বরিশালের ভোর হয়ে উঠছে ভয়ংকর!
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:০৮
বরিশাল: রাতের অন্ধকারের পরিবর্তে কুয়াশায় ঢাকা শান্ত ভোর ছিনতাইয়ের মোক্ষম সময় হিসেবে বেছে নিচ্ছে ছিনতাইকারীরা। জানা গেছে, এই সময়ে রাস্তাঘাটে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহল ও জনসমাগম কম থাকায় প্রায়ই ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছে নগরবাসী। শান্ত, সুনিবিড় ভোর হয়ে উঠছে ভয়ংকর।
জানা গেছে, বরিশাল নগরীর জেলখানার মোড় থেকে নথুল্লাবাদ সড়কের কয়েকটি পয়েন্টে নিয়মিত ঘটছে ছিনতাইয়ের ঘটনা। ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারির মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এই সড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে প্রায় ৩০টি। জেনারেল হাসপাতাল, রায় রোড, ল’ কলেজ, প্যারাডাইস হোটেল, ইসকন, ব্রজমোহন কলেজ, প্রফেসর গলি, মধু মিয়ার পুল ও বৈদ্যপাড়া পয়েন্ট রীতিমতো বিপজ্জনক এখন। বেশিরভাগ ঘটনা থানা পর্যন্ত না গড়ানোয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অগোচরেই থেকে যাচ্ছে। ঝামেলা এড়াতে ভুক্তভোগীরা থানায় অভিযোগ দেয় না।
ডিসেম্বরের ২৯ তারিখ নগরীর ব্রজমোহন কলেজের সামনে ছিনতাইয়ের শিকার মাওলানা আব্দুল্লাহ মামুন বলেন, ‘সকালে হেঁটে যাওয়ার সময় প্রফেসর গলির মুখে ছিনতাই চক্রের কবলে পড়ি। আমাকে মারধর করে তিন হাজার টাকা ও হাতঘড়ি নিয়ে যায় তারা।’
মামুন বলেন, ‘পরে এ বিষয়ে কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করে এই রোডে আরও ছিনতাইয়ের ঘটনা শুনেছি। আমি থানায় অভিযোগ দেইনি। নতুন করে ঝামেলা বাড়াতে চাই না।’
নগরীর অমৃত লাল দে সড়কের বাসিন্দা সোবাহান সিকদার জানান, রাতের বদলে ছিনতাইকারীরা এখন ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সময়কে বেছে নেয়। কারণ এই সময়টাতে নগরীর রাস্তাঘাট বেশ সুনশান নীরব থাকে। পুলিশের তৎপরতাও অনেকটা কম থাকে।
ছিনতাইয়ের শিকার কলেজছাত্র আকাশ ইসলাম বলেন, ছিনতাইকারীদের টার্গেট লঞ্চ বা বাসের যাত্রী। এরসঙ্গে রিকশা বা অটোচালকরাও জড়িত থাকতে পারে। পুলিশ যদি ভোরের দিকে আরও সতর্ক হয়, তাহলে হয়তবা নিয়মিত এই ঘটনা এড়ানো যাবে।
৯ জানুয়ারি রায় রোডের মুখে ছিনতাইয়ের শিকার হন আরেক লঞ্চ যাত্রী শাওন ইসলাম। তিনি জানান, ছিনতাইয়ের ঘটনাটি সর্বোচ্চ দুই থেকে আড়াই মিনিটের। দা ঠেকিয়ে টাকা আর মোবাইল নিয়ে মুহূর্তের মধ্যেই চম্পট। খুবই প্রফেশনাল এরা। তা না হলে এমনভাবে ছিনতাই করা অসম্ভব।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোকতার হোসেন বলেন, ছিনতাই প্রতিরোধে পুলিশ সবসময় তৎপর। টহলও বাড়ানো হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের প্রতি একটা বার্তা থাকবে, এ ধরনের ঘটনার শিকার হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। তাহলে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারব।
সারাবাংলা/এএম