ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার ডাক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২২:৩৬
ঢাকা: বিএনপি-জামায়াত অপশক্তিকে বাংলাদেশের মাটিতে আর কোনোদিন সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না বলে অঙ্গীকার করেছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। তারা আগামী দিনের যেকোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন।
সোমবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সমাবেশে তারা এ অঙ্গীকার করেন। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপি আয়োজিত ‘একতরফা প্রহসনের নির্বাচনে’র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানিয়ে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণ এই সমাবেশ আয়োজন করে।
সমাবেশে বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বিএনপি অনেক কান্নাকাটি করছে। দেশে নাকি গণতন্ত্র নাই। আপনারা বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করেন, লোক হয় না— এই দোষ তো আওয়ামী লীগের না। আপনাদের ভুল রাজনীতি, অন্ধ রাজনীতি, গণধিকৃত রাজনীতির কারণে লোক হয় না; স্বাধীনতাবিরোধী আপনাদের যে ভূমিকা, সেই ভূমিকার কারণে লোক হয় না।
১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে জাতির পিতার খুনিদের সংসদের বিরোধী দলের নেতার আসনে বসার কথা তুলে ধরেন মতিয়া চৌধুরী। তিনি বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, ওই পার্লামেন্টে আঙুল দেখিয়ে বলেছিলেন— জীবনেও আর এই পার্লামেন্টে এই সরকারি দলে বসতে পারবেন না। কিন্তু আল্লাহর মাইর দুনিয়ার বাইর। আর আর দেশের মানুষের অকুষ্ঠ সমর্থনে জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করেছিলেন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে। সেখানে পক্ষপাক্ষিত্ব হয়েছিল— এটা সারাবিশ্বের কেউ বলে নাই, বলতে পারবে না।
১৯৯৬ সালের নির্বাচনের পর শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রথম মেয়াদসহ টানা মেয়াদে অগ্রযাত্রার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। মতিয়া চৌধুরী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু পারেননি, পারবেনও না। শুধু বাংলাদেশের মানুষ না, সারাবিশ্ব আপনাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। কোথায় আপনাদের সম্মানও নাই, কোথায় আপনাদের কিচ্ছুই নাই। তাই ভর করছেন ষড়যন্ত্রে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে যেমন রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে দেশের শত্রুরা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছিল, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকেও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলায় ব্যর্থ হয়ে বিএনপি ষড়যন্ত্রের পথে হাঁটছে বলেই তাদের বক্তব্যে বোঝা যায়। সম্প্রতি আল-জাজিরার প্রতিবেদনকে এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বর্ণনা করে হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের অসত্য ও বানোয়াট রিপোর্ট এই দেশ ও বিশ্বের মানুষ গ্রহণ করেনি।
আওয়ামী লীগের আরেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, যারা নাটক অথবা সিনেমা যাই বানান না কেন, আল-জাজিরা অথবা যেখানেই যা বলুন না কেন, বাংলার মানুষ আপনাদের মিথ্যাচারকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। এটাই হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রাপ্য।
নাছিম আরও বলেন, যারাই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র করেছে তারা আর কেউ নয়, তারাই একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী। তারাই ১৫ আগস্ট ও ১৫ আগস্ট পরবর্তী ঘাতক ও হত্যাকারী। তারাই এ দেশের মানুষের শত্রু এবং গণহত্যাকারী। এই গণশত্রুরা জাতির পিতাকে হত্যা করেছে। তাদের আর কোনোদিন এই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না। তাদের আমরা প্রতিহত করব, তাদের মোকাবিলা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠা করব— এটাই ১৫ ফেব্রুয়ারিতে আমাদের শপথ।
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামালসহ মহানগর নেতারা।
সারাবাংলা/এনআর/টিআর
১৯৯৬ সালের নির্বাচন আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম আওয়ামী লীগ ড. হাছান মাহমুদ মতিয়া চৌধুরী মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ