পেশীশক্তি নয়, পুলিশের কাজে আইনি সক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে: আইজিপি
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৯:২৭
ঢাকা: প্রতিটি মামলা নিবিড়ভাবে তদারকির মাধ্যমে নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত মনিটরিং অব্যাহত রাখতে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেছেন, পেশীশক্তি নয়, পুলিশের কাজে আইনি সক্ষমতা প্রয়োগ করতে হবে। এজন্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের তদারকি বাড়ানোর তাগিদও দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের শাপলা কনফারেন্স রুমে কোয়ার্টার্লি অপরাধ পর্যালোচনা সভায় সভাপতিত্বকালে এ কথা বলেন তিনি।
সভায় জানানো হয়, অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২০ কোয়ার্টারে সারাদেশে মামলা হয়েছে ৫০ হাজার ৮৫৮টি, যা ২০১৯ সালের একই সময়ে ছিল ৫৩ হাজার ৬১৬টি। অর্থাৎ এই সময়ে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় মামলা কমেছে ২ হাজার ৭৫৮টি। এই সময়ে আগের কোয়ার্টারের (জুলাই-সেপ্টেম্বর ২০২০) তুলনায় খুন মামলা কমেছে ১২৮টি, যা মোট খুনের মামলার ১৩ দশমিক ৩৫ ভাগ। এছাড়া, উদ্ধারজনিত কারণে মামলা কমেছে। গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি সূচকে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে।
আইজিপি বলেন, পুলিশের আচার-আচরণে ইতিবাচক অনেক পরিবর্তন এসেছে। ইতিবাচক পরিবর্তনের এই প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। আমরা চাই থানায় আগত সেবাপ্রার্থীর সঙ্গে খারাপ আচরনের কথা বাস্তব নয়, গল্প ও কল্পকথার অংশ হোক। সেটি বিবেচনায় নিয়েই কাজ করছি আমরা। জনবান্ধব পুলিশ হতে হলে, থানায় কর্মরত পুলিশ সদস্যদের জনগণের সঙ্গে ভালো আচরণ করতেই হবে। তাদেরকে সহযোগিতা করতে হবে, সেবাপ্রার্থীর প্রতি সাপোর্টিভ হতে হবে।
মাদকমুক্ত পুলিশ গড়ার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করে আইজিপি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মাদকের সঙ্গে কোনো ধরনের অবৈধ সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে পুলিশের যেকোনো সদস্যের প্রতি শূন্য সহিঞ্চুতা প্রদর্শন করা হচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া চলমান থাকবে।
ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পুলিশি সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে আমরা বিট পুলিশিং চালু করেছি। এরই মধ্যে দেশব্যাপী বিট পুলিশিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিট পুলিশিং কার্যক্রম আরও গতিশীল করার জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। সফলভাবে বিট পুলিশিং করলে সমাজে অনেক অপরাধ কমে আসবে।
জনগণের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ ও সম্পর্ক বাড়াতে হবে উল্লেখ করে আইজিপি বলেন, অপরাধের সংঘটন কমাতে প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিংয়ের পাশাপাশি প্রিভেন্টিভ পুলিশিংয়ের চর্চা বাড়াতে হবে। বিট পুলিশিং চর্চা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেছে।
ভালো কাজ ও সদাচরণের মাধ্যমে মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে আইজিপি বলেন, তাহলে মানুষ যুগ যুগ ধরে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে।
সভায় পুলিশ স্টাফ কলেজের রেক্টর ড. মো. নাজিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজি (এঅ্যান্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান ব্যারিস্টার মাহবুবুর রহমান, ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম, র্যাব মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজি মো. মহসিন হোসেন, এপিবিএন’র অতিরিক্ত আইজি মো. মোশাররফ হোসেন, টিঅ্যান্ডআইএম’র অতিরিক্ত আইজি ইব্রাহিম ফাতেমী, হাইওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজি মল্লিক ফখরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজি (ফিনান্স) এস এম রুহুল আমিন, অতিরিক্ত আইজি মাযহারুল ইসলাম, এটিইউ’র অতিরিক্ত আইজি মো. কামরুল আহসান, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিভিন্ন মেট্রোপলিটন কমিশনার ও রেঞ্জের ডিআইজিরাও উপস্থিত ছিলেন। একইসঙ্গে বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপাররাও ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে সভায় যুক্ত ছিলেন। সভায় ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) ওয়াই এম বেলালুর রহমান অক্টোবর-ডিসেম্বর ২০২০ কোয়ার্টারের অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর