খুবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৫:৫০
খুবি: খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) এক শিক্ষককে বরখাস্ত ও দুইজনকে অপসারণের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আজ ষষ্ঠ দিনের মতো প্রতিবাদ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভিন্ন ভিন্ন সময়ে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রায় ১৫ জন শিক্ষার্থী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন। অন্যদিকে, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একই দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ১০ জন শিক্ষক টানা চতুর্থ দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে পরিবেশ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ হারুন চৌধুরী বলেন, যতদিন না পর্যন্ত আবুল ফজল, শুক্লা কাবেরী ও শাকিলা আলমদের চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হবে, ততদিন এ প্রতিবাদ চলতে থাকবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে একটা ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে। যারা অন্যায়ের প্রতিবাদ করবে তাদের চাকরিচ্যুত করা হবে, প্রমোশন আটকিয়ে দেওয়া হবে। যারা আমাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করছে তাদেরও বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি এ অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি নির্লজ্জভাবে চুপচাপ। কারণ তারা বিনাভোটে নির্বাচিত সমিতি।
অপরদিকে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাংলা ডিসিপ্লিনের আশিক বিশ্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ অন্যায় সিদ্বান্ত কোনোভাবে মানি না, মানবো না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ৩০ বছর হলেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়কে এ অঞ্চলের মানুষ যে জায়গায় চেয়েছিল, যে জায়গায় কল্পনা করেছিলো তা আজও পূরণ হয়নি। এখানে যৌক্তিক দাবির কথা বলতে গেলে বহিষ্কৃত হতে হয়।
কর্মসূচিতে বাংলা ডিসিপ্লিনের আরেক শিক্ষার্থী আজবীয়া খান এশা বলেন, শিক্ষককে চাকরিচ্যুতির সিদ্ধান্ত একটি প্রশাসনিক অপকর্ম। এ অপকর্মের কারণে আজ খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামানের দুর্নীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়েছে। আমরা দাবি জানাই খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের অপকর্ম থেকে সরে এসে অতি দ্রুত চাকরিচ্যুত তিন শিক্ষককে স্বপদে পুনর্বহাল করবেন।
প্রতিবাদ কর্মসূচিতে তারা ২ মিনিট নীরবতা পালন করেন। পরবর্তী কর্মসূচি জানতে চাইলে শিক্ষার্থীরা বলেন, আগামীকাল খুলনার শিববাড়িতে নাগরিক ঐক্য পরিষদের সঙ্গে আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবো। যতদিন পর্যন্ত শিক্ষকদেরকে স্বপদে পুনর্বহাল না করা হবে ততদিন আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।
উল্লেখ্য, গত ২৩ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ২১২তম সভায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উস্কানি, অসদাচরণ, প্রশাসনবিরোধী কার্যক্রমসহ নানা অভিযাগে বাংলা ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক মা. আবুল ফজলকে বরখাস্ত এবং ইতিহাস ও সভ্যতা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরী ও বাংলা ডিসিপ্লিনের প্রভাষক শাকিলা আলমকে চাকরি থেকে অপসারণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সারাবাংলা/এএম