Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কাস্টমস গুদামে পড়ে থাকা ৭১৫ কেজি সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা 

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৩১ জানুয়ারি ২০২১ ০৮:২৪

ঢাকা: ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ৭১৫ কেজি সোনা জমে ছিল ঢাকা কাস্টমস হাউসের বিমানবন্দর গোডাউনে। আর জমে থাকা এই সোনা ঢাকা কাস্টমস হাউসের জন্য যেন গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অবশেষে জানুয়ারি ২১ ও ২৭ তারিখ তথা দুই দফায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা হয়েছে ৭১৫ কেজি সোনা (১৭.৮৭৫ মন)। যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৬৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

ঢাকা কাস্টমস হাউস সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, ২১ জানুয়ারি হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে কড়া নিরাপত্তায় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা হয় ৪১৭ কেজি সোনা আর ২৭ তারিখ বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা হয় ২৯৮ কেজি সোনা। জমা হওয়া সোনার মধ্যে সোনার বার এবং স্বর্ণালঙ্কার রয়েছে।

সোনাগুলো অস্থায়ীভাবে রাখা হয়েছে ভল্টে। কেননা জমাকৃত ৭১৫ কেজি সোনার মধ্যে মামলা চলমান কিছু সোনাও রয়েছে। আর মামলা শেষ হলে সে সব সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে স্থায়ীভাবে জমা হবে। তবে ৭১৫ কেজি সোনার মধ্যে কিছু সোনা রয়েছে মামলা ছাড়া আর কিছু সোনা রয়েছে মামলা চলমান। তবে কতটি মামলা রয়েছে সে বিষয়ে জানা যায়নি।

কারণ বাংলাদেশ ব্যাংকে যে ৭১৫ কেজি সোনা জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে ঢাকা কাস্টমস হাউস ছাড়াও ঢাকা কাস্টমস হাউসের আওতায় বিভিন্ন সংস্থা কর্তৃক জব্দ সোনা রয়েছে। যেমন বিমানবন্দর আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), শুল্ক গোয়েন্দা, এনএসআই, সিভিল অ্যাভিয়েশনের সিকিউরিটি (এভসেক)।

অপরদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দেওয়া সোনার বিষয়ে ঢাকা কাস্টমস হাউস দুটি কমিটি গঠন করেছে। আর এই কমিটি সুনিপুণভাবে সোনাগুলো বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দিয়েছে। তবে ঢাকা কাস্টমস হাউস মনে করছে, যে সোনাগুলোর মামলা চলমান রয়েছে সেগুলোর মামলায় জয়ী হয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে স্থায়ীভাবে সোনাগুলো জমা হয়ে যাবে।

বিজ্ঞাপন

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরিত্যক্ত বা মালিকবিহীন অবস্থায় জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে জমা হয়। পরে সেসব স্বর্ণ নিলামে বিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু বিভিন্ন সময় কাস্টমস এলাকায় ব্যক্তি ও বিদেশে যাতায়াতকারী যাত্রীর কাছ থেকে স্বর্ণ বা স্বর্ণালঙ্কার জব্দের ঘটনায় করা মামলা তদন্ত ও বিচারে দীর্ঘসূত্রিতা হয়। এতে ফৌজদারি মামলার বিচারকালে বিভিন্ন সময় বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে স্বর্ণের নমুনা সংগ্রহ করে আদালতে দাখিল, আবার আদালতের কার্যক্রম শেষে এ নমুনা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিতে হয়। যে কারণে ফৌজদারি মামলার কারণে জব্দ করা স্বর্ণালঙ্কার ২০১৮ সাল থেকে গ্রহণ বন্ধ রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক অনুসন্ধানে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিরাপদ ভল্টে গচ্ছিত সোনা নিয়ে গরমিলের অভিযোগ ওঠে। এরপর থেকে জব্দ সোনা জমা নিতে নতুন শর্তারোপ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু নতুন নিয়মে সোনা জমা দিতে রাজি হচ্ছিল না সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর এ রকম একটি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। তখন জমা করা সোনা রসিদের সঙ্গে মিলিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে রাখা সোনায় বেশকিছু গড়মিল খুঁজে পায় শুল্ক গোয়েন্দা দল। এরপর থেকে সোনা জমা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। কিন্তু অবশেষে সব সমস্যা সমাধান করে ৭১৫ কেজি সোনা বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে জমা দিলো কাস্টমস।

এ বিষয়ে ঢাকা ঢাকস্টমস হাউসের কমিশনার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বিভিন্ন সংস্থার জমা থাকা সোনাগুলো নিয়ে আমাদের চিন্তা ছিল দীর্ঘদিন। অবশেষে সেই চিন্তা বা শঙ্কার অবসান হয়েছে। এ ছাড়া আরও যেসব মূল্যবান সামগ্রী গোডাউনে রয়েছে সেগুলোও দ্রুত ভোল্টে জমা দেওয়া হবে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসজে/একে

ঢাকা কাস্টমস হাউস বাংলাদেশ ব্যাংক সোনা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর