সারাদেশে ৫৮০ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:২৫
ঢাকা: সারাদেশে ৫৮০ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৯টি অবৈধ চুলার সংযোগ অপসারণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগ থেকে পাঠানো এক বার্তায় এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই বার্তায় বলা হয়েছে, দেশের সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অপারেশন) মো. আবুল মনসুরকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটিকে গত বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগ অপসারণ করার আদেশ দেওয়া হয়। ওই আদেশের পর এখন পর্যন্ত সারাদেশের ৫৮০ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পাশাপাশি ৩ লাখ ২৫ হাজার ৫৫৯টি অবৈধ চুলার সংযোগও অপসারণ করা হয়।
জ্বালানি বিভাগ জানায়, অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে আরও কঠোর হচ্ছে সরকার। সংশ্লিষ্ট এলাকার জেলা প্রশাসক ও পুলিশ প্রশাসনকে সঙ্গে নিয়ে এ কার্যক্রম আরও জোরেসোরে পরিচালনার চিন্তা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে এ সংক্রান্ত পরবর্তী বৈঠকে জেলা প্রশাসকদের উপস্থিত থাকতে বলা হচ্ছে।
জানা গেছে, যে সকল অবৈধ গ্যাস সংযোগ চিহ্নিত করে অভিযান শুরু করা হয়েছিল তার সবগুলো বিতরণ কোম্পানিগুলো অপসারণ করতে পারেনি। এখনও ১৩৬ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাসলাইন আর ২২ হাজার ৪৯টি চুলা রয়ে গেছে।
জ্বালানি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অবৈধ গ্যাসলাইনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড-টিজিটিডিসিএল এর। তিতাসের রয়েছে ১২৮ কিলোমিটার অবৈধ লাইন। অবৈধ চুলা রয়েছে ২১হাজার ৮৫৪টি। আর গ্যাস বিতরণ কোম্পানি বাখরাবাদের রয়েছে ৮ কিলোমিটার অবৈধ লাইন। অবৈধ চুলার সংখ্যা ১৯৫টি।
জানা যায়, তিতাস গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ৬২০ কিলোমিটার অবৈধ গ্যাসলাইন বিচ্ছিন্ন করেছে। পাশাপাশি ৩ লাখ ৯ হাজার ১৫৯টি অবৈধ গ্যাসের চুলা বিচ্ছিন্ন করেছে। বাখরাবাদ গ্যাস বিতরণ কোম্পানি ৩৭ কিলোমিটার অবৈধ লাইন বিচ্ছিন্ন করেছে। আর ১২ হাজার ২৬৪টি গ্যাসের অবৈধ চুলার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
এসব বিষয় নিয়ে গত ২১ জানুয়ারি বৈঠকে বসে অবৈধ গ্যাসলাইন অপসারণ সংক্রান্ত গঠিত কমিটি। বৈঠকে অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
তারা বলেন, গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে কোন শ্রেণির মানুষ এভাবে সংযোগ নিচ্ছেন, কীভাবে সংযোগ পাচ্ছেন এসব তথ্যও উঠে এসেছে। দেখা গেছে গ্যাস সংশ্লিষ্টরাই এই অবৈধ সংযোগ দিয়ে থাকেন এবং অবৈধ সংযোগ পেতে সহযোগিতা করেন।
কমিটির সভাপতি জ্বালানি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অপারেশন) মো. আবুল মনসুর বলেন, অবৈধ সংযোগ শিল্প কারখানাগুলোতেও আছে কি না তা অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে। আর এ কাজ গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোই করবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে পর্যবেক্ষণ করে অনিয়ম রয়েছে কি না তা কমিটিকে জানাবে।
এ প্রসঙ্গে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান বলেন, অবৈধ সংযোগের কারণে গ্যাস কোম্পানিগুলো লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে পারে না। এসব বিশৃঙ্খলা দূর করে একটা সিস্টেমে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, এ কার্যক্রম আরও গতিশীল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সারাবাংলা/জেআর/এসএসএ