‘ভ্যাকসিন শুরু, আমাদের জন্য একটা ঐতিহাসিক দিন’
২৭ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:০২
ঢাকা: করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন কার্যক্রমের শুরু হওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আজকে বাংলাদেশের জন্য এটা একটা ঐতিহাসিক দিন হল। বিশ্বের অনেক দেশ এখনো শুরু করতে পারেনি। সেখানে আমাদের মতো সীমিত অর্থনৈতিক শক্তি নিয়েই আমরা শুরু করলাম। আমরা মানুষের কল্যাণে কাজ করি, সেটাই আজকে প্রমাণ হল।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের একজন নার্সসহ ২৫ জনকে টিকা দেওয়ার মধ্য দিয়ে সারাদেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রথম পাঁচ জনের ওপর টিকার প্রয়োগ কার্যক্রম সরাসরি প্রত্যক্ষ করেন।
গণভবন প্রান্তে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। আর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল প্রান্তে বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
এদিকে গতকাল মঙ্গলবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রম শুরুর প্রস্তুতি পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। আজ প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের টিকার জন্য নিবন্ধন কার্যক্রমও চালু হয়ে গেল।
বৃহস্পতিবার ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। সারাদেশে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনাভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে দেওয়া হবে। সরকার সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে যে ৩ কোটি ডোজ টিকা কিনছে, তার প্রথম চালানে ৫০ লাখ ডোজ গত সোমবার দেশে পৌঁছেছে। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর প্রথম চালানের টিকা মানবদেহে প্রয়োগের অনুমতিও দিয়েছে। এছাড়া সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত আরও ২০ লাখ ডোজ টিকা ভারত সরকারের উপহার হিসেবে পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে যেহেতু এ টিকার কোনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়নি। তাই প্রথম দফায় ঢাকার পাঁচটি হাসপাতালে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর প্রয়োগ করে দেখা হবে। সব ঠিক থাকলে ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হবে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন টিকাদান কর্মসূচি।
প্রধানমন্ত্রী করোনা ভ্যাকসিন হিরোদের ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপণী বক্তব্যে বলেন, যারা আজকে এই কোভিড-১৯-এর ভ্যাকসিন নিলেন তাদেরও সুস্বাস্থ্য কামরা করি। যারা দিলেন তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই।
‘এরপরে আমরা সারাদেশেই দেব ভ্যাকসিনটা। যাতে করে আমাদের দেশের মানুষ তারা স্বাস্থ্যসুরক্ষা পেতে পারে, সেই ব্যবস্থা আমরা করবো। আর ভারত সরকারেরও আমরা ধন্যবাদ জানাই, তারা প্রথম ডোজ দিয়েছেন উপহার স্বরূপ। আর আমরা যে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডোজ কিনেছি। তার মধ্যে ৫০ লাখ এসে গেছে। যখনি আমরা দিতে শুরু করবো, এরপর থেকে আসতে থাকবে। এ ব্যাপারে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা সকলের সহযোগিতা চাই এবং সবকিছু যেন সুষ্ঠুভাবে হয় এদিকে সবাই নজর রাখবেন।
আজকে বাংলাদেশের জন্য, আমি বলবো এটা একটা ঐতিহাসিক দিন হল। বিশ্বের অনেক দেশও এখনো শুরু করতে পারেনি। সেখানে আমাদের মতো একটি দেশ, ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। সীমিত অর্থনৈতিক শক্তি নিয়েই আমরা কিন্তু মানুষের কল্যাণে যে আমরা কাজ করি সেটাই আজকে প্রমাণ হল।
প্রধানমন্ত্রী সবার ভালো ও সুস্থতা কামনা করে বলেন, ‘ইনশাল্লাহ, এই অবস্থার থেকে আমরা উত্তরণ ঘটাবো। বাংলাদেশ; আমাদের জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে উঠবে।’
সারাবাংলা/এনআর/এমআই