Saturday 26 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১৫ বছরেও তথ্য ঘাটতি পূরণ হয়নি কুবির ওয়েবসাইটে

সাজ্জাদ বাসার, কুবি প্রতিনিধি
২৯ জানুয়ারি ২০২১ ২২:৩৬ | আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২১ ২২:৩৯

কুমিল্লা: দীর্ঘ ১৫ বছরেও হয়নি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ওয়েবসাইট। রয়েছে নানা তথ্যের স্বল্পতা। ফলে শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্টরা পড়ছেন নানা বিড়ম্বনায়। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বাস দিচ্ছে শীঘ্রই চালু করা হবে ‘আধুনিক ওয়েবসাইট’। আর এর জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ১০ লাখ টাকা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট নিয়ে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের। এর আগেও শিক্ষার্থীদের মাঝে ওয়েবসাইট নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হলেও উন্নত করা হয়নি ওয়েবসাইটটি। এ বিষয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাবুদ্দিন আহমেদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কিন্তু আমাদের প্রশাসনের যেন এদিকে নজরই নেই। প্রত্যেকটা শিক্ষার্থী ভর্তির আগে ওয়েবসাইট থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে তথ্য নিয়ে থাকে। ভর্তি পরীক্ষার আবেদন করতে গেলে বা ফলাফল জানতে গেলে কুবির ওয়েবসাইটি অচল হয়ে পড়ে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এখনি এই সমস্যা নিরসনে কাজ করা উচিত।’

বিজ্ঞাপন

এদিকে, ওয়েবসাইট ঘেঁটে শিক্ষার্থীদের নানা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। ওয়েবসাইটটিতে বিজ্ঞান অনুষদ ও ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের কিছু বিভাগে কোন বিষয়গুলো পড়ানো হবে দেওয়া থাকলেও বেশিরভাগ বিভাগে শুধু লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কেই লেখা রয়েছে, অনেক বিভাগে স্নাতকোত্তরের কোর্স চলমান থাকলেও নেই সে বিষয়ে কোনো তথ্য, বিভাগের নোটিশ বোর্ডগুলোতে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের নোটিশ না থাকলেও উইকেন্ড/ইভেনিং এম.এ/এমবিএ’র নোটিশ রয়েছে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি সংক্রান্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে প্রশাসনকে অবহিত করা হলেও নীরব ভূমিকা পালন করেছে। বিগত ১৫ বছরে মাত্র ৪ জন বিদেশি শিক্ষার্থী পেয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। হালনাগাদ করা হয়নি স্টুডেন্ট কাউন্সিলদের তথ্য যার কারণে বাধার মুখোমুখি হচ্ছে বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়া।

সিলেবাসের দিকে নজর দিলে দেখা যায়, শুধুমাত্র গণিত ও লোকপ্রশাসন বিভাগে পূর্ণাঙ্গ সিলেবাস দেওয়া রয়েছে। বাকি যাদের দেওয়া রয়েছে তাদেরগুলো আগের ব্যাচের জন্য কার্যকরী হলেও বর্তমান যেসব ব্যাচ চলমান সেসব ব্যাচের জন্য নেই কোনো সিলেবাস। এ ছাড়া, আইসিটি ডিপার্টমেন্ট সিলেবাসের জায়গায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে তথ্য নিয়ে বিবরণপত্র (প্রসপেকক্টাস ইন কুমিল্লা ইউনিভার্সিটি) দেওয়া রয়েছে। প্রতিটা বিভাগের পোর্টফোলিও তৈরি করা থাকলেও বিজ্ঞান অনুষদের গণিত বিভাগ, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের লোকপ্রশাসন বিভাগ, ব্যবসা শিক্ষা অনুষদের ব্যবস্থাপনা বিভাগ ও প্রকৌশল অনুষদের দুই বিভাগ ছাড়া আর কোন বিভাগের পোর্টফোলিওতে বিভাগের ছবিও দেওয়া নেই। সারাবছর বিভিন্ন দিবস, অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও আপডেট করা হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ের পোর্টফোলিও।

এ ছাড়াও, ওয়েবসাইটটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের পরিচয় বিস্তারিত দেওয়া হয়নি। শুধুমাত্র নাম, ছবি, ই-মেইল, ফোন নম্বরে পরিচয় সীমাবদ্ধ। একজন শিক্ষক কোন বিষয়ে গবেষণা করছে বা করেছেন সেসব বিষয় নিয়ে কিছুই লেখা নেই ওয়েবসাইটে। ফলে, শিক্ষার্থীরা কোনো গবেষণার কাজে কোনো শিক্ষকের কাছ থেকে সঠিক দিক-নির্দেশনা পেতে পারেন তা নিয়ে সংশয়ে থাকেন।

ওয়েবসাইটে তথ্যের অপর্যাপ্ততা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আইটি সেলের সহকারী ডাটাবেজ প্রোগ্রামার মো. মাসুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা যুগোপযোগী একটা ওয়েবসাইট বানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছি, অলরেডি কয়েকটা সফটওয়্যার ফার্মকে চিঠি পাঠানো হয়েছে,তাদের সঙ্গে বাজেট নিয়ে আলোচনা চলছে। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা নতুন ওয়েবসাইটটি সবার কাছে পৌঁছে দিতে পারব বলে আশা করছি।’

এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা নতুন ওয়েব সাইটের জন্য রশিদুল ইসলাম শেখ স্যারকে (লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক) প্রধান করে একটা কমিটি গঠন করেছি। এই কমিটি সফটওয়্যার ফার্মগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি ডায়নামিক ওয়েবসাইট শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।’

লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রশিদুল ইসলাম শেখ বলেন, ‘এক আধুনিক কন্টেন্ট রেডি করে দেশের স্বনামধন্য ১০টি কোম্পানিকে আমরা চিঠি দিয়েছি। কোম্পানিগুলো বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলের সামনে এটি প্রদর্শন করবে, সেখান থেকে তিনটি বাছাই করব। তারপর সেই তিনটির মাঝে সবচেয়ে ভালো যেটি হবে সেটিই আমরা সিলেক্ট করে তাদের কাজ দেব। আর ফেব্রুয়ারির ১৫ তারিখ পর্যন্ত এর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে।’

সারাবাংলা/একে

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর