বিএসএমএমইউ’য়ে উপাচার্যই নেবেন প্রথম ভ্যাকসিন
২৮ জানুয়ারি ২০২১ ০২:১৬
ঢাকা: সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া নিজেই তার প্রতিষ্ঠানে আসা প্রথম ভ্যাকসিনটি নেবেন বলে জানিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে এখানে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরুর কথা রয়েছে।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া সারাবাংলাকে বলেন, সকাল ৯টায় ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রম শুরু করা হবে। সবকিছু ঠিক থাকলে আমি প্রথমেই ভ্যাকসিন নেব। পরে তালিকা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
বিএসএমএমইউ উপাচার্য বলেন, আমাদের দেশে ভ্যাকসিন প্রয়োগ তো নতুন কিছু না। এটা নিয়ে কেন বিভ্রান্তিমূলক কথা বলা হচ্ছে, তা আমার বোধগম্য না। এসব বিষয় নিয়ে তাই ভাবিও না। এই তো কিছুদিন আগেও ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন নিয়েছি। মাসখানেক আগেই নিয়েছি নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিন। এগুলো তো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আর তাই ভ্যাকসিন অবশ্যই নেব।
সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করার কথা জানিয়ে ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে আমি যদি ভ্যাকসিন না নেই, তবে আমার প্রতিষ্ঠানের বাকিরা তো উৎসাহ পাবে না। আমাদের প্রতিষ্ঠানের সবাই যেন ভ্যাকসিন প্রয়োগ নিয়ে আশ্বস্ত হয়, সে কারণেই আমি ভ্যাকসিন নেব। এর মানে কিন্তু এই না যে আমি পদাধিকারবলে কোনো সুবিধা নিচ্ছি। আমার মূল লক্ষ্যই হলো ভ্যাকসিন নিতে অন্যদের উদ্বুদ্ধ করা। একইসঙ্গে একজন চিকিৎসক হিসেবে ভ্যাকসিন নিলে দেশের মানুষের আস্থার জায়গাটিও তৈরি হবে— এটিও আমার ভ্যাকসিন নেওয়ার পেছনে অন্যতম কারণ।
‘সবাই মিলেই এই কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যেতে হবে। আর ভ্যাকসিন প্রয়োগের মাধ্যমে সেই পথে আরেক ধাপ এগিয়ে যাওয়া সম্ভব,’— মন্তব্য ডা. কনক কান্তি বড়ুয়ার।
বিএসএমএমইউ সূত্রে জানা গেছে, সবকিছু ঠিক থাকলে উপাচার্যের পরই এই প্রতিষ্ঠানে করোনার ভ্যাকসিন নেবেন বিএসএমএমইউ হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জুলফিকার আমিন। এরপর তালিকা ধরে বাকিদের ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
এর আগে প্রতিষ্ঠানটিতে ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি শুরুর প্রস্তুতি বিষয়ে পরিচালক ডা. জুলফিকার আহমেদ আমিন বলেন, ২৮ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করা হবে। স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে হাসপাতালে প্রথমে ২০০ জনকে ভ্যাকসিন দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সে অনুযায়ী সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত তারিখে সাধারণ নাগরিকদেরও ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, এই হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি কিভাবে পরিচালিত হবে, সে বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুরাতন শেরাটন হোটেলের উল্টোদিকে আমাদের অব্যবহৃত একটি ভবনের নিচ তলাকে ভ্যাকসিনেশনের জন্য প্রস্তুত করেছি।
ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর গ্রহীতাকে পর্যবেক্ষণে রাখার কথা জানিয়ে বিএসএমএমইউ পরিচালক বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য যখন ভ্যাকসিন প্রয়োগ কর্মসূচি শুরু হবে, তখন এখানে মোট আটটি বুথ রাখা হবে। প্রতিটি বুথে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য দু’জন করে নার্স ও চার জন করে স্বেচ্ছাসেবক থাকবেন। ভ্যাকসিন দেওয়ার পর পোস্ট ওয়েটিং রুমে ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের জন্য জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। সেখানে তারা ৩০ মিনিট পর্যবেক্ষণে থাকবেন। আর এই সময়ে তাদের পর্যবেক্ষণের জন্য থাকবে একটি মেডিকেল টিম এবং স্ট্যান্ডবাই আরও একটি মেডিকেল টিম। এসব টিমে একজন ইন্টারনাল মেডিসিন স্পেশালিস্ট, দুই জন রেসিডেন্স ও একজন করে আইসিইউ স্পেশালিস্ট থাকবেন।
আরও পড়ুন-
ভ্যাকসিন প্রয়োগে প্রস্তুত ৫ হাসপাতাল
১২০ ডোজ ভ্যাকসিন পেয়েছে ঢাকা মেডিকেল
সারাবাংলা/এসবি/টিআর
ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া প্রথম ভ্যাকসিন বিএসএমএমইউ বিএসএমএমইউ উপাচার্য