Friday 06 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

হাতকাটা রিকশাচালকই ছিনতাইকারী, হামিদুল হত্যায় গ্রেফতার ৫

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
২৬ জানুয়ারি ২০২১ ১৫:০৬

ঢাকা: শাকিল ওরফে ডুম্বাস, তার ডান হাত কনুই থেকে কাটা। এজন্য তাকে ‘হাতকাটা শাকিল’ বলেও ডাকে অনেকে। রিকশাচালক হলেও তার মূল পেশা ছিনতাই। ছিনতাইকারী চক্রের সদস্যও তিনি।

গত ২৩ জানুয়ারি রাজধানীতে খুন হওয়া সেগুনবাগিচার ডিস ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম হাতকাটা শাকিলের রিকশাতেই উঠেছিলেন। হাইকোর্ট মাজার থেকে সেগুনবাগিচায় যাওয়ার পথে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের সামনের ফুটপাতে ওই রিকশার গতিরোধ করে ছিনতাইকারী সোহেল ওরফে এরাবিয়ান সোহেল, জাহিদ হোসেন ও শুক্কুর আলী। এসময় হামিদুলের কাছ থেকে একটি স্যামসাং ২১ এস মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। তখন হামিদুল চিৎকার করলে এরাবিয়ান সোহেল চাকু দিয়ে পায়ে আঘাত করে। এতে তার রগ কেটে রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়।

মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারি) দুপুরে মিডিয়া সেন্টারে হামিদুল হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচ ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। তিনি বলেন, ‘গ্রেফতারকৃতরা হামিদুলকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। এদের মধ্যে শাকিল একজন রিকশাচালক। এরাবিয়ান সোহেল হচ্ছে মূলহোতা। তার সাথে জাহিদ ও শুক্কুর আলী সহযোগী। আর সোহেল মিয়া ছিনতাইয়ের মালামাল ক্রয়কারী। হামিদুলের ছিনতাই হওয়া মোবাইলও সোহেল মিয়াই কিনেছিলেন। তাদের সবার বাসা কামরাঙ্গীরচর এলাকায়।’

ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ‘ব্যাটারিচালিত রিকশা চালানো শাকিলের ছদ্মবেশ। সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়রিকশা চালাত এবং টার্গেট ব্যক্তিকে নির্জন জায়গায় নিয়ে ছিনতাই করতো। প্রতিবন্ধী হওয়ায় মানুষের সহানুভূতিও কাজ করতো তার প্রতি। পুলিশও সহজে তাকে কিছু বলতো না। যার ফলে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিয়ে সব সড়কে চলাচল করতে পারতো।’

গ্রেফতার হওয়া প্রত্যেকের বিরুদ্ধে ১০টি করে ছিনতাই মামলা রয়েছে উল্লেখ করে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘প্রত্যেক মামলাতেই তারা জামিনে রয়েছেন। এরাবিয়ান সোহেল গত সাত মাস আগে জেল থেকে বের হয়েছেন আর হাতকাটা শাকিল এক বছর আগে বেরিয়েছিলেন। বের হয়ে পুনরায় তারা ছিনতাইয়ে নামে। হামিদুল হত্যার সাথে এরা সবাই জড়িত। ঘটনায় ব্যবহৃত একটি চাকু ও রিকশা জব্দ করা হয়েছে। আর হামিদুলের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে।’

 

হাইকোর্টের সামনে খুনের রহস্য উন্মোচনের দাবি পুলিশের

 

এক প্রশ্নের জবাবে এই গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বিভিন্ন কারণে ঢাকা শহরে ছিনতাই কিছুটা বেড়েছে। এর কারণে রাজধানীতে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে। ডিবি পুলিশের ৩৩টি টিম কাজ করছে। ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটলে অনেকে পুলিশের কাছে আসতে চান। তিনি ভুক্তভোগীদের অনুরোধ করেন যাতে থানায় গিয়ে মামলা করা হয়। কারণ ডিবি পুলিশ মামলা নিয়ে কাজ করে। গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যেকটি মামলা ধরে ধরে কাজ করা হচ্ছে।’ ছিনতাই কিছুটা বাড়ার ফলে ডিবি পুলিশ গত ১৬ জানুয়ারি থেকে রাজধানীতে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে হাফিজ আক্তার বলেন, ‘রাজধানীতে কতগুলো ছিনতাই স্পট আর কতগুলো ছিনতাইকারী গ্রুপ আছে তা বলা যাচ্ছে না। তবে ছোট ছোট কিছু গ্রুপ নতুন করে তৈরি হয়েছে তা নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। আবার রাস্তার ধারে যারা নেশা করত তারাও ছিনতাইয়ের সাথে জড়িত হচ্ছে। সেদিকেও নজর দেওয়া হচ্ছে।’

হামিদুল হত্যার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্তের বিষয়ে অভিযান চালানো কর্মকর্তা ডিবির (রমনা জোন) অতিরিক্ত উপ কমিশনার মিশু বিশ্বাস বলেন, ‘ঘটনার দিন একজন হিজরাসহ যে দুই জনকে আটক করা হয়েছিল, মূলত তাদের তথ্য থেকেই ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা হয়। তারা বলেছিল একজন হাতকাটা রিকশা চালক ওই ব্যক্তিকে রিকশায় তুলেছিলেন।’

অভিযান চালানো আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘হিজরার দেওয়া তথ্যমতে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় এলাকার বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। এরপর ২৪ জানুয়ারি রাতে ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয় এলাকা থেকে হাতকাটা শাকিলকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেওয়া তথ্য মতে, বাকিদের কামরাঙ্গীর চর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।’

সারাবাংলা/ইউজে/এমও

ছিনতাই টপ নিউজ রিকশাচালক হামিদুল হত্যা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর