো আমার বরগুনা, তোমরাই যাও। তোমরা মহারাজকে মেয়র নির্বাচিত করার জন্য অনুরোধ করে আসো আমার হয়ে, আমার বরগুনায়। কারণ ওনি আমতলি থেকে এমপি ছিলেন, সেই কারণে ওনি মনে করেন বরগুনা ওনার।’
আওয়ামী লীগ সরকারের মেয়াদে পায়রার সমুদ্র বন্দর হয়েছে, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, শেখ হাসিনা সেনানিবাস, লেবুখালী ব্রিজ হওয়ার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া পায়রা সেতুর জরিপ হয়ে গেছে, সে কাজও শুরু হবে বলেও জানান তিনি।
নানক বলেন, ‘শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর বেটি, বঙ্গবন্ধু কন্যা, তিনি বিশ্ব ব্যাংককে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বলেছিলেন, ওয়ার্ড ব্যাংক ইউ আর গেট আউট। সেই পদ্মা সেতু থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেললাইনের জন্য জমি অধিগ্রহণ হচ্ছে।’
বরগুনা পৌরবাসীকে নৌকার ভোট দিয়ে নেত্রী এবং নৌকাকে সম্মানিত করার আহ্বান জানান নানক। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন আমি স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী ছিলাম। আমি আপনাদের বলে যাচ্ছি, আমি এই দক্ষিণ বাংলার মানুষ, আমি বরিশালে বেড়ে উঠেছি। আপনাদের সঙ্গে আমার দেখা হবে এই বরগুনায় মহারাজকে যদি নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেন। মহারাজকে যদি আপনারা নৌকা মার্কা দিয়ে জয়যুক্ত করেন তাহলে এর সকল উন্নয়নের দায় দায়িত্ব শেখ হাসিনা নেবেন।’
নিজের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে শোক-ব্যাথা বুকে নিয়ে রাজনীতি করে যাওয়ার কথা তুলে ধরে নানক বলেন, ‘দুঃখ কষ্ট নিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই বাংলাদেশ যে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলছে সেই উন্নয়নের ধারায় একজন সহযোদ্ধা হিসাবে কাজ করেছি। কোনদিন মুখ গুমরে থাকিনি, নেত্রীর সামনে যখন গিয়েছি তখন কোনদিন মুখ কালো করে যাইনি।’
নৌকার প্রার্থীর সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মহারাজ একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। আমি মুক্তিযোদ্ধা ছিলাম, তাই এই মুক্তিযোদ্ধার সন্তানকে পুরস্কৃত করা আপনাদের পবিত্র দায়িত্ব। আমি বিশ্বাস করি আপনারা সে দায়িত্ব পালন করবেন।’
বিদ্রোহী প্রার্থীর প্রতি ইঙ্গিত করে নানক বলেন, ‘আমরা সংঘাত চাই না। আমরা চেয়েছিলাম বরগুনার সকল সচেতন মানুষ যখন বোঝেন, অন্তত এই মানুষটি বুঝবেন, সেই মানুষটি কে জানেন তার নাম শাহাদাত। আমরা চেষ্টা করলাম তাকে বোঝানোর জন্য। তারপরও শাহাদাত সাহেব সময় নিয়েছেন। আমরা আশা করি, আপনি সময়ের মধ্যে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সাথে কথা বলে আপনি নির্বাচন থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেবেন এবং সরে দাঁড়াবেন।’ এসময় তিনি নিজেই ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু স্লোগান ধরে নৌকার স্লোগান ধরেন এবং সবাইকে ভোটের দিন সাধারণ মানুষকে নিয়ে ভোট দিতে আসার আহ্বান জানান।
বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর কবিরের সভাপতিত্বে আয়োজিত পথসভায় বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোতালেব মৃধা, মো. আব্বাস হোসেন মন্টু, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বরগুনা পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. শাহজাহানসহ অন্যরা।
উল্লেখ্য, দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বরগুনা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন। আর নৌকার মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল আহসান মহারাজ।
সারাবাংলা/এনআর/এমও