‘পরবর্তীকালের কার্যক্রমে জিয়ার ৭১-র ভূমিকা মিথ্যা হতে পারে না’
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৮:২৩
ঢাকা: ‘স্বাধীনতা পরবর্তীকালের কার্যক্রমে’ জিয়ার ৭১’র ভূমিকা মিথ্যা হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বৃহস্পতিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে গুলশানে দলের চেয়াপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে এ দেশের জনগণের যখন আনন্দে উদ্ভাসিত হয়ে মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের কথা, তখন তারা এক অনির্বাচিত স্বৈরাশাসনের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে জীবনপণ সংগ্রামে রত।’
তিনি বলেন, “জনমনে সৃষ্ট ক্ষোভ ও প্রতিবাদ যাতে সরকারবিরোধী আন্দোলনে পরিণত না হয়, সেই লক্ষ্যে জনগণের দৃষ্টিকে বিভ্রান্ত ও ভিন্ন দিকে পরিচালিত করতে গতকাল সরকারি প্রতিষ্ঠান জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের এক সভায় অযাচিত ও ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের এই সিদ্ধান্ত শুধু রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক নয়, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অপমান ও অবমাননা। এমনকি এই সিদ্ধান্ত তাকে খেতাব প্রদানকারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর বিচার-বুদ্ধির প্রতিও অশ্রদ্ধার প্রকাশ।’
‘যেসব কারণে জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের খেতাব কেড়ে নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার কোনটাই যুক্তি কিম্বা বাস্তবসম্মত নয়’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান বীর উত্তম খেতাব পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধে অসীম বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদানের জন্য। পরবর্তীকালে তার কোনো কার্যক্রমই ১৯৭১ সালে তার অবদানকে মিথ্যা করে দিতে পারে না। ফলে তার অর্জিত খেতাব বাতিল অসঙ্গত এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক।’
ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনার পর দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় তারাই ছিলেন যারা ওই সময়রে সরকারের মন্ত্রী, এমপি ছিলেন। সংসদ বহাল ছিল। স্পিকার লন্ডনে কী মন্তব্য করেছিলেন তা সবার জানা। কিন্তু তারপরেও তিনি দলের নেতা ছিলেন। ১৫ আগস্ট যিনি সেনাবাহিনী প্রধান ছিলেন তাকে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে সংসদ সদস্য করা হয়েছে, দলের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘জিয়া ২৪ সেপ্টেম্বর উপ সেনাপ্রধান থেকে সেনাপ্রধান হয়েছেন স্বাভাবিক নিয়মে। একইদিন প্রেসিডেন্ট মোশতাক আহমেদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হয়েছিলেন জেনারেল (অব:) আতাউল গণী ওসমানী। আওয়ামী লীগ তাকে সমর্থন দিয়ে ১৯৭৮ সালে জিয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী করেছে। সেনাপ্রধান জিয়াউর রহমানের উপরের পদে নিযুক্ত চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানকে আওয়ামী লীগ নৌকা প্রতীকে ১৯৭৯ সালে জামালপুর থেকে সংসদ সদস্য বানিয়েছে।’
‘জিয়া যদি সংবিধান লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্ত হন (যদিও তার তেমন কিছু করার সুযোগই ছিল না) তাহলে তার চেয়ে বড় পদে নিযুক্তদের তৎকালীন মন্ত্রী-এমপিদের ব্যাপারে সরকারি দলের নেতাদের এবং জামুকার মতামত জনগণ জানতে চায়’— বলেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম ও ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম